বিশ্বক্রিকেটের অন্যতম সেরা মহাতারকা তিনি। অস্ট্রেলিয়া তো বটেই ক্রিকেট বিশ্বের সম্ভ্রম জাগানো ব্যক্তিত্ব তিনি। সেই গ্রেগ চ্যাপেল-ই এখন আর্থিক দুরবস্থা জেরবার। কার্যত অসহায় অবস্থায় তিনি।
সাধারণভাবে জীবনযাপন করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে চ্যাপেলকে। কিংবদন্তির দুরবস্থায় এবার পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁর বন্ধুবান্ধবরা। অনলাইনে ত্রাণ তহবিল ক্যাম্পেনিং চালু করেছে তাঁর বন্ধুরা।
চ্যাপেল খুল্লামখুল্লা নিজের এই দৈন্য দশা জানিয়েছেন অস্ট্রেলীয় মিডিয়ায়। নিউজ কর্প-এ গ্রেগ চ্যাপেল জানিয়েছেন, "একদমই যে শোচনীয় অবস্থায়, সেরকম বলতে চাইছি না। কঠিন পরিস্থিতি হয়ত নয়, তবে মোটেই জাঁকজমকে দিন কাটাচ্ছি না।"
বর্তমান ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের দৌলতে ক্রিকেটাররা বেশ বিত্তবান। তবে চ্যাপেল জানাচ্ছেন, তিনি বা তাঁর সমসাময়িক ক্রিকেটাররা মোটেও এরকম সুবিধা পাননি। জানিয়েছেন, তাঁর প্রজন্মের একাধিক ক্রিকেটার জীবনযাপন করতে সমস্যায় পড়েছেন। "অনেকেই মনে করেন, আমরা ক্রিকেট খেলেছি হয়ত বৈভবের জীবনযাপন করছি। তবে এখনকার ক্রিকেটারদের মত সুবিধা পাইনি আমরা। মোটেই কাঁদুনি গাইছি না।" বলেছেন গ্রেগ।
ক্রিকেট মাঠে আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন। ভাই ইয়ান চ্যাপেলের সঙ্গে খেলেছেন ক্রিকেট। তবে এখন আর্থিক দুরবস্থায় কীভাবে বন্ধুদের শরণাপন্ন হতে হল তাঁকে, সেটাও জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, "আমরা অবসরকালীন সময়ে যাতে কোনও অসুবিধায় না পড়ি, সেটা বিবেচনা করেই এগিয়ে এসেছেন আমার বন্ধুরা। তবে আমার সময়ের অনেক ক্রিকেটার রয়েছেন যাঁদের অবস্থা আমার থেকেও খারাপ। সেই যুগের ক্রিকেটারদের জন্য এই খেলা যে যথেষ্ট স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যবস্থা করতে পারেনি, এটা স্পষ্ট। বিশেষ করে বর্তমান প্রজন্মের সঙ্গে তুলনায়।"
গ্রেগ চ্যাপেল ফাউন্ডেশন চালানোর ভাবনা ভারতীয় বংশোদ্ভূতের দর্শক মেহতা। এই ফাউন্ডেশনে যে কেউ নাম লিখিয়ে অর্থ সাহায্য করতে পারেন। বছরের শেষে সংগৃহীত অর্থ সদস্যদের মধ্যে ভাগাভাগি করে দেওয়া হয়। যদিও গ্রেগ এখনও এই ফাউন্ডেশন থেকে কানাকড়িও নেননি। সুযোগ থাকা স্বত্ত্বেও।
অস্ট্রেলীয় কিংবদন্তি এই ব্যাটার ৮৭ টেস্ট খেলে ৭১১০ রান করেছেন। ২৪ সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। এছাড়াও ৭৪টি ওয়ানডেও খেলেছেন তিনি। খেলা ছেড়ে দেওয়ার পর অস্ট্রেলীয় দলের ক্রিকেট ডিরেক্টর ছিলেন। ২০০৫ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত ভারতীয় দলের হেড কোচের ভূমিকাও পালন করেছেন তিনি। সেই সময়েই বিতর্কিত অধ্যায়ের সাক্ষী থেকেছিল ক্রিকেট বিশ্ব। টিম ইন্ডিয়া ক্যাপ্টেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন। সৌরভ বাদ পড়েন জাতীয় দল থেকে।
সেই ঘটনা আপাতত অতীত। আপাতত নিজের জীবন চালাতেই মহা-চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি তিনি। ক্রিকেট মাঠে বহুবার দলকে কঠিন পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করেছেন। নিজের জীবনের ময়দানে জয়ী হয়ে ফিরবেন? সেটা সময়ই বলবে।