পাকিস্তানে কিং বাবরের জমানা খতম হতে চলেছে। বিশ্বকাপের পরেই পাকাপাকিভাবে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে ক্যাপ্টেন বাবর আজমকে। এমনটাই পাক সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর। এশিয়া কাপের বিপর্যয়ও এলার্ম বেল বাজায়নি। তবে বিশ্বকাপে এসে পাকিস্তানের টানা হ্যাটট্রিক হার বাবর জমানায় পূর্ণচ্ছেদ ফেলে দিচ্ছে। বলা হচ্ছে, কোনওভাবে মিরাকল ঘটিয়ে পাকিস্তান সেমিফাইনালে পৌঁছলেও নেতৃত্ব থেকে সরতে হবে তাঁকে।
এমনিতে ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং শেষে আফগানিস্তানের কাছে হারের পর পাকিস্তান বড়সড় কোনও টুইস্ট না থাকলে বাবরদের সেমিফাইনালে ওঠা কার্যত অসম্ভব। এখনও তুখোড় ফর্মে থাকা নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা তো বটেই শক্তিশালী ইংল্যান্ড এবং বাংলাদেশের মুখোমুখি হতে হবে। শেষ চার ম্যাচের মধ্যে সেমির দৌড়ে থাকতে হলে বাকি চার ম্যাচের অন্তত তিনটিতে জিততেই হবে। কোনওভাবে সেই অসাধ্য সাধন করে ফেললেও বাবর আজমের নেতা হিসেবে বিদায় একপ্রকার নিশ্চিত।
বাবরের বিপক্ষে সবথেকে বড় অভিযোগ তিনি জাতীয় দলে স্বজনপোষনকে প্রশ্রয় দিয়েছেন। দায়িত্ব নিয়ে ইমাদ ওয়াসিম, সরফরাজ আহমেদদের বাদ দিয়েছেন। দল গঠনে পুরোপুরি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল বাবরকে। বতর্মান পিসিবি চেয়ারম্যান জাকা আশরাফের প্রশ্রয়ের হাত-ও রয়েছে বাবরের হাতে। এই কারণেই পিসিবির টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য মহম্মদ হাফিজ, মিসবাহ উল হকদের পরামর্শ পুরোপুরি উপেক্ষা করে নিজের মত দল গঠন করেছেন। হাফিজ, এবং মিসবাহ দুজনেই ভারতের স্পিন সহায়ক পিচে পিএসএল এবং পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা আবরার আহমেদকে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তবে তা কানে নেননি বাবর। বরং বন্ধুবৃত্তে থাকা শাদাব খান, মহম্মদ নওয়াজকে বিশ্বকাপে নিয়ে এসেছেন। দুজনেই সুপার ফ্লপ।
তাছাড়া নাসিম শাহ এশিয়া কাপে চোট পাওয়ার পর বাবরের হাতে অপশন ছিল প্রতিশ্রুতিমান জামান খানকে বিশ্বকাপে নিয়ে আসা। তবে বাবর বাকিদের পরামর্শ উপেক্ষা করে ডেকে নিয়েছেন বন্ধু হাসান আলিকে। যিনি চলতি বিশ্বকাপে একদমই নিষ্প্রভ। এছাড়া ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফর্ম করা শন মাসুদকে দল গঠনের সময় পাত্তাই দেননি বাবর।
এমন অবস্থায় বাবর আজমকে সরতে হচ্ছে বিশ্বকাপের পরেই। তা একদমই কনফার্ম। নিজের ললাটলিখন পড়তে পেরে বাবর অবশ্য তাঁকে ছেঁটে ফেলার আগেই সরে দাঁড়াতে পারেন নেতৃত্বের দায়িত্ব থেকে। এমন সম্ভবনাও রয়েছে।
ঘটনা হল, বাবরের বদলে নেতা কে হবেন? তিন তারকার নাম ভেসে উঠছে। প্রাক্তন অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ, শাহিন আফ্রিদি এবং মহম্মদ রিজওয়ান। বলা হচ্ছে, সরফরাজকে ওয়ানডে এবং টেস্টের ক্যাপ্টেন করে শাহিনকে টি২০-র নেতা হিসেবে বাছা হতে পারে।
শুধু ক্যাপ্টেন বদল-ই নয়। পুরো কোচিং স্টাফ-ই বদলে ফেলা হতে পারে পাকিস্তানের। বিশ্বকাপ শেষ হলেই অস্ট্রেলিয়ায় তিন টেস্টের সিরিজ খেলতে রওনা দেবে পাক দল। সেখানেই নতুন ক্যাপ্টেন সহ নতুন কোচিং স্টাফের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হতে পারে।