ভারতে জামাই আদর পাচ্ছে পাকিস্তান দল। হায়দরাবাদে পৌঁছনোর পর তুমুল জনজোয়ার দেখেছিল পাক দল। আর ভারতে আসার পর থেকেই বিরিয়ানিতে ডুবে ছিল পাক দল। হায়দরাবাদি বিরিয়ানি দিয়েই দিন শেষ এবং শুরু হত পাক তারকাদের।
Advertisment
তবে টানা বিরিয়ানি খেয়ে 'ক্লান্ত' হয়ে পড়েছেন পাক তারকারা। এমনটাই একাধিক প্রচারমাধ্যমে বলা হয়েছে। নবভারত টাইমস-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, টানা বিরিয়ানি খেয়ে খেয়ে পাক তারকারা আপাতত আর বিরিয়ানি খেতে চাইছেন না। পাক দলের সঙ্গে আসা ম্যানেজার উমর ফারুখ কালসন জানিয়েছেন, সকলেই তাঁদের 'আদর' করে বিরিয়ানি খাওয়াচ্ছে। কালসন সাংবাদিকদের মজা করে বলেছেন, অনেক বিরিয়ানি খাওয়া হয়েছে। তাঁরা আপাতত চাপাতি খেতে চান।
বিশ্বকাপে এসে হায়দরাবাদেই ঘাঁটি গেড়েছিল পাকিস্তান। জোড়া ওয়ার্ম আপ ম্যাচ হায়দরাবাদেই খেলেছে পাকিস্তান। গ্রুপ পর্বের প্রথম দুই ম্যাচেও পাক দল খেলবে হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে। তেলেঙ্গানার রাজধানী শহরে হৃদয় ভরিয়ে দেওয়া অভ্যর্থনা পেয়েছে পড়শি দেশ। হাজার হাজার ক্রিকেটপ্রেমী বিমনাবন্দর তো বটেই হোটেলেও অভ্যর্থনা জানিয়েছে বাবর আজম বাহিনীকে। হায়দরাবাদের অভ্যর্থনায় আপ্লুত পাক ক্রিকেটাররা নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা সোশ্যাল মিডিয়াতেও শেয়ার করেছিলেন।
সপ্তাহ দেড়েক টানা হায়দরাবাদে ছিলেন পাক তারকারা। গোমাংসে বিধি নিষেধ থাকলেও পাক দলের জন্য এলাহি ভুরিভোজেরও আয়োজন করা হয়েছিল হায়দরাবাদে। সুস্বাদু সমস্ত ডিশের সঙ্গে হায়দরাবাদের স্পেশ্যাল বিরিয়ানিরও স্বাদ নিয়েছেন হ্যারিস রউফ, শাদাব খানরা।
Advertisment
হায়দরাবাদের বিরিয়ানির স্বাদ পাওয়ার পর পাক তারকারা করাচির বিরিয়ানির স্বাদ ভুলেই গিয়েছিলেন। আইসিসির তরফে এক ভিডিও শেয়ার করা হয়েছিল। যেখানে পাক তারকাদের বলতে শোনা যাচ্ছে করাচি নাকি হায়দরাবাদ- কোন শহরের বিরিয়ানি সেরা! বাবর আজম জানিয়ে দেন, দুই শহরের বিরিয়ানি প্রায় একই। তবে ভারতের বিরিয়ানি একটু মশলাদার। হায়দরাবাদের অথেন্টিক বিরিয়ানিকে ১০-এ ৮ দেন বাবর। তবে হাসান আলি খুল্লামখুল্লা জানিয়ে দিয়েছিলেন, হায়দরাবাদ-ই সেরা। ১০-এ ১০ দেন তিনি।
সেই ভিডিওয় ইমাম-উল হককে বলতে শোনা গিয়েছিল দুই শহরের বিরিয়ানিই সেরা। “কোনটা সেরা? এটা নির্ধারণ করা একটু বেশি কঠিন। দুটোই ভালো লেগেছে।” বলেছেন পাক ওপেনার। হ্যারিস রউফ অবশ্য কোনও বাছবিচার না করেই হায়দরাবাদের ডিশকে ১০-এ ২০ দিয়ে দিয়েছেন। বলে দিয়েছেন, “গোটা বিশ্বেই হায়দরাবাদ বিরিয়ানির নাম শুনে এসেছেন এতদিন। এবার এখানে এসেই এই বিরিয়ানি স্বাদ নিতে দেরি করিনি।”
হায়দরাবাদে জোড়া ওয়ার্ম আপ ম্যাচেই হার হজম করতে হয়েছিল পাক দলকে। প্ৰথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সাড়ে তিনশো তুলেও হারতে হয় পাক দলকে। তারপর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হারতে হয়েছিল। দুই ম্যাচেই পাকিস্তানের দুর্বল ফিল্ডিং সমালোচিত হয়েছিল। কেন এত দুর্বল ফিল্ডিং?
হর্ষ ভোগলের এমন প্রশ্নে বেশ কৌতুকের জবাব-ও দেন শাদাব খান। বলে দেন, “আমরা প্রত্যেক দিনই হায়দরাবাদি বিরিয়ানি খাচ্ছি। এই কারণেই মাঠে হয়ত একটু স্লো হয়ে পড়ছি।”
Stand-in captain Shadab Khan: Yes, we are eating it every day and probably getting a little bit slow because of that. 😂😂😂 @newstapTweetspic.twitter.com/LdXTUbmYOc
বিশ্বকাপে পাকিস্তানের সূচনা মিশ্র ফলাফল বয়ে এনেছে। প্ৰথম দুই ম্যাচে নেদারল্যান্ডস এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিতলেও পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে মহারণে মাটিতে শুইয়ে পড়েছিল।
এরপরেই সম্ভবত বিরিয়ানি ত্যাগ করতে হচ্ছে পাক দলকে। পাকিস্তানি সমর্থকরা সরাসরি ক্রিকেটারদের টানা বিরিয়ানি খাওয়ার সমালোচনা করেছিলেন। সেই যুক্তি মেনেই এবার বিরিয়ানি থেকে আপাতত চাপাতিতে নজর পাক দলের।
"We are eating Hyderabadi biryani daily. We love it. That's why we are a bit slow in the field" - Shadab Khan 😂
ভারত ম্যাচেও পাকিস্তানি তারকাদের ফিল্ডিং সমালোচিত হয়েছে। সহজ বাউন্ডারি বাঁচাতে পারেননি ইমাম উল হক, শাহিন আফ্রিদিরা। বাউন্ডারি বাঁচাতে গিয়ে উল্টে শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে বল সীমানার বাইরে বের করে দেন নিজেরাই। এবার তাই দলে ফিটনেস আমদানি করতে কোপ পড়ছে বিরিয়ানিতে।
চাপাতির ডায়েটে আগামী ম্যাচে জয় মসৃণ হবে, সময়ই তা উত্তর দেবে।