বৃষ্টিকাপ, বর্ষাকাপ! সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশ্বকাপ নিয়ে ট্রোলিং, তরজা, ক্ষোভপ্রকাশ অব্যাহত। কবে না-ই বা কেন! ভারত বনাম নিউজিল্যান্ড ম্যাচ নিয়ে চলতি বিশ্বকাপে মোট চারটে ম্যাচই বাতিল হল বৃষ্টির কারণে। আইসিসি-কে তুলোধোনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, আয়োজক ইসিবি-কেও ট্রোল করা চলছে। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাচ্ছে, এর আগে একই সংস্করণে ম্যাচ বাতিলের সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ দু-বার। চলতি টুর্নামেন্ট তো মাঝপথেই গড়ায়নি। তার আগেই বৃষ্টিতে চারটে ম্যাচ বাতিল হয়ে গেল।
আইসিসি-র পক্ষ থেকে হালকা ভাবে বলার চেষ্টা করা হচ্ছে, জুন ইংল্যান্ডের তৃতীয় শুষ্কতম মাস। সেই ভেবেই বিশ্বকাপের জন্য জুনকেই বেছে নেওয়া হয়েছিল। তবে অনেকের যুক্তি, ইংল্যান্ডের মেজাজি আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে বৃষ্টির পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে রাখা উচিত ছিল আয়োজকদের। বিশ্বকাপের একাধিক স্পনসর সংস্থাও পরপর ম্যাচ বাতিলে ক্ষুব্ধ।
ধোনি-ভক্ত হলেই ফ্রি-তে মাছ-ভাত, বিশ্বকাপে শিরোনামে বাংলার এই হোটেল
ICC World Cup 2019, India Vs New Zealand highlights: হতাশ নটিংহ্যাম, বৃষ্টিতে ধুয়ে গেল ম্যাচ
পাশাপাশি, প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, মাঠ পুরোপুরি ঢাকা হচ্ছে না কেন, তা নিয়েও। ঘটনা হল, বৃষ্টি অধিকাংশ সময় থেমে থাকলেও, ভিজে আউটফিল্ডের কারণে ম্যাচ বাতিল করতে হচ্ছে। ইংল্যান্ডের মতো প্রথম বিশ্বের দেশে ক্রিকেটের পর্যাপ্ত আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম নেই, এটা অনেকেই মানতে পারছেন না। জাতীয় এক সংবাদমাধ্যমে বিশ্বকাপে এক স্পনসর সংস্থার বক্তব্য, "ইংল্যান্ডে পৌঁছে সবাই প্রথম কোন কাজটি করেন? রেইনকোট কিনে ফেলা। এটা খুব কমন বিষয়। তাহলে মাঠের জন্য কেন নয়? ট্রেন্ট ব্রিজে খুব ভালো হোভারক্রাফট আছে। জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থাও ভাল। তাহলে গোটা মাঠের জন্য কভার নেই কেন?"
ট্রেন্টব্রিজে বৃহস্পতিবার ভারি বৃষ্টি হয়নি। মাঝেমাঝে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হলেও অধিকাংশ সময়েই বন্ধ ছিল তা। তবে ভিজে আউটফিল্ডের কারণেই ম্যাচ শেষমেষ বাতিল করতে হয়। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় নিজে ইডেনের ভোল বদলে দিয়েছেন। বৃষ্টি হলেও বর্তমানে ইডেনে দ্রুত ম্যাচ চালু করতে ইডেনের জুরি নেই। সেই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন, "ইডেন গার্ডেন্সে যে ম্যাচ ঢাকার কভার রয়েছে, তা আমরা ইংল্যান্ড থেকেই কিনেছি। ভাবতেও অবাক লাগছে, ইসিবি-র এসবের কোনও ব্যবস্থা নেই।"
কেন নেই ইসিবি-র কাছে প্রয়োজনীয় ক্রিকেট সরঞ্জাম? অনেকেই বলছেন পুরো মাঠ ঢাকার বিষয়টি ভীষণই ব্যয়বহুল বলেই সম্ভবত ইসিবি-র ভাবনাতেই নেই কভার। বলা হচ্ছে, ২০১৬ সালে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজক ছিল ভারত। সেই সময় বর্ষাকাল না হলেও প্রতিটি ভেন্যুর জন্য আলাদা আলাদা কভার কেনা হয়েছিল বিসিসিআইয়ের তরফ থেকে। যার প্রতিটির মূল্য ১ কোটি টাকা।
সেই সঙ্গে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, বিশ্বকাপ আয়োজনের বরাদ্দ নিয়েও। জানা গিয়েছে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও চলতি বিশ্বকাপ- জোড়া টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে নির্ধারিত বাজেটের প্রায় তিনগুন অর্থ আইসিসি-র তরফে পেয়েছে ইসিবি ও ওয়েলশ ক্রিকেট বোর্ড। কারণ হিসেবে, ইসিবি-র পক্ষে বলা হয়েছিল, বিশ্বকাপ পরিচালনা করার জন্য লন্ডনের মধ্যেই এক অফিস ভাড়া করার প্রয়োজন ছিল। লন্ডনে অফিস এমনিতেই ব্যয়বহুল। তাই বাক্যব্যয় না করে ইসিবি-র দাবি মতোই অর্থ আইসিসি মঞ্জুর করেছিল। তা সত্ত্বেও, কভার নেই কেন, প্রশ্ন উঠছেই।