দলের জন্য নয়। ব্যক্তিগত মাইলস্টোনের জন্য ধীর গতিতে ব্যাটিং করেছেন। এমনটাই এবার কোহলিকে বলে দিলেন পাক তারকা মহম্মদ হাফিজ। ইডেন গার্ডেন্সে ভারত দক্ষিণ অফ্রিকাকে ২৪৩ রানে উড়িয়ে দিয়েছে।
আর নিজের ৩৫তম জন্মদিন স্মরণীয় করে রাখলেন বিরাট কোহলি। ওয়ানডে সেঞ্চুরি সংখ্যায় স্বয়ং শচীন তেন্ডুলকরকে ছুঁয়ে। ১২১ বলে কোহলি ১০১ রানে অপরাজিত থাকেন। একদিনের ক্রিকেটে আর একটা শতরান করলেই বিশ্বের প্ৰথম ক্রিকেটার হিসেবে ৫০টি ওয়ানডে সেঞ্চুরির নজির গড়ে ফেলবেন।
পাকিস্তানের এক ক্রিকেট শো 'টপ ক্রিকেট এনালাইসিস'-এ মহম্মদ হাফিজ কোহলির সেঞ্চুরির ধরণকে আক্রমণ করে বলেছেন, "বিরাট কোহলির ব্যাটিংয়ের মধ্যে স্বার্থপরতার ছায়া ছিল। এই নিয়ে চলতি বিশ্বকাপে যা তৃতীয়বার ঘটল। ৪৯তম ওভারেও ও সিঙ্গলস নিয়ে খেলছিল। দলের কথা মোটেই ভাবছিল না ও।"
হাফিজ বরং বিরাটকে ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মার থেকে শিক্ষা নিতে বলছেন। হাফিজ জানাচ্ছেন, "রোহিত নিজেও স্বার্থপরের মত ব্যাট করতে পারত। তবে ও নিজের কথা না ভেবে দলকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। রোহিতের প্রশংসা প্রাপ্য। যেভাবে দলের ছন্দ ধরে রাখার জন্য নিজের ইনিংস আত্মত্যাগ করছে, তা রীতিমত প্রশংসনীয়। প্ৰথম ছয় ওভারে যেভাবে ও ব্যাট করল তাতেই দক্ষিণ আফ্রিকা মোক্ষম ধাক্কা খেয়েছিল। ও ভালোভাবেই জানত পিচ খেলা গড়ানোর সঙ্গে কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। বল নতুন, হার্ড থাকাকালীনই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে হবে। রোহিত কোহলির মত খেলতেই পারত। তবে ওঁর লক্ষ্য ব্যক্তিগত মাইলস্টোন স্থাপন করার ঊর্ধে। রোহিত চাইলেই সেঞ্চুরি করতে পারত।"
এখানেই না থেমে হাফিজ আরও বলেছেন, "কখনই বলছি না কোহলি খারাপ ব্যাটিং করেছে। ৯৭ রানে পৌঁছনোর আগে পর্যন্ত দারুণ ব্যাটিং করে গিয়েছে ও। শেষ যে তিনটি সিঙ্গলস নিল, সেই উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন থাকবেই। ও ৯৭ করুক বা ৯৯- কিছু যায় আসে না। দলের স্বার্থ সবসময় আগে রাখতে হবে।"
ওয়াহাব রিয়াজ অবশ্য মহম্মদ হাফিজের সঙ্গে একমত নন। তিনি বলে দিয়েছেন, প্রত্যেক ক্রিকেটার নিজেদের ভূমিকা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। "আমি সহমত নই। প্রত্যেক ভূমিকা আলাদা। বিরাটের ভূমিকা হল খেলাকে একদম শেষে টেনে নিয়ে যাওয়া। শেষ ৮ ওভারে ভারত ৭৫ করেছিল। সূর্যকুমার এবং জাদেজা দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করছিল। কোহলি স্রেফ ক্রিজে শেষ পর্যন্ত থাকার চেষ্টা করছিল। কোহলি আউট হয়ে গেলে শেষের দিকে জোড়া ক্যামিও আমরা দেখতে পারতাম না। ভারত হয়ত ৩০০ রানের গন্ডিও পেরোতে পারত না।"
"আমরা দলে ক্রিকেটারদের দায়িত্ব নিয়ে কথা বলছি। রোহিত এবং শুভমান তেড়েফুঁড়ে আক্রমণ শানাচ্ছিল। বিরাট শিট এংকরের ভূমিকা পালন করছিল। ইনিংস আরও ডিপে নিয়ে যাওয়াই উদ্দেশ্য ছিল। রোহিত-শুভমান তাড়াতাড়ি আউট হয়ে গেলে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের দায়িত্ব হবে শ্রেয়স আইয়ারের। কোহলি-রাহুল তখন টিকে খেলার চেষ্টা করবে। এটা একদমই স্পষ্ট। হ্যাঁ, কোহলি স্লো ব্যাটিং করেছে। তবে কোহলি না থাকলে স্কোর ৩২৬ পর্যন্ত পৌঁছত না।"
ওয়াহাব রিয়াজের বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক রশিদ লতিফ-ও। বলে দিয়েছেন, "ক্রিজে থাকাই ওঁর উদ্দেশ্য ছিল। যত সম্ভব বল ফেস করাই লক্ষ্য ছিল ওঁর। পার্টনারশিপের দিকে লক্ষ্য করো। সবসময় দ্বিতীয় ফিডলের ভূমিকা নিয়েছে। এটাই ওঁর ভূমিকা। বাকিরা ওঁকে কেন্দ্র করে ব্যাটিং করে।"