অলৌলিক, অতিনাটকীয়! ক্রিকেট বিশ্বের সুদীর্ঘ ইতিহাস যা দেখেনি, তা-ই দেখে ফেলল লর্ডস। তা-ও একেবারে বিশ্বকাপের ফাইনালে। পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচে নিঃশ্বাসের উত্থান পতন সাক্ষী হয়ে থাকল সর্বোত্তম থ্রিলারের। ইংল্য়ান্ড বনাম নিউজিল্যান্ড- শ্বাসরূদ্ধকর ফাইনালে লর্ডসের লর্ড হয়েই মাঠ ছাড়ল ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররা। তবে চ্যাম্পিয়ন হয়েও রয়ে গেল অনেক প্রশ্নচিহ্ন। নিষ্ঠুর নিয়মের বলি কিউয়িরা।
ঘটনা হল, আইসিসি-র অদ্ভূত নিয়মে বাউন্ডারি মারার সংখ্যা চ্যাম্পিয়নশিপের বিচার্য হলেও অবিচার হল নিউজিল্যান্ডের প্রতি! এমনটাই বলছে ক্রিকেট বিশ্ব। আর এই নিয়ম ভেঙেই রাজা ইংরেজরা। তবে অনেকেরই চোখ এড়িয়ে গিয়েছে, নির্ধারিত ৫০ ওভারেই খেলার নিষ্পত্তি হয়ে যেত। সুপার ওভারের প্রয়োজনই পড়ত না। তবে সেক্ষেত্রে চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে নাম লেখা থাকত নিউজিল্যান্ডের। খেলা টাই হওয়ার বহু আগেই সম্ভবত কিউয়িরা সেলিব্রেশনে মাততে পারতেন।
আরও পড়ুন বাইশ গজের নতুন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্য়ান্ড
অবিশ্বাস্য ফাইনালে খাতায় কলমে জয়ী ইংল্যান্ড!
কীভাবে? ইংল্যান্ডের ২৪২ রানের রান চেজ করার ঘটনা এটা। শেষ ওভারে ট্রেন্ট বোল্টের হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন কেন। সেই ওভারে ব্যাট করছিলেন ক্রিজে টিকে যাওয়া বেন স্টোকস। তবে কিউয়িদের দুর্ভাগ্য সঙ্গী চতুর্থ বলে। ডিপ মিড উইকেট থেকে ছোঁড়া বল রান নিতে থাকা স্টোকসের গায়ে লেগে বিক্ষিপ্ত হয়ে থার্ড ম্যান বাউন্ডারিতে আছড়ে পড়ে।
সেই বলেই দৌড়ে দু-রান পূর্ণ করে নিয়েছিলেন স্টোকস এবং আদিল রশিদ। অতিরিক্ত আরও চার রান যোগ হয়ে যায় ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে। অনফিল্ড আম্পায়ার মরিস ইরাসমাস এবং বাকি প্যানেলভুক্ত আম্পায়ারদের সঙ্গে আলোচনার পরে কুমার ধর্মসেনা ৬ রানের ইঙ্গিত দেন। অর্থাৎ শেষ ওভারের চতুর্থ বলে মোট ৬ রান যুক্ত হয়। এখানেই আম্পায়াররা আইসিসির নিয়ম ভেঙে ইংল্যান্ডকে অতিরিক্ত ১ রান দিয়েছে, এমনটাই জানা যাচ্ছে।
আইসিসি-র নিয়ম বলছে, ফিল্ডারদের ওভার থ্রো থেকে অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে কার্যের মাধ্যমে বাউন্ডারি সম্পন্ন হলে, তাহলে পেনাল্টি রান হিসেবে যে দু-দলকেই যে কোনও রান দেওয়া যায়। এবং ফিল্ডার থ্রোয়ের সময়ে ব্যাটসম্যানরা যত রান দৌড়ে পূর্ণ করেছেন, সেই সংখ্যক রানই বাউন্ডারির সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।
ঘটনা হল, মার্টিন গুপ্টিল যখন বাউন্ডারি থেকে বল থ্রো করছিলেন, সেই সময় বেন স্টোকস-রশিদ কেবলমাত্র একটা রানই নিতে সক্ষম হয়েছিলেন। দ্বিতীয় রান তখনও সম্পন্ন করেননি। সেই হিসেবে বাউন্ডারির সঙ্গে অতিরিক্ত এক রানই যুক্ত হতে পারত। কিন্তু নিয়ম লঙ্ঘণ করেই এক রান অতিরিক্ত দেওয়া হল। সেটাই হয়তো ম্যাচের পার্থক্য গড়ে গেল।