বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের দুর্ধর্ষ জয় চলে গিয়েছে পিছনের সারিতে। পুণের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মাঠে সমস্ত আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে বিরাট কোহলির শতরান। যে ভঙ্গিতে কোহলি শতরান পূর্ণ করেছেন, তা রুদ্ধশ্বাস থ্রিলারের জন্ম দিয়েছে। এমনিতে একপেশে ম্যাচে কোহলির শতরান ঘিরেই যা চাঞ্চল্যের ঢেউ উঠেছিল বৃহস্পতিবার।
দলের জয় ছাপিয়ে উঠেই কোহলি নিজের ৪৮ তম ওয়ানডে শতরান পূর্ণ করেছেন। আর এক সেঞ্চুরি করলেই ছুঁয়ে ফেলবেন মাস্টার ব্লাস্টার শচীন তেন্ডুলকারের ওয়ানডে শতরানের সংখ্যাকে।
তবে কোহলির শতরান করার ধরণকে কিছুটা সমালোচনাই করলেন টিম ইন্ডিয়ার টেস্ট দলের নির্ভরযোগ্য তারকা চেতেশ্বর পূজারা। সাফ জানিয়ে দিলেন, ব্যক্তির আগে সবসময়েই দল। ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে পূজারা সটান জানিয়েছেন, "বাকিদের মত আমিও চেয়েছিলাম কোহলির শতরান হোক। তবে মাথায় রাখতে হবে ম্যাচ যত দ্রুত ফিনিশ করা হবে, ততই ভালো। নেট রানরেটে সকলের থেকে এগিয়ে থাকতে হবে। পরবর্তীতে যেন নেট রানরেট বিবেচনার সময় আক্ষেপ করে বলতে না হয়, আমাদের ম্যাচটা আরও আগে ফিনিশ করা দরকার ছিল।"
আসলে কোহলি বাংলাদেশ ম্যাচে দলের সবুজ সঙ্কেত পেয়েই শতরান পূর্ণ করার জন্য ঝাঁপিয়েছিলেন। শেষদিকে কেএল রাহুল সিঙ্গলস নিচ্ছিলেন না। সতীর্থকে শতরানের স্বাদ পাওয়ানোর বাসনায়। কোহলি নিজেও সিঙ্গলস নিয়ে স্ট্রাইকিং এন্ড ছাড়তে চাইছিলেন না। তবে দ্রুত দু-রান নিচ্ছিলেন কোহলি-রাহুল জুটি। শেষদিকে অনেকটা সময় জুড়েই কোহলির শতরান করার জন্য বাকি রান এবং দলের জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান একই হয়ে দাঁড়ায়।
বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে ৪৩তম ওভারে। নাসুম আহমেদ লেগ স্ট্যাম্পের বাইরে বল করলেও ওয়াইড দেননি আম্পায়ার রিচার্ড কেটেলবরো। ম্যাচ এমনিতে ৪০ ওভারের মধ্যেই ফিনিশ করা সম্ভবপর ছিল। তবে কেএল রাহুল মোটেই বল হিট করছিলেন না। এতেই ম্যাচ ফিনিশ করতে হয় ৪৩তম ওভারে।
নিউজিল্যান্ড এবং ভারত টানা চারটে ম্যাচ জিতলেও নেট রানরেটে কিউইরা এগিয়ে আপাতত পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে। সেই বিষয়টিই ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন পূজারা, "পুরোটাই দলগতভাবে সিদ্ধান্তের ব্যাপার। যেখানে ব্যক্তিগতভাবে কাউকে আত্মত্যাগ করতে হতেই পারে। দলের দিকে তাকিয়ে সবসময় দলকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আমি অন্তত এভাবেই বিষয়টিকে দেখি। ব্যক্তিগত কীর্তি সবসময় ভালো, তবে তা যেন কখনই দলকে পিছনে ফেলে নয়। প্লেয়ার হিসাবে সকলের কাছেই একটা চয়েস থাকে। অনেকেই আবার মনে করে শতরান করলে পরবর্তী ম্যাচে আরও ভাল খেলতে পারবেন তাঁরা। পুরোটাই দৃষ্টিভঙ্গি এবং মানসিকতার বিষয়।"
কিংবদন্তি অজি ওপেনার ম্যাথু হেডেন অবশ্য কোহলির এই শতরানে নেতিবাচক কিছু দেখছেন না। "আমার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়াই ছিল ও এই শতরান পাওয়ার পুরোপুরি যোগ্য। এই ধরণের টুর্নামেন্টে সবসময় সতর্ক থাকতে হয়। ক্রীড়া-দেবতারা বেশ ভয়ানক হন। আপনি যদি তাঁদের নিয়ে মস্করা করেন, পাল্টা হজম করতে হবে। যদি দুই তরফের সহমতের ভিত্তিতে বিষয়টি হয়, তাহলে তাতে কোনও সমস্যা নেই।"