শ্রীলঙ্কায় আপাতত জাতীয় ভিলেন কে? উত্তর দেওয়ার জন্য কোনও পুরস্কারের প্রয়োজন নেই। সকলেই সমস্বরে বলবেন, সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশি ক্যাপ্টেনকে নিয়ে শ্রীলঙ্কানরা আপাতত ক্ষোভে ফুটছেন। এমনকি লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগ থেকেও নিষিদ্ধ করার দাবি উঠে গিয়েছে তারকা অলরাউন্ডারকে।
সেমিফাইনালের দৌড় থেকে ছিটকে যাওয়া দুই দল মুখোমুখি নেমেছিল দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে। সেই ম্যাচেই বিতর্কিতভাবে আউট করা হয় শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার এঞ্জেলো ম্যাথিউসকে। হেলমেটের স্ট্র্যাপ ছিঁড়ে গিয়েছিল। ম্যাথিউস বদলানোর জন্য সতীর্থদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে নিয়মের দোহাই দিয়ে সাকিব টাইম আউট করে দেন ম্যাথিউসকে। এর আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কখনও এই আউট প্রযুক্ত হয়নি। নিয়মটাই ক্রিকেটীয় স্পিরিটের পরিপন্থী হওয়ায়। তবে দুঃসাহস দেখিয়ে সাকিব এই আউট করেন। আম্পায়ার কিংবা ম্যাথিউস বারবার আউটের আবেদন প্রত্যাহার করার জন্য সাকিবকে অনুরোধ করলেও তাতে কান দেননি তিনি।
এই ঘটনার পর ক্রিকেট বিশ্ব সমস্বরে গর্জে উঠেছে। মার্ক ওয়া, ডেল স্টেইন, গৌতম গম্ভীর, বীরেন্দ্র শেওয়াগ, এস বদ্রিনাথ, ওয়াকার ইউনিস, মাইকেল ভন, সনৎ জয়সূর্য-দের মত রথী-মহারথীদের সাকিবকে তীব্র আক্রমণে ভাসিয়ে দিয়েছেন। এমনকি বিদ্রোহের ইঙ্গিত দিয়ে বাংলাদেশের বোলিং কোচ ডোনাল্ড সরাসরি সাকিবকে ধুয়ে দিয়েছেন।
এবার সাকিবকে কার্যত হুমকি দিলেন এঞ্জেলো ম্যাথিউসের ভাই ট্রেভিস। সরাসরি হুমকির সুরে সাকিবকে বলে দিয়েছেন, বাংলাদেশি তারকা মোটেই শ্রীলঙ্কায় স্বাগত নন। এমনকি একধাপ আরও এগিয়ে তাঁর বক্তব্য, মাঠে নামলে সাকিবকে ইঁট-ও ছোঁড়া হতে পারে।
বিডিক্রিকটাইমে ট্রেভিস বলেছেন, "আমরা ভীষণ হতাশ। ভদ্রলোকের খেলায় বাংলাদেশের ক্যাপ্টেনের কোনও মানবিকতা দেখা গেল না। কোনও ক্রিকেতীয় স্পিরিট ও দেখাতে পারেনি। ক্যাপ্টেন তো বটেই পুরো বাংলাদেশ টিম মেম্বারদের থেকে এমন আচরণ মোটেই প্রত্যাশিত নয়। শ্রীলঙ্কায় ও আর স্বাগত নয়। লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগে খেলতে এলে ওঁকে ইঁট ছোঁড়া হবে। অথবা সমর্থকদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হবে।"
ম্যাথিউস রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বলে দিয়েছেন, "লজ্জার হয়ে থাকল ঘটনাটা। আমরা জেতার জন্যই মাঠে নামি। তবে একটা জয় পাওয়ার জন্য একটা দল যে এতটা নিচে নামতে পারে, ভাবা যায়নি। আমার দীর্ঘ দিনের আন্তর্জাতিক কেরিয়ারে এরকম নীচ-মানসিকতা সম্পন্ন দল দেখিনি। সাকিবের জন্য যে সম্মান ছিল তা আর অবশিষ্ট নেই।"
ঘটনা হল, এই বাংলাদেশ-ই লিটন দাসের নেতৃত্বে সৌজন্য বোধের অনন্য নজির স্থাপন করেছিল। বিশ্বকাপের ঠিক আগে মানকাড আউট হওয়া ইশ সোধিকে ক্রিজে ফিরিয়ে আনেন লিটন দাস। তবে সাকিব নক্কারজনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।
সাকিব কি আর শ্রীলঙ্কান লিগে খেলতে যাওয়ার সাহস দেখাবেন?