দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচ অনভিপ্রেত ঘটনার সাক্ষী থাকল। বিতর্কিতভাবে টাইম আউট হতে হল এঞ্জেলো ম্যাথিউসকে। শ্রীলঙ্কার পঞ্চম উইকেটের পতনের পর ম্যাথিউস ক্রিজে নামতে দেরি করেছিলেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বল ফেস করেননি। বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা আউটের আবেদন জানালে, আম্পায়ারও নিয়ম মেনে আউট দিয়ে দেন।
আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, কোনও উইকেট পতনের পর নতুম ব্যাটসম্যানকে ৩ মিনিটের মধ্যে ক্রিজে স্ট্যান্স নিতে হবে। আর এই সময়ের মধ্যে ক্রিজে পৌঁছতে ব্যর্থ হলে সংস্লিষ্ট ব্যাটারকে আউট বলে ঘোষণা করা হবে। তবে এই আউটের জন্য বিপক্ষ দলকে আউটের জন্য আম্পায়ারের কাছে আবেদন করতে হবে। নিয়ম অনুযায়ী, এই উইকেট কোনও বোলারের শিকার বলে গণ্য হবে না।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এঞ্জেলো ম্যাথিউস প্ৰথম ব্যাটার যিনি এই আউটের শিকার হলেন। তিনি ক্রিজে নেমেও কোনও বল ফেস না করেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন।
কেন ক্রিজে নামতে দেরি করলেন তিনি? জানা যাচ্ছে হেলমেটের স্ট্র্যাপ নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল ম্যাথিউজের। তাই ক্রিজে নেমেও সময়মত ব্যাট ধরতে পারেননি। আম্পায়ার আউট ঘোষণা করার পর ম্যাথিউসকে দেখা যায় আম্পায়ারের সঙ্গে রীতিমতো তর্ক জুড়ে দিতে। তিনি নিজের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছিলেন। তবে নিয়ম অনুযায়ী নিরুপায় আম্পায়ারও।
ধারাভাষ্যকাররা জানিয়েছেন, ক্যাপ্টেন সাকিব আল হাসান এই আউটের জন্য আবেদন করেন। ম্যাথিউসকে আউট ঘোষণা করার পর চাইলেই আউট প্রত্যাহার করতে পারতেন সাকিব। তবে তিনি তা করেননি। বিতর্কিতভাবে শিরোনামে থাকাই শ্রেয় মনে করেছেন।
২৫তম ওভারে সমরাবিক্রমা আউট হওয়ার পর মাঠে নামেন ম্যাথিউজ। জানা যাচ্ছে, খারাপ হেলমেটের কারণে ব্যাট করতে দ্বিধা করছিলেন ম্যাথিউস। চোট লাগার আশঙ্কা ছিল তাঁর। নতুন করে হেলমেট আনার নির্দেশ দেন। সাজঘর থেকে নতুন হেলমেট আসার সময়ের ফায়দা নেন সাকিব। তিনি আউটের দাবি করেন। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে যা খেলার স্পিরিটের পরিপন্থী।
সেই বিতর্কিত ওভারে বল করছিলেন সাকিব নিজেই। আম্পায়ারের পাশাপাশি ম্যাথিউজ তাঁকেও বোঝানোর চেষ্টা করেন। তবে বাংলাদেশি ক্যাপ্টেন কর্ণপাত করেননি। রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে মাঠ ছাড়তে হয় ম্যাথিউজকে।
গৌতম গম্ভীর টুইটারে সাকিবকে একহাত নিয়ে লিখে দিয়েছেন, "দিল্লিতে যা ঘটল তা একদমই জঘন্য।" টিম ইন্ডিয়ার হয়ে খেলা প্রাক্তন তারকা এস বদ্রিনাথ লিখেছেন, "আমি যদি সাকিব হতাম, তাহলে এরকম আউটের জন্য আবেদন করতাম-ই না। আর আমি ম্যাথিউজ হলে একটার জায়গায় একাধিক হেলমেট ভাঙতাম।"
টসে জিতে শ্রীলঙ্কাকে প্ৰথমে ব্যাট করতে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। আর প্ৰথম ওভারেই কুশল পেরেরা আউট হয়ে যান শরিফুল ইসলামের বলে। দ্বিতীয় উইকেটে ওপেনার পাথুম নিশঙ্কা এবং কুশল মেন্ডিস ৬১ রান যোগ করেন। তবে কুশল মেন্ডিস এবং নিশঙ্কা পরপর দু-ওভারে আউট হয়ে যাওয়ার পর শ্রীলঙ্কা একসময় ৭২/৩ হয়ে গিয়েছিল।
সেখান থেকে লঙ্কান ব্যাটিংয়ের উদ্ধারকার্য চালিয়ে যান চরিত আশালঙ্কা এবং সমরাবিক্রমা। দুজনে চতুর্থ উইকেটে ৬৩ রান সংযোজন করেন। বিতর্কিত অধ্যায় মুছে শেষপর্যন্ত চরিত আশালঙ্কার সেঞ্চুরিতে ভর করে শ্রীলঙ্কা স্কোরবোর্ডে ২৭৯ তুলেছে। শেষদিকে ধনঞ্জয় ডিসিলভা এবং থিকসানা ব্যাট হাতে অবদান রাখেন।