ঠিক কী পরামর্শ ভেসে এসেছিল ধোনির তরফ থেকে! আফগানিস্তানকে রোমহর্ষক ম্য়াচে বধ করার পরেই শামি-ধোনির যুগলবন্দি নিয়ে উঠে আসছে প্রশ্ন। ধোনির পরামর্শেই নাকি শেষ ওভারে শামির বাজিমাত। কী বলেছিলেন মাহি? শামি ম্যাচের পরেই ফাঁস করেছেন। জানিয়েছেন, "পরিকল্পনা একদম সহজ ছিল। ইয়র্কার দেওয়ার পরিকল্পনা কষছিলাম। মাহি-ভাইয়ের সাজেশন ছিল, কোনও পরীক্ষা নিরীক্ষার পথে যেও না। হ্যাটট্রিক নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এমন সুযোগ বারেবারে আসে না। আমাকে যা করতে বলা হয়েছিল, সেটাই স্রেফ করে গিয়েছিলাম।"
ধোনির পরামর্শ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিলেন শামি। বাকিটা ইতিহাস। বিশ্বকাপে দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে হ্যাটট্রিকের নজির বাংলার পেসারের। সামির পারফরম্যান্স নিয়ে আলাদা করে কিছু লেখার নেই। এতদিন সুযোগ পাচ্ছিলেন না। তবে প্রথম সুযোগেই বাজিমাত করেছেন তিনি। ভুবনেশ্বর কুমারের হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট না লাগলে চলতি বিশ্বকাপে বোলিং রান আপে মহম্মদ সামিকে দেখা যেত কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ ছিল বিস্তর। তবে হাল ছাড়েননি বঙ্গ পেসার। প্রথমবার সুযোগ পেয়েই দেখিয়ে দিয়েছেন, ইংল্যান্ডের পরিস্থিতিতে তিনি কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন।
আরও পড়ুন
সামি নয়, রূদ্ধশ্বাস শেষ ওভারে আসল নায়ক ধোনি! ম্যাচের পরেই ফাঁস রহস্য
অবিচারের শিকার সামি! বিশ্বকাপে প্রথম হ্যাটট্রিকের পরেই ফেটে পড়ল সমর্থকরা
ভারত প্রথমে ব্যাট করে ২২৪ রানের বেশি করতে পারেনি। আফগানিস্তান শেষ পর্যন্ত রান তাড়া করে গিয়েছে। শেষ ওভারে জয়ের জন্য আফগানিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। আফগানদের হাতে তখনও ৩ উইকেট। সবথেকে বড় কথা, মহম্মদ নবি ক্রিজে তখনও রয়েছেন। হাফসেঞ্চুরির দোড়গোড়ায় দাঁড়িয়ে আফগান তারকা। মারমুখী নবি যে ভারতের হাত থেকে ম্যাচ বের করে নেবেন না, তা নিয়ে নিশ্চিত ছিল না অতিবড় ভারতীয় সমর্থকও।
নবির ব্যাটিংয়ের প্রসঙ্গে শামির বক্তব্য, "একটা সময়ে নবির দ্রুত গতিতে রান তোলায় বিরক্ত হচ্ছিলাম প্রত্যেকেই। তবে সেটা শরীরী ভাষায় প্রকাশ করেনি কেউই। এতে ব্যাটসম্যানরা অ্যাডভান্টেজ পেয়ে যেতে পারে। কোনওভাবেই নিজেদের দুর্বলতা মাঠে প্রকাশ করা উচিত নয়। সবসময়ে প্রত্যেকেই আগ্রাসন দেখানোর চেষ্টা করেছি। নবি-ই একমাত্র ব্যাটসম্যান ছিল যে ওদের জিতিয়ে দিতে পারত। আমরা জানতাম, একবার নবি আউট হয়ে গেলেই ম্যাচ আমাদের।"
এরপরেই সামির ঝলক। ভুল হল, সামি-ধোনির ঝলক! যুগলবন্দি যাকে বলে আর কী! প্রথম বলেই সামির বলে বাউন্ডারি হাকিয়েছিলেন নবি। ব্যক্তিগত ৪৮ থেকে ৫২ রানে পৌঁছে যান তিনি। দ্বিতীয় বলে রান হয়নি। তৃতীয় বলে সামিকে বাউন্ডারির বাইরে ফেলতে গিয়ে হার্দিক পাণ্ডিয়ার হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন নবি। এরপরেই আসরে ধোনি। মহাতারকাকে দেখা যায় সামির সঙ্গে একান্ত আলোচনা সারতে।
এরপরেই সামিকে দেখা যায় অন্যমূর্তিতে। শেষ ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে পরপর ইয়র্কারে ফিরিয়ে দেন আফতাব আলম এবং মুজিব উর রহমানকে। শামি সেই রণকৌশল ফাঁস করে দিয়ে বলছেন, "শেষ ওভারে ভাবনা-চিন্তার কোনও অবকাশ ছিল না। কোনও অপশন নয়, নিজের স্কিলেই ভরসা ছিল আমার। যদি বেশি অদল বদল আনার চেষ্টা করতাম। তাহলে রান উঠে যাওয়ার সম্ভবনা ছিল। ব্যাটসম্যানদের মন বোঝার থেকে নিজের স্ট্র্যাটেজি ঠিকঠাক প্রয়োগ করার দিকে ঝুঁকেছিলাম।"