এই মুহূর্তে পাকিস্তানের অন্যতম ধারাবাহিক ক্রিকেটার তিনি। উইকেটকিপার তো বটেই ব্যাটসম্যান হিসেবেও পাক ক্রিকেটের মিস্টার ডিপেন্ডেবল বলা চলে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কয়েকদিন আগেই ঐতিহাসিক শতরান করে দলকে বিশ্বকাপের ইতিহাসে নজিরবিহীন জয় এনে দিয়েছেন।
তবে মহম্মদ রিজওয়ান বিশ্বকাপে খেলতে এসে সমালোচনার শিকার হয়েছেন অক্রিকেটীয় কারণে। মাঠে একাধিকবার নামাজ পড়ার ভঙ্গি করেছেন। সেই সঙ্গে ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন দ্বন্দে গাজার পক্ষে রাজনৈতিক মতামত দিয়েছেন। খেলার সঙ্গে রাজনীতি এবং ধর্মকে মেশানোর অভিযোগে উত্তাল হয়েছে ক্রিকেট দুনিয়া। পাল্টা ধর্মীয় কটুক্তির মুখেও পড়েছেন তারকা।
সেই কারণেই এবার রিজওয়ানকে একহাত নিলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন স্পিনার দানিশ কানেরিয়া। আজ তকে এসে সাক্ষাৎকারে কানেরিয়া বিস্ফোরকভাবে বলে দিয়েছেন, "বর্তমান এই পাকিস্তান দল সবকিছুতেই ধর্ম খোঁজে। ধর্মই প্ৰথম অগ্রাধিকার। তারপর রাজনীতি। এবং সবশেষে ক্রিকেটকে নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হয়। ওঁদের মাঠের আচার আচরণ আমার যুক্তি-বুদ্ধির বাইরে। নামাজ যদি পড়তেই হয়, তাহলে ড্রেসিংরুমে করো! সকলকে দেখিয়ে করার কী যুক্তি রয়েছে?"
"আমরাও পুজো করি। তবে মাঠেই আরতি করতে বসে যাই না। তোমাদের কি মনে হয় বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা পুজো করে না, নাকি সিরাজ-শামিরা নামাজ পড়ে না!"
যাইহোক, বিতর্কের সূত্রপাত করেছিলেন মহম্মদ রিজওয়ান নিজেই। ভারতীয় সমর্থকদের একাংশ অভিযোগ করেছিল ইচ্ছাকৃতভাবে রিজওয়ান মাঠে নামাজ আদায় করেছেন। ভক্তি প্রদর্শনের জন্য নয়, বরং ভারতীয় দর্শকদের দেখিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই তাঁর এমন কীর্তি। এরপরে প্যালেস্টাইনের পাশে দাঁড়িয়ে রাজনৈতিক বিবৃতি দেওয়ায় ফের একবার সমালোচিত হন তিনি। আইসিসি ইভেন্টে এর আগে মহেন্দ্র সিং ধোনিকে ভারতীয় সেনার প্রতীক সমেত গ্লাভস পরতে নিষেধ করা হয়েছিল। আইসিসির তরফে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল, খেলার মাঠে কোনওভাবেই রাজনৈতিক বার্তা দেওয়া যাবে না। আইসিসির সেই নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই গাজার সমর্থনে ব্যাট ধরেছিলেন রিজওয়ান। বিশ্বকাপ চলাকালীন। তাই মোদি স্টেডিয়ামে দর্শকদের একাংশ টার্গেট করে রিজওয়ানকে। এমনটাই ক্রিকেট মহলের ব্যাখ্যা।
রিজওয়ান ইস্যুতে আইসিসির কাছে অভিযোগ-ও জানায় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। পাক ক্রিকেট বোর্ডের তরফে সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডলে লেখা হয়েছে, “আইসিসির কাছে সরকারিভাবে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের তরফে। পাক সাংবাদিকদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিলম্ব করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ভারতের ভিসা নীতির জন্য সমর্থকরা থাকতে পারছেন না। ১৪ অক্টোবর ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচ চলাকালীন পাক ক্রিকেটারদের যেভাবে টার্গেট করা হয়েছিল সেই বিষয়েও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।”