Advertisment

দুর্নীতির অভিযোগে কলঙ্কিত বিশ্বকাপ! পুলিশের তলব সৌরভের দাদা স্নেহাশিসকে, নাম জড়াল জয় শাহের BCCI-র

কলঙ্কে নিমজ্জিত বিশ্বকাপ

IE Bangla Sports Desk এবং Subhasish Hazra
New Update
jay-shah-cab

বড় অভিযোগে বিদ্ধ সিএবি, বিসিসিআই (টুইটার)

বিশ্বকাপ আয়োজনে খামতি রয়েছে। সেটা ওয়ার্ল্ড কাপ শুরুর কয়েক দিনের মধ্যেই বোঝা গিয়েছিল। কোনওরকম উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছাড়াই নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে চালু করে দেওয়া হয়েছিল বিশ্বকাপের মত ইভেন্ট। ধর্মশালায় আন্ডার প্রিপেয়ার্ড টার্ফে খেলানো হল একের পর এক ম্যাচ। বিশ্বকাপের ভেন্যু বাছাই রাজনৈতিক সমীকরণ মেনে, এমনটাও বলা হয়েছিল। সাংবাদিক সম্মেলনে লোডশেডিংয়ের লজ্জাও দেখেছে এই বিশ্বকাপ। পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে বৈদ্যুতিন গোলযোগে ডিআরএস ব্যবস্থা কাজ করেনি অল্প সময়ের জন্য। এসব তো ছুটকো ছাটকা সমস্যা। এসব ছাপিয়ে বিশ্বকাপ এবার কলঙ্কিত হল টিকিট দুর্নীতিতে। যাতে সরাসরি নাম জড়িয়ে গেল বিসিসিআই এবং সিএবির।

Advertisment

বিশ্বকাপের টিকিট নিয়ে অভিযোগ প্ৰথম দিন থেকেই। নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ড বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচে হাজির ছিলেন মেরেকেটে কয়েক হাজার দর্শক। ম্যাড়ম্যাড়ে প্ৰথম ম্যাচের পরেই প্রথমে টিকিট ইস্যু সামনে আসে। অভিযোগ উঠে যায়, বুক মাই শো-য় টিকিট বুক করার সময় 'সোল্ড আউট' নোটিশ থাকলেও মাঠে ধু ধু ফাঁকা গ্যালারি কেন! জন্ম দিয়ে গিয়েছিল অনেক প্রশ্নের।

একইভাবে হঠাৎ করেই টিকিট নিয়ে আলোচনা শুরু হতেই মাঠে নামে বিসিসিআই। প্রাথমিকভাবে বহু আগে ভারত-পাক ম্যাচের টিকিট 'সোল্ড আউট' বলে দেওয়া হয়েছিল বিসিসিআইয়ের টিকেটিং পার্টনার বুক মাই শো-য়। তবে হঠাৎ-ই আচমকা বোর্ডের তরফে ১৪ অক্টোবর মহারণের ঠিক আগে ঘোষণা করে দেওয়া হয়, আরও অতিরিক্ত ১৪ হাজার টিকিট রিলিজ করছে বোর্ড।

ফের একবার প্রশ্ন উঠে যায়, সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেলে, অতিরিক্ত ১৪ হাজারের টিকিট কীভাবে ব্যবস্থা করল বিসিসিআই। সেই ঘটনাই এবার মান্যতা পেল বিশ্বকাপের কলকাতা পর্বে।

কলকাতায় বিশ্বকাপ পর্ব শুরু হয়েছিল নেদারল্যান্ডস বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচের মাধ্যমে। সেই ম্যাচে যথারীতি টিকিটের উত্তুঙ্গ চাহিদা ছিল না। তবে পাকিস্তান বনাম বাংলাদেশ ব্লকবাস্টার ম্যাচেও হাজির ছিলেন মেরেকেটে হাজার পঁয়তিরিশ দর্শক। টুর্নামেন্ট চলাকলীন বারবার যে অপ্রীতিকর প্ৰশ্ন উঠেছিল, সেই প্রশ্নই আবার ওঠে। ক্রিকেট মহলের তরফে বলা হয়, অনলাইনে টিকিট সোল্ড আউট দেখালেও মাঠে দর্শক কোথায়!

৫ নভেম্বর ইডেনে ভারত গ্রুপ পর্বের একমাত্র ম্যাচে নামছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে। গ্রুপ পর্বের সেরা দুই দলের মুখোমুখি লড়াই চাক্ষুস করার জন্য ইতিমধ্যেই টিকিটের হাহাকার শুরু হয়ে গিয়েছে। আর এই ম্যাচ ঘিরেই কালোবাজারি শুরু হয়ে গিয়েছে পুরো মাত্রায়। সাধারণ দামের দ্বিগুন, তিনগুন, এমনকি চার গুন দামেও টিকিট ব্ল্যাক করার অভিযোগ উঠে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে গুঞ্জন চট্টোপাধ্যায় এবং সৌগত চট্টোপাধ্যায় নামের দুই ব্ল্যাকারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের তরফে অভিযোগে জানানো হয়েছে, সাধারণ ৭০০ টাকার টিকিট ৪০০০ টাকায় বিক্রির চেষ্টা করছিলেন তাঁরা। তল্লাশি চালিয়ে তাঁদের কাছ থেকে ১৬টি ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের টিকিট উদ্ধার করা হয়েছে।

একটি টিকিটের জন্যই যেখানে হাহাকার, সেখানে ১৬টি টিকিট কীভাবে জোগাড় করলেন গুঞ্জন-সৌগতরা। প্ৰশ্ন উঠছেই।

আরও পড়ুন: ইডেনের ম্যাচে কালোবাজারি! থানা-পুলিশ হতেই জয় শাহের BCCI-কে নাম না করে আক্রমণ সৌরভের

সমস্যা এখানেই শেষ নয়। পুরো টিকিটের জালিয়াতি রুখতে এবার সক্রিয় হয়েছে স্বয়ং কলকাতা পুলিশ। ময়দান থানায় বিসিসিআই এবং সিএবির নামে টিকিটের কালোবাজারিতে উৎসাহ দেওয়ার অভিযোগ জমা পড়েছে। পরে ময়দান থানার তরফে রীতিমতো বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলা হয়, ক্রিকেট উৎসাহী এক ব্যক্তির তরফে অভিযোগ জানানো হয়েছে। বুক মাই শো-য় টিকিটের অপর্যাপ্ততা রয়েছে। বিসিসিআই এবং সিএবির কয়েকজন আধিকারিক এবং বুক মাই শো-র তরফে ইচ্ছাকৃতভাবে বহু টিকিট সরিয়ে রাখা হয়েছে। যাতে বাজারে টিকিটের কৃত্রিম চাহিদা তৈরি করে কালোবাজারি করা যায়।

অভিযোগ পেয়েই তদন্ত শুরু করেছে ময়দান থানার পুলিশ। তদন্তে সহযোগিতার জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়কে। পুলিশের তরফে তলব করা হতেই সিএবি সভাপতি বলে দিয়েছেন, "কিছু করা সম্ভব নয়। সবাইকে সন্তুষ্ট করা যাবে না। দু:খিত।”

টিকিট নিয়ে অস্বচ্ছতা, কালোবাজারির অভিযোগ। একইসঙ্গে জয় শাহের বিসিসিআই এবং স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের সিএবি তাতে বিদ্ধ। মাঠে রোহিত শর্মাদের টিম ইন্ডিয়া যতটাই ঝকঝকে, ততটাই বিবর্ণ বিশ্বকাপ আয়োজন। বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে দুর্নীতি অগ্নিগর্ভ চেহারা নিল। এর শেষ কোথায়?

kolkata police BCCI Eden Gardens Cricket World Cup Cricket Association Of Bengal ICC Cricket World Cup
Advertisment