অজুহাতের বন্যা দিয়েই চলেছেন মহম্মদ হাফিজ। চেন্নাইয়ে পাকিস্তান আফগানিস্তানের কাছে চূর্ণ হওয়ার পরই বড়সড় অভিযোগ করেছিলেন প্রাক্তন এই পাকিস্তানি অলরাউন্ডার। বলে দিয়েছিলেন, বেছে বেছে পুরোনো পিচেই খেলতে বাধ্য করা হচ্ছে পাকিস্তানকে।
এবার টস নিয়েই আপত্তির কথা জানালেন হাফিজ। যিনি পাক ক্রিকেট মহলে 'প্রফেসর' নামে পরিচিত। তিনি সরাসরি আইসিসিকে প্রস্তাব দিলেন, টসের পুরো প্রক্রিয়া যেন স্পাইডার-ক্যামে দেখানো হয়। যাতে স্বচ্ছতা নিয়ে কোনও সন্দেহের অবকাশ না থাকে। তিনি নিজেও নাকি আইসিসির আধিকারিককে ব্যক্তিগত উদ্যোগে এমন পরামর্শ আগে দিয়েছেন, বলে জানিয়েছেন হাফিজ।
যে কোনও ধরনের ফরম্যাটেই টস ম্যাচের ফলাফলের অন্যতম নির্ণায়ক ফ্যাক্টর। পিচের কন্ডিশন, ফ্লাডলাইট, শিশির- একাধিক বিষয় বিবেচনা করে টসে জয়ী দল পছন্দ মত সিদ্ধান্ত নেন। টস ম্যাচের ফলাফলে একমাত্র ফ্যাক্টর না হলেও, টসে জয়ী দল যে এডভান্টেজ পায়, সেকথা বলার অবকাশ থাকে না। ম্যাচে দুই দলের শক্তি-সামর্থ্যের বিচারেই আসল ফলাফল হয়। তবে তাতে অন্যতম অনুঘটকের ভূমিকা পালন করে টস।
সেই কারণেই এবার হাফিজ জানাচ্ছেন, টসে কয়েন স্পিন করার সঙ্গেই তা মূলত ৫-১০ মিটার পর্যন্ত ওপরে ওঠে। সেই কারণেই সকলের কাছে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে স্পাইডার ক্যাম ব্যবহার করা যেতে পারে। টুইটারে হাফিজ সরাসরি নিজের মতামত জানিয়ে লিখেছেন, "স্পাইডার-ক্যাম প্রযুক্তি টসের প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা উচিত।" সেই সঙ্গে একটি ভিডিও-ও তিনি শেয়ার করেছেন।
চেন্নাইয়ের যে পিচে ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ হয়েছিল, সেই পিচেই খেলতে হয় পাকিস্তান-আফগানিস্তানকে। এতেই ক্ষুব্ধ হাফিজ প্ৰশ্ন তুলে দিয়েছেন, “পাকিস্তানকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ব্যবহৃত ট্র্যাকে খেলানো হচ্ছে। যে পিচে ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ খেলা হল, সেই পিচ এই ম্যাচের জন্য ফ্রি রাখা হয়েছিল। অন্য কোনও দলকে এমন পিচে খেলতে হবে না। সুনির্দিষ্ট কারণ নিয়ে এরকম করা হল।” সরাসরি হাফিজের অভিযোগ পাকিস্তান যাতে সেমিফাইনালে খেলতে না পারে, সেই জন্যই ইচ্ছাকৃতভাবে এমনটা করা হচ্ছে। এমনটাই অভিযোগ ছিল তাঁর।
নিউজিল্যান্ড বনাম বাংলাদেশ ম্যাচের আগে পাকিস্তানের পিটিভিতে হাফিজ জানিয়েছিলেন, “আগামীকালের ম্যাচে পিচের চরিত্রই নির্ধারণ করে দেবে টুর্নামেন্ট আইসিসি নাকি বিসিসিআই আয়োজন করছে। হায়দরাবাদ, দিল্লি এবং ধর্মশালা এখনও পর্যন্ত দুটো ম্যাচ আয়োজন করেছে। দুই ম্যাচেই এই সমস্ত ভেন্যুতে পিচের চরিত্র একই ছিল। যদি ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের পিচেই নিউজিল্যান্ড-বাংলাদেশ ম্যাচ খেলানো হয়, তাহলে সমস্যা নেই। তবে এর মধ্যে অল্পবিস্তর এদিক-ওদিক করা হলেই বুঝতে হবে কে টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে!”
যাইহোক, পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম সফল অলরাউন্ডার হাফিজ। জাতীয় দলের হয়ে তিনি ৫৫ টেস্ট, ২১৮ ওয়ানডে এবং ১১৯টি টি২০ খেলেছেন। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ১২ হাজারের ওপর আন্তর্জাতিক রান রয়েছে। করেছেন ২১টি শতরান-ও। তাঁর নামের পাশে রয়েছে ২৫৩টি আন্তর্জাতিক উইকেট।