প্রত্যাশা মতই একপেশে লড়াইয়ের সাক্ষী থাকল ভারত-বাংলাদেশ দ্বৈরথ। ম্যাচের আগে গর্জে উঠেছিল বাংলাদেশ। শেষ চার ম্যাচে তিন জয়ের পরিসংখ্যান তুলে ধরে ভারতকে হারানোর বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিল টাইগার বাহিনী। তবে ম্যাচে সেই একই চিত্র। দুর্ধর্ষ ভারতের সামনে নুইয়ে গেল বাংলাদেশ। কোনও প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারল না ওপার বাংলার ক্রিকেটাররা।
কার্যত আলুসিদ্ধ ম্যাচের একদম শেষদিকে একটু থ্রিলের যা আমদানি হল। কোহলির সেঞ্চুরি হবে কি, হবে না- এই দোটানায় রোমাঞ্চই অন্য মাত্রা পেল। পাটা পিচে বাংলাদেশের রান এত কম যে কোহলি সেঞ্চুরি করতে রীতিমত গলদঘর্ম হলেন। আর কোহলির সেঞ্চুরি আটকানোর জন্যই নোংরা স্ট্র্যাটেজি নিল বাংলাদেশ।
শেষদিকে কোহলি ৯৪ বলে ৯৭ রানে ব্যাটিং করছিলেন। সেই সময় জয়ের জন্য ভারতের দরকার ছিল মাত্র ২ রান। ব্যাপক অনিশ্চিয়তা তৈরি হয়েছিল কোহলির সেঞ্চুরি ঘিরে। ৪২ তম ওভারে বল করছিলেন বাংলাদেশি স্পিনার নাসুম আহমেদ। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়াইড বল করেন, যাতে কোহলির সেঞ্চুরি আটকানো সম্ভব হয়। স্পষ্ট ওয়াইড বল হওয়া সত্ত্বেও ক্রিকেট স্পিরিটের কথা মাথায় রেখেই আম্পায়ার অনন্য নজির গড়লেন। আম্পায়ার রিচার্ড কেটেলবরো ওয়াইড দিতে অস্বীকার করেন।
বিরাট নাসুমের এই ট্যাকটিক্সে যথেষ্ট ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন। তাঁর প্রতিক্রিয়াতেই স্পষ্ট। তবে বিরাটকে আশ্বস্ত করেই যেন আম্পায়ারের ওয়াইড বলের সিগন্যাল দেওয়া থেকে বিরত থাকা। সেই ওভারের তৃতীয় বলেই কোহলি সটান ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ ফিনিশ করেন। এবং নিজের ৪৮তম ওয়ানডে শতরান পূর্ণ করে যান। বিশ্বকাপের ইতিহাসে যা কোহলির তৃতীয় এবং চলতি সংস্করণে প্ৰথম শতরান।
প্ৰথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ। শুরুটা দারুণ করে দুই বাংলাদেশি ওপেনার লিটন দাস এবং তানজিদ হাসান। তবে ৯৩ রানে ভারতকে প্ৰথম ব্রেকথ্রু এনে দেন কুলদীপ যাদব। সেই পার্টনারশিপের পর আর কোনও জুড়িই গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। মিডল ওভারে ভারত স্বমহিমায় ম্যাচে ফিরে আসে। স্পিনের জালে আটকে দেয়। রবীন্দ্র জাদেজা নিজের সমস্ত অভিজ্ঞতা উজাড় করে দেন। বুমরা ডেথ ওভারে হাজির হন কাটার, ইয়র্কার নিয়ে। মাহমুদুল্লাহ ৪৬ এবং মুশফিকুর রহিমের ৩৬ বাদ দিলে বাকি বাংলাদেশি ব্যাটাররা কোনও অবদান রাখতে পারেনি।
পাটা পিচে এই অল্প রানে ভারতকে বধ করা সম্ভব ছিল না। তা হয়-ওনি। রোহিত শর্মা-শুভমান গিল ঝড়ের গতিতে রান তুলে বাংলাদেশকে শুরুতেও ব্যাকফুটে ঠেলে দেয়। রোহিত হাফসেঞ্চুরির ঠিক আগেই ফিরলেও গিল ফিফটি করে যান বিশ্বকাপের মঞ্চে প্ৰথমবার। এরপরে কোহলি রান চেজ করতে নেমে হান্ড্রেড করে যান স্মরণীয়ভাবে। টানা চার জয় ভারত আপাতত নিউজিল্যান্ডের পরেই পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে। বাংলাদেশ চার ম্যাচের তিনটিতেই হেরে সেমিফাইনালের রাস্তা থেকে অনেকটাই দূরে সরে গেল।