নিউজিল্যান্ড: ৪০১/৬
পাকিস্তান: ২০০/১ (২৫.৩ ওভার)
অবিশ্বাস্য থ্রিলার। ৪০০ রানের টার্গেট। বৃষ্টি। ফের খেলা। পরিমার্জিত টার্গেট। ডিআরএস। তাতেই পাকিস্তান অবিশ্বাস্যভাবে জিতে সেমিফাইনালের সম্ভবনা বাঁচিয়ে রাখল। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৪০২ রানের পাহাড়-টার্গেটের মুখে পাকিস্তান জিতে গেল কিছুটা ভাগ্য। এবং বেশিরভাগটা ফখর জামানের সাইক্লোন ব্যাটে ভর করে। হারলেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায়। এমন ডু অর ডাই পরিস্থিতিতে জিতে সেমিফাইনালের দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে গেল পাকিস্তান।
বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল-ই। তাই স্কোরবোর্ডে ৪০২ রানের টার্গেট দেখেও ডরায়নি পাকিস্তান। আর বেঙ্গালুরুর ব্যাটিং স্বর্গের পিচে তুফানি ইনিংস খেলে গেলেন ফখর জামান। টিম সাউদি আব্দুল্লা শফিককে মাত্র ৪ রানে ফিরিয়ে দিয়ে ধাক্কা দেন পাক দলকে।
এরপরে গোটা ম্যাচ হয়ে দাঁড়ায় ফখর জামান শো। ইশ সোধি, কাইল জেমিসন, ট্রেন্ট বোল্টদের ছাতু করে মাত্র ৬৩ বলে শতরান পূর্ণ করে যান তিনি। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এটাই কোনও পাক ব্যাটসম্যানের দ্রুততম সেঞ্চুরি।
ফখর জামানের সঙ্গে অবিশ্বাস্য টার্গেটের লক্ষ্যে সঙ্গ দিচ্ছিলেন ক্যাপ্টেন বাবর আজম-ও। দুজনে দ্বিতীয় উইকেটে ১৯৪ রানের টর্নেডো পার্টনারশিপে ঝড় তোলেন।
পাকিস্তান ইনিংসের মাঝপথেই বৃষ্টি নামে। এক ঘন্টার বেশি সময় ম্যাচ বন্ধ থাকার পর পুনরায় খেলা চালু হয়। ডিএলএস পদ্ধতিতে পাকিস্তানের জয়ের জন্য নতুন টার্গেট দাঁড়ায় ৪১ওভারে ৩৪২ রান। সেই সময় পাকিস্তানের স্কোর ছিল ২১.৩ ওভারে ১৬০/১। নতুন টার্গেট অনুযায়ী পাকিস্তানকে তুলতে হত ১৯.৩ ওভারে আরও ১৮২ রান। আগের ছন্দ বজায় রেখেই পাকিস্তান রান তুলতে থাকে। ২৫.৩ ওভারের মাথায় ফেলে একবার বৃষ্টি নামে। এরপরে আর ম্যাচ চালু করা যায়নি। কাট অফ টাইম পেরিয়ে গেলে ডিএলএস পদ্ধতিতে ম্যাচের জয়ী ঘোষণা করা হয় পাকিস্তানকে। বৃষ্টিতে ম্যাচ বন্ধ হওয়ার সময় প্রয়োজনীয় রানের তুলনায় ১০ রান এগিয়ে ছিল পাক দল।
শেষ ল্যাপে সেমিফাইনালের দৌড় নাটকের রূপ নিয়েছে। সেই সেমির দৌড়েই এদিন মশলা মাখিয়ে দুরন্ত শতরান হাঁকিয়ে গিয়েছিলেন রচিন রবীন্দ্র। পাকিস্তান টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। প্ৰথম থেকেই চিন্নাস্বামীতে রানের বন্যা ছুটিয়ে দিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। ডেভন কনওয়ের সঙ্গে ওপেন করতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল রচিন রবীন্দ্রকে। প্ৰথম থেকেই কিউই ওপেনাররা চড়াও হয়েছিলেন পাক পেসারদের ওপর। কনওয়ে (৩৫) আউট হয়ে যান। হাসান আলির বলে উইকেটকিপার মহম্মদ রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন কনওয়ে। তবে ক্যাপ্টেন কেন উইলিয়ামসন এবং রচিন রবীন্দ্র দ্বিতীয় উইকেটে পাকিস্তানকে আরও ব্যাকফুটে ঠেলে দেয়।
রচিন রবীন্দ্র ২০তম ওভারে চলতি বিশ্বকাপের তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি করে যান। আর ৩৪ ওভারের মাথায় রবীন্দ্র তৃতীয় শতরান-ও পূর্ণ করে নেন। তবে এরপরেই উইলিয়ামসন রানের গতি বাড়াতে গিয়ে আউট হয়ে যান ব্যক্তিগত ৯৫ রানের মাথায়। রচিন রবীন্দ্র-ও ১০৮ করে মহম্মদ ওয়াসিমের বলে প্যাভিলিয়নে ফেরেন।
এরপরে পাকিস্তান নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারালেও রানের গতি কমেনি। ড্যারেল মিচেল (১৮ বলে ২৯), মার্ক চ্যাপম্যান (২৭ বলে ৩৯), গ্লেন ফিলিপস (২৫ বলে ৪১) মিচেল স্যান্টনার (১৭ বলে ২৬) সকলেই মিলিত প্রচেষ্টায় দলকে ৪০০-র গন্ডি পের করে দেন।