সেমিফাইনালে পৌঁছনোর সমীকরণে বড়সড় ধাক্কা হজম করল পাকিস্তান। সোমবার আফগানিস্তানের কাছেও হারতে হল পাকিস্তানকে। আর হারের হ্যাটট্রিকে পাকিস্তানের সেমিতে পৌঁছনোর সম্ভবনা অনেকটাই ক্ষীণ হয়ে গেল। প্ৰথমে ব্যাটিং করতে নেমে বাবর আজম (৭৪) এবং আব্দুল্লা শফিকের (৫৮) হাফসেঞ্চুরিতে ভর করে পাকিস্তান স্কোরবোর্ডে ২৮২ রান খাড়া করেছিল। তবে এই রান চেজ করতে কার্যত কোনও সমস্যাতেই পড়তে হয়নি আফগান ব্যাটারদের। এক ওভার এবং আট উইকেট হাতে নিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় আফগানিস্তান।
আর পাকিস্তানের টানা হারে আপাতত ওয়াঘার ওপারে উত্তপ্ত পরিস্থিতি। প্রাক্তন অধিনায়করা একহাত নিচ্ছেন বাবর আজম এন্ড কোং-কে। পাকিস্তানি তারকাদের ফিটনেস লেভেল নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়করা।
ওয়াসিম আক্রম কোনও রাখঢাক না করেই পাক দলকে একহাত নিয়েছেন। পাক চ্যানেল এ স্পোর্টস-এ বিশ্বকাপের এক প্যানেল ডিসকাশনে তিনি বলে দিয়েছেন, "খুব লজ্জাজনক হারের মুখে পড়তে হল। স্রেফ পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের ফিটনেস লেভেল দেখো! আগেই বলেছি, গত দুই বছর ধরে কোনও ফিটনেস টেস্ট-ই নেওয়া হয়নি জাতীয় দলের প্লেয়ারদের। মুখ ফুলে গিয়েছে। মনে হচ্ছে রোজ আট-আট কিলো নেহারি, খেয়েই ওঁদের এই দশা।"
এখানেই না থেমে আক্রম আরও বলেছেন, "ওঁরা পেশাদারি ক্রিকেটার। ফিটনেসের নূন্যতম একটা মানদণ্ড থাকতেই হবে। মিসবাহ কোচ থাকার সময় ফিটনেস বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। এই কারণে প্লেয়াররা ওঁকে পছন্দ করত না। তবে এতে কিন্তু ফলাফল মিলেছিল। ফিল্ডিং পুরোটাই ফিটনেস কেন্দ্রিক। এই জায়গাতেই আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি।"
আফগানিস্তানের বিপক্ষে শোচনীয় ফিল্ডিংয়ের নমুনা তুলে ধরেছে। বাউন্ডারি লাইনের ধারে মিসফিল্ড তো বটেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্যাচ মিসের বহর লজ্জা দেবে যে কোনও ছোট ক্রিকেট খেলিয়ে দেশকেও।
অন্য এক পাক অধিনায়ক মঈন খান সেই অনুষ্ঠানেই তুলে ধরেছেন কীভাবে কোনও প্ল্যানিং ছাড়াই ওয়ার্ল্ড কাপে অংশ নিচ্ছে পাকিস্তান, "তিন মাস ধরে আমরা শ্রীলঙ্কায় খেললাম। আমাদের প্লেয়াররা নিঃশেষিত হয়ে পড়ল। মাঠে ওঁদের দেখেই বোঝা যাচ্ছিল ওঁরা ভীষণভাবে ক্লান্ত এবং অলস। কেউই ঠিক করে ফিল্ডিং করতে পারছিল না। এর প্রধান কারণই হল বিশ্বকাপের ঠিক আগে শ্রীলঙ্কায় সিরিজ খেলতে যাওয়া যেখানে প্লেয়াররা ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল।"
আরও পড়ুন: ছক্কা মারার জন্য আরও প্রোটিন চাই! ভারতে এসে পাকিস্তানের ডায়েট নিয়ে বিস্ফোরক ইমাম
শোয়েব মালিক আবার পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত কীর্তি অর্জনের আকাঙ্খাকে একহাত নিয়েছেন। এ স্পোর্টস-এর আলোচনায় শোয়েব এই বিষয়টি তুলে ধরেছেন।
২০২১-এ টি২০ ওয়ার্ল্ড কাপের ঠিক এক মাস আগে হেড কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ান মিসবাহ উল হক। তিনি সেই অনুষ্ঠানে সরব হয়েছেন পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণের ধার নিয়ে। "এটা স্পষ্ট যে আফগানিস্তানের স্পিন বোলিংয়ের কোয়ালিটি পাকিস্তানের থেকে অনেক উচ্চমানের। আমাদের ব্যাটারদের রান করতে পরিশ্রম করতে হয়েছিল। আর আমাদের স্পিনারদের বিপক্ষে ওঁরা সহজেই রান তুলে গেল। এটা পুরোটাই আত্মবিশ্বাস, সক্ষমতার ব্যাপার। ওঁদের কোনও ডেলিভারিই সহজ ছিল না। রশিদ খান এদিন উইকেট পায়নি, তবে ওঁর বোলিংয়ে সবসময়েই মনে হচ্ছিল কিছু হতে পারে!" বলে দিয়েছেন মিসবাহ উল হক।