ভারতে খেলতে আসার পর পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে ঘিরে একের পর এক বিতর্ক ঘটেই চলেছে। আহমেদাবাদে ভারতের কাছে দুরমুশ হওয়ার পর পাক ক্রিকেট দলের ডিরেক্টর মিকি আর্থার দায়ী করে বসেছিলেন ক্রিকেট সমর্থনকে। সেই ম্যাচেই আবার মহম্মদ রিজওয়ানকে ধর্মীয় কটূক্তির মুখে পড়তে হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছে পাকিস্তান। এমনকি আইসিসির কাছে অভিযোগও দায়ের করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড।
আহমেদাবাদে গত শনিবার ভারতের কাছে অপদস্থ হওয়ার পর সাংবাদিক সম্মেলনে এসে বিতর্ক উস্কে দিয়েছিলেন পাকিস্তানের ক্রিকেট ডিরেক্টর মিকি আর্থার। বলে দেন, “সত্যি কথা বলতে ম্যাচের আবহ দেখে মোটেও মনে হয়নি এটা আইসিসির ইভেন্ট। মনে হচ্ছিল বিসিসিআইয়ের একটা ইভেন্ট। মাইক্রোফোনে কখনই শোনা যায়নি- দিল দিল পাকিস্তান! এই ছোটখাটো বিষয়গুলোই ম্যাচে প্রভাব ফেলে দেয়। তবে এটা কোনওভাবেই অজুহাত দিচ্ছি না।"
এখানেই বিতর্কের শেষ নয়। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড বোমা ফাটিয়ে আইসিসির কাছে নালিশও করে বসেছে। পাক ক্রিকেট বোর্ডের তরফে সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডলে লেখা হয়েছে, “আইসিসির কাছে সরকারিভাবে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের তরফে। পাক সাংবাদিকদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিলম্ব করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ভারতের ভিসা নীতির জন্য সমর্থকরা থাকতে পারছেন না। ১৪ অক্টোবর ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচ চলাকালীন পাক ক্রিকেটারদের যেভাবে টার্গেট করা হয়েছিল সেই বিষয়েও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।”
ঘটনাবহুল ম্যাচে টসের সময় বাবর আজমকে দর্শকরা সমস্বরে ব্যাপকভাবে ব্যঙ্গ করেন। সেই সময় সঞ্চালক রবি শাস্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছিলেন বাবর। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক ভিডিও ভাইরাল হয়, যেখানে মহম্মদ রিজওয়ানকে ড্রেসিংরুমে ফেরার সময় শুনতে হয় ‘জয় শ্রী রান স্লোগান’।
আর পাক দলের এরকম বারংবার অভিযোগের বহরে ক্ষুব্ধ এস শ্রীসন্থ। স্পোর্টসক্রীড়ায় ২০১১-র বিশ্বকাপজয়ী দলের তারকা বলে দিয়েছেন, "ভালো খেললে দর্শকদের তরফে নিশ্চয় বাহবা দেওয়া হবে। খারাপ খেললে তো সমালোচিত হতেই হবে। ক্রিকেট দল হিসেবে দুই-য়েরই মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। মাহি ভাই এই কারণেই সবসময় প্রসেসের ওপর যোগ দিতেন। কারণ খেলায় চাপ থাকবেই। চাপ নিতে না পারলে ভারতে এসো না। পাকিস্তানে চলে যাও। তোমরা সেভাবেই তো খেলছ!"
আসলে বিতর্কের সূত্রপাত করেছিলেন মহম্মদ রিজওয়ান নিজেই। ভারতীয় সমর্থকদের একাংশ অভিযোগ করেছিল ইচ্ছাকৃতভাবে রিজওয়ান মাঠে নামাজ আদায় করেছেন। ভক্তি প্রদর্শনের জন্য নয়, বরং ভারতীয় দর্শকদের দেখিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই তাঁর এমন কীর্তি। এরপরে প্যালেস্টাইনের পাশে দাঁড়িয়ে রাজনৈতিক বিবৃতি দেওয়ায় ফের একবার সমালোচিত হন তিনি। আইসিসি ইভেন্টে এর আগে মহেন্দ্র সিং ধোনিকে ভারতীয় সেনার প্রতীক সমেত গ্লাভস পরতে নিষেধ করা হয়েছিল। আইসিসির তরফে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল, খেলার মাঠে কোনওভাবেই রাজনৈতিক বার্তা দেওয়া যাবে না। আইসিসির সেই নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই গাজার সমর্থনে ব্যাট ধরেছিলেন রিজওয়ান। বিশ্বকাপ চলাকালীন। তাই মোদি স্টেডিয়ামে দর্শকদের একাংশ টার্গেট করে রিজওয়ানকে। এমনটাই ক্রিকেট মহলের ব্যাখ্যা।