ক্রিকেটে সবথেকে বেশি ঝুঁকি বয়ে আনতে পারে ক্রিকেট বল। এমনটাই মনে করছে আইসিসি। কিছুদিন আগেই বলে থুতু লাগানো নিয়ম করে বন্ধ করা হয়েছে। এবারে করোনা পরবর্তী সময়ে বল কীভাবে 'ব্যবহার' করতে হবে, তা নিয়ে নির্দেশিকা জারি করলো ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা।
বল ম্যানেজমেন্ট:
বল থেকে ঝুঁকি এড়ানোর জন্য আম্পায়ার থেকে ক্রিকেটারদের বেশ কিছু গাইডলাইন মেনে চলতে হবে। যেমন, বলে লালা তো লাগানো যাবেই না, সেই সঙ্গে আম্পায়ারদের গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে। বল স্পর্শ করার পর কোনো ক্রিকেটার মুখ, চোখ ছুঁতে পারবেন না। বল ছোঁয়ার পর প্রতি ওভারের মাঝে স্যানিটাইজার দিতে হাত ধুতে হবে। সবথেকে বড় বিষয় হল, ক্রিকেটারদের নিজস্ব সানগ্লাস, সোয়েটার, টুপির রাখার ব্যবস্থা করতে হবেন আম্পায়াররা ক্রিকেটারদের জিনিস নিয়ে দাঁড়াতে পারবেন না।
ঘটনা হল, সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ওভারের মাঝে মাঝে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়ার কাজ বেশ চ্যালেঞ্জিং। ক্রিকেট মহলের একাংশের তরফে জানানো হয়েছে, টেস্ট ক্রিকেটে এসবের জন্য পর্যাপ্ত সময় থাকে, সীমিত ওভারের ক্রিকেটে এই দায়িত্ব পালন করা বেশ কঠিন। যদিও অনেকে বলছেন, স্যানিটাইজারের ছোট বোতল পকেটের মধ্যেই রাখতে পারেন ফিল্ডাররা।
সাধারণ সতর্কতা:
সাধারণ স্বাস্থ্য বিষয়ক সতর্কতা মেনে চলতে হবে। হাঁচি, কাশির সময় কনুই ভাঁজ করতে হবে। অন্যের ব্যবহার করা বোতল, তোয়ালে, ক্রিকেটীয় সরঞ্জাম ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ম্যাচের ভেন্যুতে একাধিক চেঞ্জিং রুম থাকা প্রয়োজন, যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হয়।
বায়ো সুরক্ষা আধিকারিক:
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে প্রতিটি দলের সঙ্গেই এবার নতুন একজন চিকিৎসককে থাকতে হবে। যাঁর পোশাকি পদ হতে চলেছে বায়ো সুরক্ষা আধিকারিক। করোনা পরবর্তী সময়ে গোটা বিশ্ব জুড়েই বিভিন্ন খেলায় বায়ো সুরক্ষিত স্টেডিয়াম হতে চলেছে। ক্রিকেটে বায়ো সুরক্ষা আধিকারিকদের দায়িত্ব থাকবে সংশ্লিষ্ট ভেন্যু, ক্রিকেটারদের বায়ো সুরক্ষার বিষয়ে নজর রাখা। সরকারি নিয়ম নীতি ঠিকমত পালন করা হচ্ছে কিনা, সে বিষয়ে কড়া দৃষ্টি রাখার দায়িত্বও তাঁর।
ম্যাচের আগে আইসোলেশন:
যেকোনো ক্রিকেট দলের সঙ্গে চিকিৎসকদের একটি দল থাকবেন। প্রতিটা দল যখন টুর্নামেন্ট বা সিরিজ শুরুর আগে আইসোলেশনে থাকবেন, তখন ১৪ দিন সেই ক্রিকেটারদের শারীরিক তাপমাত্রা, রিস্ক ফ্যাক্টর, করোনা পরীক্ষা ঘনঘন পরীক্ষা করা হবে। ক্রিকেটারদের সঙ্গে সাপোর্ট স্টাফদেরও এরকম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। সেই চিকিৎসিকদের সবুজ সংকেত পেলেই ক্রিকেটাররা মাঠে নামতে পারবেন।
বায়ো সুরক্ষিত বাবল:
বলা হচ্ছে, স্যানিটাইজড পরিবহন ছাড়া ক্রিকেটাররা ট্র্যাভেল করতে পারবেন না। বিদেশ সফর গেলে বাধ্যতামূলক প্রতিটি দলকে হোম কোয়ারেন্টাইনে কাটাতে হবে। চার্টার্ড ফ্লাইটেই যেতে হবে যেখানে দুই ক্রিকেটারের মধ্যে শারীরিক দূরত্ব বজায় থাকে। যে হোটেলে টিম থাকবে, সেই হোটেলের একটি ফ্লোরে নিজস্ব স্টাফ থাকা দরকার। কোনোভাবেই ক্রিকেটাররা রুম শেয়ার করতে পারবেন না। যদি দলের কোনো সদস্য করোনায় পজিটিভ ধরা পড়েন, তাহলে আগে থেকেই প্রয়োজনীয় বিষয় বন্দোবস্ত করে রাখতে হবে।
ম্যাচ খেলতে কোনো ভেন্যু কিংবা ট্রেনিং ফেসিলিটিতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে কিনা তা আগে থেকেই খতিয়ে দেখতে হবে।