দুঃস্বপ্নের বিশ্বকাপ অভিযানে নেমেছে পাকিস্তান। প্ৰথম ছয় ম্যাচের মধ্যে চারটেতেই হেরে বসে সেমিফাইনাল থেকে কার্যত ছিটকে গিয়েছে বাবর আজমের দল। মঙ্গলবার ইডেন গার্ডেন্সে বাংলাদেশের বিপক্ষে মহারণে নামছে মেন ইন গ্রিন-রা। দুই দলের জন্যই এই ম্যাচ ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তান হারলে যেমন সরকারিভাবে সেমিফাইনাল ওঠার দৌড় থেকে ছিটকে যাবে, তেমন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যোগ্যতা অর্জনের জন্য বাংলাদেশের জন্যও এই ম্যাচ জয় বিশাল গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তানে আয়োজিত হতে চলা ২০২৫-র চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের সেরা আট দল খেলবে। নবম এবং দশম স্থানে থাকা বাংলাদেশ এবং ইংল্যান্ডের অংশগ্রহণ নিয়ে ব্যাপক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
এমন আবহে কলকাতার ম্যাচ অতীব গুরুত্বপূর্ণ দুই দলের কাছে। তবে মঙ্গলবার ম্যাচে নামার আগে বেশ খোশমেজাজে রয়েছে পাকিস্তান। জানা যাচ্ছে, হোটেলে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের জন্য বরাদ্দ খাবার প্রত্যাখ্যান করেছেন বাবর আজমরা। বরং ফুড ডেলিভারি এপের সাহায্যে বাইরে খাবার অর্ডার করেছেন তারকারা।
স্পোর্টস টক-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোটেলের খাবার না খেয়ে জোম্যাটোর মাধ্যমে কলকাতার বিখ্যাত বিরিয়ানি অর্ডার করেছেন পাক তারকারা। সেই সঙ্গে চিকেন চাপ, ফিরনি, কাবাব এবং শাহি টুকদাও নিয়ে এসেছেন পাক তারকারা।
এমনিতেই পাক তারকারা বিশ্বকাপে খেলতে আসার পর থেকেই তাঁদের খাবারের মেন্যু বারবার শিরোনামে উঠে এসেছে। হায়দরাবাদে নাকি ডায়েটের তোয়াক্কা না করে বিরিয়ানি খেয়েছেন ইমাম-উল হকরা। হায়দরাবাদে এসে আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়েছিল পাক দল। হায়দরাবাদি বিরিয়ানিতে মজেছিলেন পাক তারকারা। অনেক পাক তারকা আবার করাচির বিরিয়ানির থেকেও হায়দরাবাদের বিরিয়ানিকে এগিয়ে রেখেছিলেন।
এমনকি হায়দরাবাদে জোড়া ওয়ার্ম আপ ম্যাচের পর হার হজম করতে হয় পাক দলকে। সেই সময় দলের হারের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শাদাব খান হর্ষ ভোগলেকে কিছুটা মজা করেই বলে দিয়েছিলেন, “আমরা প্রত্যেক দিনই হায়দরাবাদি বিরিয়ানি খাচ্ছি। এই কারণেই মাঠে হয়ত একটু স্লো হয়ে পড়ছি।”
হায়দরাবাদে টানা বিরিয়ানি খেয়ে ‘ক্লান্ত’ হয়ে পড়েছিলেন পাক তারকারা। এমনটাই একাধিক প্রচারমাধ্যমে বলা হয়েছিল এর আগে। নবভারত টাইমস-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, টানা বিরিয়ানি খেয়ে খেয়ে পাক তারকারা আপাতত আর বিরিয়ানি খেতে চাইছেন না। পাক দলের সঙ্গে আসা ম্যানেজার উমর ফারুখ কালসন জানিয়েছেন, সকলেই তাঁদের ‘আদর’ করে বিরিয়ানি খাওয়াচ্ছে। কালসন সাংবাদিকদের মজা করে বলেছেন, অনেক বিরিয়ানি খাওয়া হয়েছে। তাঁরা আপাতত চাপাতি খেতে চান।
ঘটনা হল, পাক তারকাদের এরকম বেহিসেবি ডায়েট ফিটনেসে থাবা বসিয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বয়ং ওয়াসিম আক্রম। তিনি বাবরদের শোচনীয় পারফরম্যান্সের পর ফিটনেস ইস্যুতে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, "পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের ফিটনেস লেভেল দেখো! আগেই বলেছি, গত দুই বছর ধরে কোনও ফিটনেস টেস্ট-ই নেওয়া হয়নি জাতীয় দলের প্লেয়ারদের। মুখ ফুলে গিয়েছে। মনে হচ্ছে রোজ আট-আট কিলো নেহারি, খেয়েই ওঁদের এই দশা।”
সবমিলিয়ে ফের একবার কলকাতায় এসে বিরিয়ানির লোভে ডায়েট ভুললেন পাকিস্তানি তারকারা। তা-ও আবার এরকম শোচনীয় পরিস্থিতি স্বত্ত্বেও।