বিশ্বকাপের ফাইনালে অপ্রত্যাশিতভাবে পর্যুদস্ত হয়েছিল ভারত। ফেভারিট ট্যাগ নিয়ে খেলতে নেমে ভারতের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল অজিদের নিখুঁত স্ট্র্যাটেজির সামনে। আর বিধ্বস্ত হওয়ার পর টিম ইন্ডিয়াকে সান্ত্বনা দিতে ড্রেসিংরুমে হাজির হয়েছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
তবে ক্রিকেট মহলের একাংশের তরফে প্রবল সমালোচনা করা হয় রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। বিরোধী শিবিরের একাধিক রাজনৈতিক নেতা প্রধানমন্ত্রীকে 'পনৌতি' বা 'অপয়া' বলে দিয়েছিলেন। রাহুল গান্ধী কটাক্ষ করে বলে দিয়েছিলেন, 'অপয়া' মোদি স্টেডিয়ামে যাওয়াতেই নাকি ভারতের হার হয়েছে। রাহুল গান্ধীর এই মন্তব্যের রেশ কাটতে না কাটতেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতাজি ইন্ডোর থেকে বলে দিয়েছিলেন, "পাপিষ্ঠরা উপস্থিত ছিলেন সেখানে।"
এমনকি বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ এবং বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দলের সদস্য কীর্তি আজাদ পর্যন্ত মোদির ড্রেসিংরুমে যাওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। সরাসরি আইসিসির নিয়ম ভাঙার অভিযোগ করেন আজাদ।
তবে বিশ্বকাপ ফাইনালের তিন সপ্তাহ পরে এবার প্রধানমন্ত্রী মোদির সমর্থনে মুখ খুললেন স্বয়ং গৌতম গম্ভীর। মোদির সমালোচকদের সরাসরি একহাত নিয়েছেন তিনি। টেনে এনেছেন ২০১১-র বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ভারত-পাক মহারণের পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের টিম ইন্ডিয়ার ড্রেসিংরুমে পরিদর্শনের ঘটনাও।
সংবাদসংস্থার এক পডকাস্টে গৌতম গম্ভীর বলে দিয়েছেন, "প্রধানমন্ত্রীর জন্য যে শব্দ ব্যবহার করা হয়েছিল, তা পনৌতি! এটা সম্ভবত অন্য কাউকে, বিশেষ করে একটি দেশের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হওয়া সবথেকে খারাপ শব্দবন্ধনী। ২০১১ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে মনমোহন সিং হাজির ছিলেন। যদি আমরা হেরে যেতাম এবং উনি আমাদের ড্রেসিংরুমে আসতেন, এতে খারাপের কী রয়েছে?"
যাইহোক, হাইভোল্টেজ ফাইনালে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে হাজির ছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। অস্ট্রেলিয়ান ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার রিচার্ড মার্লেস-এর সঙ্গে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জয় শাহের সঙ্গেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে। ম্যাচ শেষে বিশ্বকাপজয়ী নেতা প্যাট কামিন্সের হাতে ট্রফি তুলে দেন তিনি।
সেই ম্যাচের পর রবীন্দ্র জাদেজা এবং মহম্মদ শামি সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কিছু ছবি পোস্ট করেন। ড্রেসিংরুমে নরেন্দ্র মোদির বেশ কিছু ছবি ভাইরাল হয়ে যায় সঙ্গেসঙ্গেই। যে ছবিতে মোদিকে দেখা যাচ্ছে একাধিক ভারতীয় তারকাকে সান্ত্বনা দিতে।
শামি লেখেন, “দুর্ভাগ্যজনকভাবে গতকাল দিনটা মোটেই ভালো ছিল না আমাদের জন্য। দলকে সমর্থনের জন্য সকল ভারতীয়কে ধন্যবাদ জানাতে চাই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিশেষ ধন্যবাদ ড্রেসিংরুমে এসে আমাদের উৎসাহিত করার জন্য। আমরা শীঘ্রই কামব্যাক করব।” মহম্মদ শামি টুর্নামেন্ট ফিনিশ করলেন ৭ ম্যাচে ২৪ উইকেট নিয়ে। তিনিই টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। বিশ্বকাপের ইতিহাসে ভারতীয়দের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহকও তিনি।
জাদেজা নিজের পোস্টে লিখেছিলেন, “আমাদের টুর্নামেন্ট দারুণ গেল। অল্পের জন্য শেষ হল না। আমাদের সকলের হৃদয় ভেঙে গিয়েছে। তবে সমর্থকদের ভালোবাসা আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ড্রেসিংরুমে আসা আমাদের আরও চাঙ্গা করে দিয়েছে।”