ভারত: ৩২৬/৫
দক্ষিণ আফ্রিকা ৮৩/১০
লিগ টেবিলের এক এবং দুই নম্বর দলের লড়াই। একটা জয়েই নিশ্চিত হয়ে যাবে টেবিল টপার কোন দল হবে। ভাবা হয়েছিল সেয়ানে সেয়ানে টক্কর হবে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সাক্ষী থাকবে ইডেন গার্ডেন্স। তবে ভারতের কাছে কার্যত দাঁড়াতেই পারল না দক্ষিণ আফ্রিকা। টুর্নামেন্টের সমস্ত দল যেমনভাবে অসহায়ভাবে আত্মসমর্পণ করেছে। সেই ট্র্যাডিশনই বজায় রাখল দক্ষিণ আফ্রিকা।
কোহলির শচীন ছোঁয়া শতরানে ভর করে ভারত স্কোরবোর্ডে ৩২৬ তুলেছিল। সেই রান চেজ করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা মুখ থুবড়ে পড়ল। মহম্মদ শামি, সিরাজ, বুমরারা অপ্রতিরোধ্য। সেই সঙ্গে কুলদীপ-জাদেজার ঘূর্ণি। ভারতের পারফেক্ট বোলিং আক্রমণের যাঁতাকলে দমবন্ধ হয়ে গেল এমন ব্যাটাররা যাঁরা গোটা টুর্নামেন্ট জুড়ে রানের বন্যা ছুটিয়েছেন।
কুইন্টন ডিকক চার-চারটে শতরান হাঁকিয়ে ফেলেছেন। ভ্যান দার ডুসেন, হেনরিখ ক্ল্যাসেন, মিলাররা প্রতিপক্ষ বোলারদের কাছে সাক্ষাৎ ত্রাস হিসাবে আবির্ভূত হয়েছেন এতদিন। তবে বুমরা-সিরাজ-জাদেজাদের সামনে হাঁটু গেড়ে বসতে বাধ্য হলেন প্রোটিয়াজ বিধ্বংসী ব্যাটিং লাইনআপ।
প্রথম পাওয়ার প্লে-তেই দক্ষিণ আফ্রিকা ৩৫/৩ হয়ে গিয়ে স্রেফ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। ডিকক, বাভুমা, মারক্রামকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন সিরাজ, জাদেজা, শামি। মাত্র ৫ রানে ইন-ফর্ম ব্যাটার ডিকক সিরাজের লাইন পড়তে না পেরে স্ট্যাম্পে বল টেনে এনেছিলেন। স্বপ্নের ডেলিভারিতে জাদেজা এরপরে ফেরান ক্যাপ্টেন বাভুমাকে। এরপরে ওয়ান চেঞ্জে বোলিং করতে এসে শামিও ফিরিয়ে দেন মারক্রামকে। ৩ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি ভারতকে। সময় যত এগিয়েছে ততই দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটিং নতজানু হয়েছে ভারতীয় বোলিংয়ের শ্রেষ্ঠত্বের কাছে।
শামি-জাদেজা এরপরে তুখোড় ফর্মে থাকা রাসি ভ্যান দার ডুসেন, হেনরিখ ক্ল্যাসেনকে ফেরানোর পর ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা ১৩.১ ওভার শেষে ৪০/৫ হয়ে দাঁড়ায়। এরপরে ম্যাচ কতদূর টানতে পারেন প্রোটিয়াজরা, সেটাই দেখার হয়ে দাঁড়ায়। শেষমেশ দক্ষিণ আফ্রিকা খতম হয়ে যায় ৮৩ রানে। ভারতের জয় ২৪৩ রানের বিশাল ব্যবধানে। রবীন্দ্র জাদেজা রবিবারের ইডেনে পাঁচ উইকেট শিকার করলেন। কুলদীপ যাদব এবং মহম্মদ শামি নিলেন দুটো করে উইকেট।
তার আগে রবিবার আগুনে মেজাজে শুরু করেছিল টিম ইন্ডিয়া। রোহিত শর্মা-শুভমান গিলের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের কোনও উত্তরই খুঁজে পাচ্ছিলেন না দক্ষিণ আফ্রিকান বোলাররা। মাত্র ৪.৩ ওভারেই স্কোরবোর্ডে ৫০ তুলে দেয় ভারত। ওপেনিং পার্টনারশিপের ৬২ রানের মধ্যে ৪০ রান একাই করে যান রোহিত। নিজের আগ্রাসী ইনিংসে রোহিত হাফডজন বাউন্ডারির পাশাপাশি জোড়া ছক্কাও হাঁকিয়ে যান। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা তুমুলভাবে ম্যাচে ফেরে। দুই ওপেনার-ই অল্প রানের ব্যবধানে আউট হয়ে যান।
রোহিত শর্মাকে ফেরান কাগিসো রাবাদা। নিজের প্ৰথম ওভারেই রাবাদার বলে মিড অফের ওপর দিয়ে হাঁকাতে গিয়ে ক্যাপ্টেন বাভুমার হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন। গিলকে স্বপ্নের ডেলিভারিতে আউট করেন কেশব মহারাজ।
এরপরে ইডেন পুরোটাই কোহলি-ময়। শ্রেয়স আইয়ারের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে কোহলি ১৩৪ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলের বড় রানের মঞ্চ গড়ে দেন। শ্রেয়স আইয়ার ৮৭ বলে ৭৭ করে ফেরেন। সূর্যকুমার যাদব এবং রবীন্দ্র জাদেজা যথাক্রমে ২২ এবং ২৯ করে দলকে ৩২৬ পর্যন্ত পৌঁছে দেন। কোহলি ১২১ বলে ১০১ রানে অপরাজিত থেকে যান।