বাবর আজম এন্ড কোং এখন পাকিস্তানে তীব্র ধিকৃত। চেন্নাইয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৮ উইকেটে হারের পর পাকিস্তান কার্যত জ্বলছে। সেমিফাইনালে পৌঁছনোর আগেই ছিটকে যাওয়ার সংশয় তৈরি হয়েছে পাকিস্তানের টানা হারে।
শোয়েব আখতার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে বলে দিয়েছেন, "এই পারফরম্যান্স দেখার পর আর বলার কিছু থাকে না। ঈশ্বরের দোহাই সঠিক ব্যক্তিকে সঠিক জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হোক। যে কেউ বোর্ডে চেয়ারম্যান হয়ে যাচ্ছেন। আর কতদিন এত মধ্যমেধাকে সমর্থন করে যেতে হবে? গড়পড়তা ব্যক্তিদের বড় বড় পদে বসালে এরকম হতাশাজনক পারফরম্যান্স-ই দেখতে হবে আমাদের।"
"টিভিতে যা দেখানো হচ্ছে, সেটাই পিসিবির সঠিক প্রতিচ্ছবি। গত ২০-৩০ বছর ধরে ক্রিকেটে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এটা তাঁর প্রতিফলন। এটাই আমাদের শেষ পর্যায়ের ফলাফল।"
আরও পড়ুন: ছক্কা মারার জন্য আরও প্রোটিন চাই! ভারতে এসে পাকিস্তানের ডায়েট নিয়ে বিস্ফোরক ইমাম
শোয়েব বলছেন, বর্তমান পাক জাতীয় দলে এমন কোনও ক্রিকেটার নেই, যাতে ভবিষ্যতে কেউ ক্রিকেট খেলার জন্য অনুপ্রাণিত হতে পারে। "জাস্ট আমাকে একটা কথা বলা হোক, এই দলে কি কোনও অনুপ্রেরণা জোগানোর মত ক্রিকেটার রয়েছে? আমি ওয়াকার ইউনিস, ওয়াসিম আক্রম, ইমরান খান, স্টিভ ওয়া, আলান বর্ডার, ভিভ রিচার্ডসের মত ক্রিকেটারদের দেখে বেড়ে উঠেছি। বর্তমান পাক দলে এমন কে রয়েছে যাঁকে দেখে শিশুরা ক্রিকেট খেলতে চাইবে? কেন মানুষ এখনও আমাদের ভিডিও দেখে, কারণ আমরা একটা গোটা প্রজন্মকে উৎসাহিত করেছি।"
"আমি পাকিস্তানের হয়ে খেলেছি। আমার হৃদয় থেকে রক্ত ঝড়ে পড়ছে। তবে পাকিস্তানকে সমর্থন চালিয়ে যাব। যদি এখন বাবরের কাছে থাকতাম ওঁকে নেতৃত্ব ছাড়ার পরামর্শ দিতাম। এর থেকে আর খারাপ আর কিছুই হতে পারে না। আমরা আর চার দলের বিপক্ষে খেলব। ওঁদের-ও জিততে সাহায্য করব আমরা।"
"ও (বাবর) যদি এখন আমার ভিডিও দেখে, বলব, ছেড়ে দাও। গোটা সিস্টেমটাই ভেঙে পড়েছে। সঠিক ক্রিকেটারদের খেলানো হোক। ফখর জামানকে দলে ঢুকিয়ে আগ্রাসী খেলার লাইসেন্স দেওয়া হোক। জামান খানকে ফেরানো হোক। অন্য অপশন খোঁজার প্রচেষ্টা জারি থাকুক। আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে হবে। বাবরকে ১২০ স্ট্রাইক রেট নিয়ে ব্যাট করতে হবে। পাক ব্যাটাররা ৮০-৯০ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করছে। গুরবাজ ১২২ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করে গেল। পাকিস্তান প্রত্যেক ম্যাচে দেড়শো ডট বল খেলে। আমরা ভীষণ আতঙ্কিত।"
শোয়েব মনে করছে আসন্ন চার ম্যাচে পাকিস্তান এখনও ভাল পারফরম্যান্স করতে পারে। তবে বাবরকে নিয়ে খোলামেলা তিনি, "ওঁর কি সেই সাহস, স্ট্যামিনা রয়েছে? ওঁর কি সেই পর্যায়ে দক্ষতা রয়েছে? ও কি ১৯৯২-এর ইমরান খান হয়ে উঠতে পারবে? শাহিন কি ওয়াসিম আক্রম হতে পারবে? হ্যারিস রউফ কি আকিব জাভেদের পারফরম্যান্স উপহার দিতে পারবে? শাদাব খান কি মুস্তাক আহমেদ হবে? এই দল কি আর পারবে? এই দলের ওপর আমার বিশ্বাস রয়েছে। তবে ওঁদের কি রয়েছে? ঈশ্বর-ই জানেন।"
পরিণত ক্রিকেট উপহার দেওয়ার জন্য আফগানিস্তানকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন পাকিস্তানের স্পিড মেশিন। "আফগানিস্তানকে অনেক শুভেচ্ছা। ওঁরা আমাদের ভাইয়ের মত। আমরা নিজেদের ভাইয়ের কাছে হেরেছি। এটা একদম ঠিক হয়েছে। জাদরান, গুরবাজদের জন্য ভালো লাগছে। অবশেষে ওঁরা পরিণতিবোধ দেখিয়েছে, যেটা ভীষণ প্রয়োজন ছিল। মিডল ওভারে ওঁরা সময় নিয়ে ব্যাট করেছে। ওঁদের ম্যানেজমেন্ট টিমকেও কুর্নিশ। অজয় জাদেজা এবং জোনাথন ট্রট ওঁদের ভালভাবে প্ল্যানিং করতে সাহায্য করেছে।"
"শেষ ৫০ বছরে আফগানিস্তানকে দেখো। ওঁদের ক্রিকেটের পরিকাঠামো নেই। কোনও প্ৰথম শ্রেণির ক্রিকেটই হয় না। গত কয়েক বছরে ওঁদের জন্য সময় ভীষণ খারাপ গিয়েছে। তবে নিজেদের প্রমাণ করেই আফগানিস্তান পাকিস্তানকে হারিয়েছে। ওঁরা পাকিস্তানকে শিখিয়ে দিল কীভাবে ক্রিকেট খেলতে হয়। ওয়েল ডান আফগানিস্তান!"