বাংলাদেশ: ৩০৬/৮
অস্ট্রেলিয়া: ৩০৭/২
স্কোরবোর্ডে চলতি ওয়ার্ল্ড কাপে প্ৰথমবার তিনশোর দেখা পেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে কোনও লাভ হল না। অস্ট্রেলিয়া মিচেল মার্শের ব্যাটিং ঝড় টাইগারদের আছড়ে ফেলল মাটিতে। ৩২ বল, ৮ উইকেট হাতে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশকে পুণের মাঠে কচুকাটা করল। জয় দিয়েই গ্রুপ পর্বের অভিযান শেষ করল অজিরা।
আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় ওয়ানডের ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইনিংস খেলে ম্যাক্সওয়েল দলকে সেমিতে পৌঁছে দিয়েছিলেন। ওয়াংখেড়ের পর এবার অজিদের ঝড় উঠল মার্শের ব্যাটে। ম্যাক্সওয়েল খেলেননি। তবে মিচেল মার্শের ব্যাট বিনোদন দিতে কোনও কার্পণ্য করল না। তিন নম্বরে নেমে মার্শ ১৩২ বলে ১৭৭ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে গেলেন। উড়ে গেল তাসকিন আহমেদ, নাসুম আহমেদ, মেহেদি হাসান মিরাজদের বোলিং। অজি তারকা ১৭টা বাউন্ডারি হাঁকানোর পাশাপাশি ৯টা বিশাল ছক্কার ঝড়ও তুললেন।
তৃতীয় ওভারেই ওপেনার ট্র্যাভিস হেডকে ফিরিয়ে অজিদের ধাক্কা দিয়েছিলেন তাসকিন আহমেদ। এরপরে ওয়ার্নারের সঙ্গে ১২০ রানের জুটি গড়ে যান মার্শ। ওয়ার্নার হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করার পরে আউট হয়ে যান। ম্যাচের বাকিটা পুরোটাই মার্শ শো। স্টিভ স্মিথের সঙ্গে ১৭৫ রানের অবিচ্ছেদ্য পার্টনারশিপ ক্যাঙারুদের জয় এনে দেয়। স্মিথ শেষ পর্যন্ত ৬৪ বলে ৬৩ রানে অপরাজিত থাকেন মার্শের সঙ্গে।
সাকিব আঙুলের চোটে অজি ম্যাচে খেলতে পারেননি। বদলে নেতা হয়েছিলেন শান্ত। প্ৰথমে ব্যাটিং করতে নেমে বাংলাদেশের প্রায় সকলেই অল্পবিস্তর রান পেয়েছিলেন। ওপেনিং জুটিতেই তানজিদ হাসান (৩৬) এবং লিটন দাস (৩৬) ৭৬ তুলে দলকে বড় রানের প্ল্যাটফর্ম এনে দেন। পাওয়ার প্লে-র মধ্যে এই প্ৰথম উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ। দুই ওপেনার ফেরার পর বাংলাদেশকে টানেন স্ট্যান্ড ইন ক্যাপ্টেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তৌহিদ হৃদয়ের সঙ্গে ভালোই পার্টনারশিপ গড়েছিলেন তিনি। তবে মার্নাস লাবুশনের দুর্ধর্ষ থ্রোয়ে রান আউট হয়ে ফিরতে হয় শান্তকে (৪৫), হাফসেঞ্চুরির ঠিক আগেই। হৃদয়ের সঙ্গে এরপরে আরও একটা জমাটি পার্টনারশিপ গড়েন মাহমুদুল্লাহ। তবে মাহমুদুল্লাহকেও ফিরতে হয় মার্নাস লাবুশেনের দুর্ধর্ষ ফিল্ডিংয়ের শিকার হয়ে।
তৌহিদ একপ্রান্ত ধরে রেখে ৭৪ করে যান। মুশফিকুর রহিম (২১) এবং মেহেদি হাসান মিরাজ (২৯) শেষদিকে ব্যাট হাতে অবদান রাখেন। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ ৩০৬ তোলে। তবে মার্শ ঝড়ে এই পুঁজি যে কিছুই নয়, প্রমাণ হয়ে গেল।
সবমিলিয়ে পয়েন্টের হিসাবে অস্ট্রেলিয়া ১৪ পয়েন্ট নিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শেষ করল। দক্ষিণ আফ্রিকাকে পয়েন্টে ছুঁলেও নেট রানরেটের বিচারে প্রোটিয়াজরা দ্বিতীয় এবং অজিরা তিন নম্বরে। শেষ ম্যাচে হারলেও বাংলাদেশের পক্ষে সান্ত্বনা একটাই, শীর্ষ আট দলের মধ্যেই বিশ্বকাপ অভিযান শেষ করতে চলেছে টাইগাররা। নেদারল্যান্ডস ভারতকে শেষ ম্যাচে হারিয়ে অঘটন না ঘটালে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলবে সেরা আট দলের অংশ হয়ে।