পাকিস্তানের ক্রিকেট ডিরেক্টর মিকি আর্থার বলে দিলেন, আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের পরিবেশ দেখে মনেই হচ্ছিল না বিশ্বকাপ নয়, যেন দ্বিপাক্ষিক সিরিজের খেলা চলছে।
পাকিস্তানি সাংবাদিক এবং দর্শকরা এখনও ভারতে আসার ভিসা পাননি। এমন অবস্থায় কার্যত কানায় কানায় ভর্তি ভারতীয় দর্শকদের সামনে খেলতে হল পাক দলকে। নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে একসঙ্গে ১ লক্ষ ৩০ হাজার দর্শক একত্রে খেলা দেখতে পারেন। আর নীল জার্সি পরিহিত এক লাখি দর্শক পাকিস্তানের সামনে ভয়ের আবহ তৈরি করেছিল। পাকিস্তানের বহু তারকারই এর আগে ভারতের মাটিতে খেলার অভিজ্ঞতা ছিল না।
এই বিষয়টিকেই ইস্যু করছেন পাকিস্তানের ক্রিকেট ডিরেক্টর মিকি আর্থার, "সত্যি কথা বলতে ম্যাচের আবহ দেখে মোটেও মনে হয়নি এটা আইসিসির ইভেন্ট। মনে হচ্ছিল বিসিসিআইয়ের একটা ইভেন্ট। মাইক্রোফোনে কখনই শোনা যায়নি- দিল দিল পাকিস্তান!"
"এই ছোটখাটো বিষয়গুলোই ম্যাচে প্রভাব ফেলে দেয়। তবে এটা কোনওভাবেই অজুহাত দিচ্ছি না। আমরা বরং মুহূর্তটা উপভোগ করতে চাইছিলাম। আমাদের পুরো পরিকল্পনা ছিল পরের বল কীভাবে মোকাবিলা করব, ভারতীয়দের কোন কৌশলে আটকানো যাবে।"
ঘরের দর্শকদের কাছ থেকে পুরো সমর্থন পেয়ে ভারতীয়রাও মনে রাখার মত পারফরম্যান্স করে গেল। সাত উইকেটে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ভারত পেড়ে ফেলল পাকিস্তানকে। বিশ্বকাপের মত ইভেন্টে দর্শক অনুকূল এরকম পরিস্থিতি তৈরি করা কি উচিত? এমন প্রশ্নের জবাবে মিকি আর্থারের বক্তব্য, "এই বিষয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চাই না। জরিমানার শিকার হতে চাই না এখন।"
শনিবার ভাবা হয়েছিল ভারতকে যথেষ্ট বেগ দেবে পাকিস্তান। কানায় কানায় পূর্ণ স্টেডিয়ামে লড়াই অবশ্য হল একদমই একপেশে। কোনও বিভাগেই ভারতকে টক্কর দিতে পারেনি পাকিস্তান। রোহিতরা ৭ উইকেটে ধ্বংস করে দেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের।
১৯২ রানের সামান্য টার্গেট চেজ করে ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মা ঝড় তোলেন ব্যাট হাতে। ৬৩ বলে ৮৬ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে পাক বোলারদের নিয়ে ছেলেখেলা করে যান হিটম্যান। সন্ধ্যার সময় স্ট্রোকের ফুলঝুরি ছোটান মহাতারকা। হ্যারিস রউফ, শাহিন আফ্রিদিকে মাঠের বাইরে ফেলতে ফেলতে ক্লান্তও হয়ে যান রোহিত। ১৯.৩ ওভার বাকি থাকতেই ভারত লক্ষ্যে পৌঁছে যায় হাতে ৭ উইকেট নিয়ে। পুরো একশো ওভারের ম্যাচে সাকুল্যে খেলা হল মাত্র সাড়ে ৭৩ ওভার। রাত আটটাতেই ভারত রান চেজ করে ফেলে।
১৯৯২ থেকে বিশ্বকাপে ভারতকে কখনই বিশ্বকাপের মঞ্চে হারাতে পারেনি পাকিস্তান। সেই রেকর্ড মোদি স্টেডিয়ামেও অক্ষুণ্ন থাকল। আপাতত স্কোরলাইন দাঁড়াল ৮-০।
বল হাতে ভারতের দুই সিমার মহম্মদ সিরাজ এবং জসপ্রীত বুমরা ছিঁড়ে ফেলেন পাক ব্যাটিং লাইনআপকে। যোগ্য সহায়তা করেন দুই স্পিনার কুলদীপ যাদব এবং রবীন্দ্র জাদেজা। ভাল বোলিং করেন হার্দিক পান্ডিয়াও। সবমিলিয়ে দলগত নিখুঁত ক্রিকেট খেলে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দেয় ভারত।