মহম্মদ শামি বল হাতে ঝলসে দিচ্ছেন প্রতিপক্ষকে নিয়ম করে। বিশ্বকাপে মাত্র তিনটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন। আর তিনটে ম্যাচেই বারুদে পারফরম্যান্স করে ফেলেছেন তিনি। মাত্র তিন ম্যাচেই ১৪ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারিদের তালিকায় চলে এসেছেন।
শামি বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করেন ধর্মশালায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। প্ৰথম ম্যাচেই পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তিনি।।তারপর ইংল্যান্ড ম্যাচে তাঁর শিকার চার জন। সর্বশেষ শামি ধ্বংস করলেন শ্রীলঙ্কাকে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ান চেঞ্জে বোলিং করতে এসেছিলেন। যখন ইতিমধ্যেই সিরাজ-বুমরা লঙ্কান টপ অর্ডারে ধস নামিয়ে ফেলেছিলেন। চার উইকেট পতনের পর শামি বোলিং করতে আসেন। আর শেষ ছয় উইকেটের মধ্যেই শামির শিকার ৫ জন। বিশ্বকাপের ইতিহাসে ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারিদের তালিকায় তিনি আপাতত এক নম্বর।
মহম্মদ শামির এমন আগুনে পারফরম্যান্সের পরে নতুন বিতর্ক চালু করে দিয়েছে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের প্রচারমাধ্যম। শামির পারফরম্যান্স নয়, বরং শামির ধর্মীয় পরিচিতি ঘিরেই নতুন করে উস্কানিমূলক সংবাদ পরিবেশন করে চলেছে পাক এবং বাংলাদেশের প্রচারমাধ্যম।
শামি পাঁচ উইকেট শিকার কমপ্লিট করার পরেই মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন। তারপর মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে সর্বশক্তিমানের উদ্দেশ্যে প্রার্থনায় রত হতে যাচ্ছিলেন তিনি। তবে শেষ মুহূর্তে মাটিতে মাথা ঠেকাননি তিনি। পাক সংবাদমাধ্যমের ব্যাখ্যা, ভারতীয় দর্শকদের কাছে সমর্থন হারিয়ে ফেলার ভয়েই নাকি শামি সিজদা আদায় করা থেকে বিরত থেকেছেন।
পাকিস্তানের জিও সুপার টিভির অনলাইন-এ শিরোনাম করা হয়েছে, 'দেখুন মহম্মদ শামি কীভাবে পাঁচ উইকেট শিকারের পর সিজদা পালন করা থেকে বিরত থাকলেন!' 'দুনিয়া নিউজ'-এ বলা হয়েছে, 'কেন শেষ মুহূর্তে শামি সিজদা পালন করলেন না!' একইভাবে 'ক্রিকেট পাকিস্তান', 'সামা টিভি'-তে এই নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন লেখা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রচারমাধ্যমও পিছিয়ে নেই ধর্মীয় উস্কানিমূলক সংবাদ প্রচারে। জিও স্পোর্টস-এ লেখা হয়েছে শামি এমন একটা দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন যাঁদের ইসলাম-বিদ্বেষী মনোভাবের ইতিহাস বহু পুরোনো।
ধর্মীয় ইস্যুতে শামির সঙ্গে বিতর্ক অবশ্য নতুন কিছু নয়। টি২০ ওয়ার্ল্ড কাপে ভারত পাকিস্তানের কাছে হেরে যাওয়ার পর অনলাইন ট্রোলিংয়ের শিকার হয়েছিলেন শামি। তারকা পেসারের পাশে সেই সময় কোহলি থেকে টিম ইন্ডিয়ার অনেক সতীর্থই দাঁড়িয়েছিলেন।