ভারত: ২২৯/৯
ইংল্যান্ড: ১২৯/১০
ভারত অপ্রতিরোধ্য। থামানোই যাচ্ছে না টিম ইন্ডিয়াকে। লখনৌয়ে ২২৯ রানের পুঁজি নিয়ে ইংল্যান্ডকে ভারত থামিয়ে দিল মাত্র ১২৯ রানে। টানা ষষ্ঠ ম্যাচ ভারত জিতল ১০০ রানে। সেমিফাইনালে পৌঁছনোও সেইসঙ্গে নিশ্চিত করে ফেলল টিম ইন্ডিয়া। বল হাতে আগুন ঝড়ালেন জসপ্রীত বুমরা, মহম্মদ শামি। দুই পেসারই বিপক্ষের ৭ উইকেট তুলে নিলেন। দুর্ধর্ষ কুলদীপ নিলেন ২ উইকেট। ৬ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষেও পৌঁছে গেলেন রোহিতরা।
হাতে সামান্য পুঁজি, সেই রান কীভাবে ডিফেন্ড করতে হয়, তা বাকি বিশ্বের কাছে টেমপ্লেট হয়ে থাকতে পারে। প্ৰথম ১০ ওভারের মধ্যেই ভারত ইংল্যান্ডের টপ অর্ডার মুচড়ে দিয়েছিল। বিনা উইকেটে ডেভিড মালান, জনি বেয়ারস্টো স্কোরবোর্ডে ৩০ তুলে দিয়েছিল। তবে পঞ্চম ওভার থেকে দশম ওভারের মধ্যেই বুমরা-শামির ঝলকে ইংল্যান্ড ৩৯/৪ হয়ে যায়।
পঞ্চম ওভারের শেষ দুই বলে বুমরা পরপর ফিরিয়ে দেন মালান-রুটকে। এরপরে বেয়ারস্টো-স্টোকসকে বোল্ড করে ইংরেজদের টপ অর্ডারদের ধসে পড়া নিশ্চিত করেন। শামি-বুমরা যে ধাক্কা দেন। সেই ধাক্কা আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি ইংল্যান্ড।
সিমার হঠিয়ে স্পিনারদের আক্রমণে আনলেও রেহাই মেলেনি ইংরেজদের। কুলদীপ-জাদেজা মাঝের ওভারে নিজেদের ট্রেডমার্ক ভঙ্গিতে দমবন্ধ করে রাখেন। স্বপ্নের ডেলিভারিতে কুলদীপ বোল্ড করেন ক্যাপ্টেন জস বাটলারকে। ক্রিজে টিকে যাওয়া লিভিংস্টোনকে লেগ বিফোর করেন। দ্বিতীয় স্পেলের শুরুতে এসেই শামি আউট করেন মঈন আলিকে। শেষমেশ ইংরেজ মুখ থুবড়ে পড়ে ১২৯ রানে।
হার্দিক পান্ডিয়া চোটের জন্য দলের বাইরে। হার্দিক বাইরে চলে যাওয়ায় প্ৰথম একাদশে আচম্বিতে খেলার সুযোগ চলে এসেছে মহম্মদ শামির। এসেই ঝড় তুলে দিয়েছেন। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ উইকেটের পর শামির রবিবারের শিকার ৪ জন ইংরেজ ব্যাটার। মাত্র দুটো ম্যাচ খেলেই শামির নামের পাশে ৯ উইকেট। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে হার্দিক ফিরলে বাইরে যাবেন কে, মাথা ব্যাথা বেড়ে গেল ক্যাপ্টেন রোহিতের।
টু-পেসড উইকেট। পিচে বাউন্স রয়েছে। টার্ন রয়েছে। তবে বল সহজে ব্যাটে আসছে না। এমন পিচেই ভারতকে ২২৯ রানে পোঁছে দিয়েছিল একটা ক্যাপ্টেন্স নক। ৮৭ রানে রোহিত কার্যত একাই টানলেন দলকে। ইংল্যান্ড ভারতের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল বিশ্বকাপে পাঁচ ম্যাচে মাত্র একটা জয় নিয়ে। তবে রবিবার ক্রিস ওকস, ডেভিড উইলিরা ভারতীয় ব্যাটারদের রুখে দিয়েছিলেন নিখুঁত প্ল্যানিংয়ে।
পাওয়ার প্লে-তে একের পর এক ডট বলে ভারতীয় ব্যাটিংয়ে চাপ বাড়ান ইংরেজ সিমাররা। ক্যাপ্টেন বাটলার নিখুঁতভাবে স্পিনারদেরও ব্যবহার করে গেলেন। আদিল রশিদ ভারতের দু উইকেট শিকার করলেন। টপ অর্ডার ভারতের এদিন চলেনি। বাউন্সের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পেরে আউট হলেন কোহলি, শ্রেয়স আইয়ার। আর শুভমান গিল সিম মুভমেন্টে পরাস্ত হলেন।
৪০/৩ হয়ে যাওয়ার পর ভারতকে টানল কেএল রাহুল-রোহিতের ৯১ রানের পার্টনারশিপ। লখনৌয়ের একানা স্টেডিয়ামের পিচ যেকোনও ব্যাটারের কাছেই থিতু হওয়া চ্যালেঞ্জ। তাই রোহিতের সঙ্গে বড়সড় পার্টনারশিপ গড়লেও রাহুল পিচের বাউন্স পড়তে না পেরে আউট। ডেভিড উইলি দ্বিতীয় স্পেলে বল করতে আসার পরই কাউন্টার এটাক করতে চেয়েছিলেন রাহুল। মিড অন দিয়ে হাঁকাতে গিয়েই টাইমিংয়ের হেরফের ঘটিয়ে রাহুল (৩৯) ক্যাচ তুলে বিদায় নিয়েছিলেন।
রাহুল আউট হওয়ার পর বেশিক্ষণ টেকেননি রোহিত-ও। আদিল রশিদ হিটম্যানের চ্যালেঞ্জিং ইনিংস খতম করে দেন। এরপর বাকিটা সূর্যকুমার যাদবের টেলএন্ডারদের নিয়ে দলীয় স্কোর আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। ১৬৪/৫ থেকে ১৮৩/৭ হয়ে যাওয়ার পরও ভারত যে ২২৯-এ পৌঁছল তাতে সূর্যকুমার যাদবের ৪৮ রানের নক। ছক্কা হাঁকিয়ে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করতে গিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। শেষদিকে জসপ্রীত বুমরা ১৬ রান করে ভারতের পুরো ৫০ ওভার ব্যাটিং নিশ্চিত করেন।