দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে বিতর্কের ফোয়ারা ছোটালেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট সম্পর্ক নতুনভাবে নিচে নেমে গেল। এতটাই যে ম্যাচ শেষে দুই দলের ক্রিকেটাররা সৌজন্যমূলক করমর্দন পর্যন্ত করলেন না।
টাইম আউট বিতর্ক নিয়ে গোটা ক্রিকেট বিশ্ব আপাতত সাকিব আল হাসানকে খলনায়ক বানিয়ে দিয়েছে। নিয়ম রয়েছে। তবে ক্রিকেটের স্পিরিট বলেও তো এক বস্তু রয়েছে নাকি! ক্রিজে ম্যাথিউস নামার সঙ্গেই সাকিব অদ্ভুত নিয়মের মধ্যে আউটের আবেদন করেন। যাতে নিয়ম মেনে আম্পায়ার আউট-ও দিয়ে দেন। স্কোরবোর্ডে শ্রীলঙ্কা এরপরেও ২৮৬ তুলল। তবে ম্যাথিউস থাকলে আরও বড় রানের টার্গেট চেজ করতে হতে পারত বাংলাদেশকে। তিন উইকেট হাতে নিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছেও গেল বাংলাদেশ।
ম্যাচের পর সাকিবকে তুলোধোনা করেছেন এঞ্জেলো ম্যাথিউস। বলে দিয়েছেন, "একদমই লজ্জার ব্যাপার। আমরা সকলেই জেতার জন্য খেলতে নামি। কিন্তু কখনই ভাবিনা একজন ক্রিকেটার কাউকে আউট করার জন্য এতটাও নিচে নামবেন। আমি কোনও কিছুই ভুল করিনি। নির্দিষ্ট সময়ে ক্রিজে পৌঁছেছিলাম। খেলার সরঞ্জামে ত্রুটি ছিল। আমি সময় অপচয় করছিলাম না। অবৈধভাবে সুবিধা আদায় করতে চাইনি। সাধারণ বিচার বুদ্ধি থাকা দরকার।"
সাকিব তো বটেই আম্পায়ারদেরও একহাত নিয়েছেন শ্রীলঙ্কার তারকা অলরাউন্ডার। বলে দিয়েছেন, "আমাদের কাছে ভিডিও প্রমাণ রয়েছে যে ক্রিজে পৌঁছে নির্ধারিত দু-মিনিট সময়ের শেষ পাঁচ সেকেন্ডে ব্যাটিং স্ট্যান্স নিয়েছিলাম। এরকম কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আম্পায়াররা আরও একবার ভালোভাবে খতিয়ে দেখতে পারতেন।"
ম্যাচের পর বাংলাদেশ দলের সঙ্গে করমর্দনের পথে হাঁটেনি শ্রীলঙ্কা। আগেই নাগিন ড্যান্স ইস্যুতে দুই দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে তিক্ততা ছিল। সেই খারাপ সম্পর্ক সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছল ম্যাথিউসের আউট ঘিরে। ম্যাচে সাকিবকে আউট করে প্রতিশোধও নেন ম্যাথিউস। আগ্রাসীভাবে সেন্ড অফ দেন তিনি বাংলাদেশি ক্যাপ্টেনকে। নিজের হাতে অদৃশ্য সময়-ঘড়ির দিকে ইঙ্গিত করে ম্যাথিউস বলতে থাকেন, 'প্যাভিলিয়নে ফেরার সময় হয়েছে।'
ম্যাথিউস ম্যাচের পর তীব্রভাবে আক্রমণ করেছেন সাকিবকে। "গোটা খেলাটাকে কুখ্যাত করে দিল সাকিব। এই আউট মানকাডিং বা অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড-এর থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আইসিসি নিয়মে বিশদে এসব ব্যাখ্যা করা হয়েছে। নন স্ট্রাইকার যদি ক্রিজের বাইরে থাকে, তাহলে তাঁকে রান-আউট করা যেতে পারে। যদি কোনও ব্যাটসম্যান স্ট্যাম্পে বল লাগা থেকে বাধা হয়ে দাঁড়ান, তাহলে তাঁকে আউট ঘোষণা করা হতে পারে।"
"তবে এটা সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। আমরা তাঁদেরই সম্মান জানাই, যাঁরা আমাদের সম্মান দেয়। আমরা সকলেই খেলার প্রতিনিধি। আজকের দিন পর্যন্ত সাকিবের জন্য আমার পুরোপুরি শ্রদ্ধা ছিল। নিজের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার পুরোপুরি অধিকার ছিল ওঁর। তবে ও করেনি।" বলেছেন ম্যাথিউস।
এর আগে যখনই দুই দল মুখোমুখি হয়েছে, ক্রিকেট মাঠে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। দুই দলই একে অন্যের বিপক্ষে জয় সেলিব্রেট করে নাগিন ড্যান্স-এ। দুই দল পরস্পরকে মাঠেই খোঁচা দেয়।
ম্যাথিউস একহাত নিয়ে বলছেন, "বাংলাদেশের জায়গায় অন্য দল হলে মোটেই এভাবে মোটেই আউট করত না।"