আফগানিস্তানের কাছে হারে সুতোয় ঝুলছে পাকিস্তানের বিশ্বকাপ ভাগ্য। মিরাকল না ঘটলে পাকিস্তানের সম্ভবত সেমিফাইনালে পৌঁছনো হচ্ছে না।
ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং শেষে আফগানিস্তানের কাছে হারের পর পাকিস্তান বড়সড় কোনও টুইস্ট না থাকলে বাবরদের সেমিফাইনালে ওঠা কার্যত অসম্ভব। এখনও তুখোড় ফর্মে থাকা নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা তো বটেই শক্তিশালী ইংল্যান্ড এবং বাংলাদেশের মুখোমুখি হতে হবে। শেষ চার ম্যাচের মধ্যে সেমির দৌড়ে থাকতে হলে বাকি চার ম্যাচের অন্তত তিনটিতে জিততেই হবে। সেই আশা কেউই অন্তত করছেন না এই মুহূর্তে।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে চ্যালেঞ্জিং স্কোরই খাড়া করেছিল পাকিস্তান। ২৮২ রানের লক্ষ্যমাত্রা ছুড়ে দিয়েছিল। বাবর আজম নিজেও ৭৫ রানের ইনিংস খেলে যান। তবে আফগান ব্যাটিংয়ের শক্তি ভেদ করতে পারেননি শাহিন আফ্রিদিরা। দুই ওপেনার রহমনুল্লাহ গুরবাজ এবং ইব্রাহিম জাদরান ১৩০ রানের পার্টনারশিপ গড়ে আফগানিস্তানকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়ে দেন। পরে রহমত শাহ এবং ক্যাপ্টেন হাসমাতুল্লাহ শাহিদি দলকে জয়ে পৌঁছে দেন। ঐতিহাসিক জয়ে আফগানিস্তান হঠাৎ করেই সেমিফাইনালের বিবেচনায় চলে এসেছে।
আর আফগানিস্তানের কাছে শোচনীয় হারের পর বাবর আজমের নেতৃত্ব তুমুল সমালোচিত হয়েছে। পুরো পাকিস্তানে আপাতত জাতীয় ভিলেনে পরিণত হয়েছেন বাবর। এর মধ্যেই চাঞ্চল্যকর ঘটনা স্বীকার করে নিলেন মহম্মদ ইউসুফ। জানালেন, আফগানিস্তানের কাছে হারের পর সারা রাত কেঁদেছেন বাবর।
পাকিস্তানের সামা টিভিতে মহম্মদ ইউসুফ পাকিস্তানের ড্রেসিংরুমের কাহিনী ফাঁস করে বলে দিয়েছেন, "বাবরকে প্রেস কনফারেন্স-এ দেখলাম। অন্য দিনেও ওঁকে খেয়াল করলাম। বেশ সমস্যায় লেগেছে ওঁকে। আফগানিস্তান ম্যাচের পরে সারা রাত কেঁদেছে ও, এমনটাই শুনেছি। দলের এই হারের দায় শুধুই বাবরের নয়। গোটা দল, এমনকি ম্যানেজমেন্ট-ও এই দায়ের অংশ। এই কঠিন সময়ে আমরা বাবরের পাশে রয়েছি। গোটা দেশ ওঁর সঙ্গে রয়েছে।"
ক্রিকেটের সেই আলোচনা চক্রে ইউসুফের সঙ্গেই ছিলেন শাহিদ আফ্রিদি। তিনি অবশ্য কোনও রাখঢাক না করেই একহাত নিয়েছেন পাকিস্তান অধিনায়ককে। "খেলা থেকে যখন ফোকাস নড়ে যায়, কোনও কিছু লুকিয়ে রাখতে হয়, সদর্থকভাবে ভাবনাচিন্তা বন্ধ করে দিলে তখনই এমন হয়। ম্যাচে মনে হয়েছে আমরা মিরাকলের জন্য অপেক্ষা করছি। মিরাকল সবসময় হয় না। সাহসী, যাঁরা লড়াই করতে ভয় পায়না, তাঁদের কাছেই মিরাকল হয়।"
এমনটা জানিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন আফ্রিদি। বলেছেন, "এমনটা অতীতেও হয়েছে। যখন আমি অথবা ইউসুফ কেউ একজন নেতা ছিল। যখন আমরা মাঠে ছুটতে শুরু করতাম, তখন গোটা সাপোর্ট স্টাফ, প্লেয়ার উদ্দীপিত হয়ে দৌড় শুরু করত। মাঠে যখন ইনজামাম ডাইভ দিত, আমাদের নিজেদের-ই লজ্জা লাগত। ভাবতাম, ক্যাপ্টেন যখন ডাউভ দিচ্ছে, আমরা কেন দিচ্ছি না! দিনের শেষে সবকিছুরই দায়িত্ব থাকে ক্যাপ্টেনের।"