ভারত: ৩৫৭/৮
শ্রীলঙ্কা: ৫৫/১০
কয়েক সপ্তাহ আগেই এশিয়া কাপের ফাইনালে লজ্জার মুখে পড়েছিল শ্রীলঙ্কা। সিরাজের ইতিহাস গড়া স্পেলের সামনে শ্রীলঙ্কা মাত্র ৫০ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল। কলম্বোর সেই ম্যাচের যেন রিপিট টেলিকাস্ট দেখল বৃহস্পতিবারের ওয়াংখেড়ে। ভারতের ৩৫৯ রানের লক্ষ্যের সামনে আরও একবার শ্রীলঙ্কা মুখ থুবড়ে পড়ল। আরও লজ্জাজনকভাবে। সেবারের ৫০-এর পর এবার শ্রীলঙ্কা করল ৫৫।
মহম্মদ শামির এদিনের সংগ্রহে ফের পাঁচ উইকেট। ওয়ান চেঞ্জে বোলিং যখন করতে এসেছিলেন ততক্ষণ ইতিমধ্যেই চার উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল লঙ্কান ব্যাটিং। বাকি ছয় উইকেটের মধ্যে পাঁচটিই তাঁর শিকার। ৫ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে তুললেন পাঁচ উইকেট। সিরাজ ৭ ওভারে ১৬ রানের বিনিময়ে নিলেন ৩ উইকেট। সবমিলিয়ে চলতি বিশ্বকাপে মাত্র ৩ ম্যাচ খেলেই শামির নামের পাশে ১৪ উইকেট। ভারতের হয়ে বিশ্বকাপের মঞ্চে সবথেকে বেশি উইকেট শিকারিও তিনি হয়ে গেলেন বৃহস্পতিবারের পর। ৪৫ উইকেট নিয়ে পিছনে ফেললেন জাহির খান, জাভাগাল শ্রীনাথদের।
সিরাজ-শামিদের ঐতিহাসিক স্পেলের মঞ্চেই বিশ্বকাপের প্ৰথম দল হিসাবে সেমিফাইনালের জায়গাও পাকা করে ফেলল টিম ইন্ডিয়া। ২০১১-র সেই ঐতিহাসিক ওয়ার্ল্ড কাপ জয়ের মঞ্চ। সেই মঞ্চেই এল চলতি বিশ্বকাপে ভারতের সবথেকে দাপুটে পারফরম্যান্স। এল ৩০২ রানের বিশালাকায় জয়।
সেবার শ্রীলঙ্কান ব্যাটিংয়ের ঘাতক ছিলেন মহম্মদ সিরাজ। এবার সিরাজের সঙ্গেই মাঠে তুলকালাম ফেলো দিলেন শামি। মহম্মদ শামির আগুন ঝড়া বোলিংয়ের সামনে এতদিন কিছুটা নিষ্প্রভ ছিলেন মহম্মদ সিরাজ। নিজেকে চেনানোর মঞ্চ হিসাবে তিনি বেছে নিলেন চেনা শিকারকেই। প্ৰথম বলেই লঙ্কান ব্যাটিংয়ের পতনের সূচনা করে গিয়েছিলেন বুমরা। পরের ওভারে একই কাণ্ড করেন করুনারত্নেকে ফিরিয়ে। সেই ওভারেরই পঞ্চম বলে সিরাজের শিকার সমরাবিক্রমা।
বুমরা-সিরাজের উইকেট পার্টিতে যোগ দিতে দেরি করেননি মহম্মদ শামি-ও। ৪ রানেই তিন উইকেট হারিয়ে ফেলার পর শ্রীলঙ্কা একসময় ১৪/৬ হয়ে যায়। সময় যত গড়িয়েছে ততই ম্যাচ বুমরা-সিরাজ-শামির মধ্যে উইকেট দখলের মৃগয়াক্ষেত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তার আগে প্ৰথমে ব্যাট করতে নেমে ভারতকে রানের পাহাড়ে চাপিয়ে দিয়েছিলেন বিরাট কোহলি, শুভমান গিল এবং শ্রেয়স আইয়ারের দুর্ধর্ষ হাফসেঞ্চুরি। তিন ফিফটিতে ভর করে লঙ্কান বোলারদের তুলোধোনা করে যায় ভারত। প্ৰথম ওভারেই দিলশান মধুশঙ্কা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তুখোড় ফর্মে থাকা ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মাকে। তারপর কোহলি-গিলের হাফসেঞ্চুরি। এবং ১৮৯ রানের দাপুটে পার্টনারশিপ। নিশ্চিত সেঞ্চুরির মুখে দাঁড়িয়ে থাকা কোহলি এবং গিলকে ফেরান মধুশঙ্কাই।
শ্রীলঙ্কা এরপরে কিছুটা হলেও প্রত্যাঘাত করে কেএল রাহুল, সূর্যকুমার যাদবকে ফিরিয়ে। তবে ভারত সাড়ে তিনশোর গন্ডি পেরোয় শ্রেয়স আইয়ারের ৫৬ বলে ৮২ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে ভর করে। শেষদিকে রবীন্দ্র জাদেজাও ২৫ বলে ৩৪ করে দলকে ভালো জায়গায় পৌঁছে দিতে সাহায্য করেন।