সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বধ করতে অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সেরা পারফর্মার মিচেল স্টার্ক। জস হ্যাজেলউড এবং স্টার্ক জুটি শুরুতেই দক্ষিণ আফ্রিকার টপ অর্ডার দুমড়ে মুচড়ে দিয়ে ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। মেঘলা আবহাওয়ায় অজি সিমারদের দাপটে প্রোটিয়াজরা ২৪/৪ হয়ে গিয়ে যে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল, সেই ধাক্কা থেকে আর বেরোতে পারেনি।
ডেভিড মিলারের অনবদ্য শতরান দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২১২ রানের সম্মানজনক স্কোরে পৌঁছে দেয়। তবে জয়ের জন্য এই পুঁজি যথেষ্ট ছিল না। প্যাট কামিন্স কঠিন পরিস্থিতিতে ব্যাট হাতে শেষদিকে নেমে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।
ক্যাপ্টেন কামিন্সের সঙ্গে ব্যাট হাতে অজিদের ত্রাতা হয়ে দাঁড়ান মিচেল স্টার্ক-ও। ম্যাচের পরেই লো স্কোরিং থ্রিলার নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে খুল্লামখুল্লা স্টার্ক, "বেশ চ্যালেঞ্জিং উইকেটে খেলতে হল। দুই দলই ম্যাচের বিভিন্ন পর্যায়ে চাপের মুখোমুখি হল। আমি শান্ত থাকার চেষ্টা করেছিলাম। প্যাটিও (কামিন্স) তাই। শেষদিকে ম্যাচ শেষ করার জন্য পর্যাপ্ত সময় ছিল আমাদের হাতে। এই চাপ কাটিয়ে ফাইনালে খেলা বেশ ভালো অনুভূতি।"
ইডেনের পিচ তাঁকে বিস্ময় হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে, এমনটাই জানিয়েছেন তিনি, "গত কয়েকদিন ধরে যে পিচে ট্রেনিং করেছি, সেই ট্র্যাক যথেষ্ট স্পিন-বান্ধব ছিল। পিচ নিয়ে যে সমস্ত রিপোর্ট পড়েছি, তাতে মনে হয়েছিল, বেশ কয়েকবার খেলা পিচেই হয়ত খেলতে হবে আমাদের। তবে ম্যাচে বল সুইং হওয়ায় অবাক হয়েছি। আগে বলেছি, পেস অনুযায়ী, পিচে ধারাবাহিকতা ছিল না। ভেবেছিলাম, প্ৰথম ইনিংসের গড়পড়তা স্কোর হতে চলেছে ৩০০ বা তার-ও বেশি। এটা বিস্ময়ের। তবে মাঝেমধ্যে বোলারদের দাপট দেখতে ভালোই লাগে।"
অজিরা এবার ফাইনালে মুকুটের লড়াইয়ে নামবে ভারতের বিপক্ষে। ২০০৩-এর ফাইনালের বদলা নেওয়ার মোক্ষম সুযোগ টিম ইন্ডিয়ার সামনে। নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে রবিবার মেগা-ম্যাচের সম্ভাব্য পিচ নিয়ে এরপরেই বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন স্টার্ক। সসাংবাদিক সম্মেলনে তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, স্পিনের বিপক্ষে অজিদের দুর্বলতা বারবার প্রকট হয়েছে এই বিশ্বকাপে। স্টার্ক অবশ্য জানাচ্ছেন, "আহমেদাবাদে আগামীকাল পৌঁছলেই বুঝব, আমাদের জন্য কোন উইকেট অপেক্ষা করছে- সতেজ পিচ নাকি পুরোনো পিচ!"
এমনিতে পিচ বিতর্ক থাবা বসিয়েছে রোহিতদের অভাবনীয় সাফল্যের রেকর্ডে। সেমিফাইনাল ম্যাচের আগে টিম ইন্ডিয়ার জন্য অর্ডারি পিচ বানানো হয়। যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আইসিসির প্রধান পিচ উপদেষ্টা আন্ডি আটকিনসন সরাসরি ইমেল করেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে। যে ইমেলে তিনি সাফ লেখেন, ফাইনালে দুই দল সমান সুযোগ পায় এমন সারফেস তৈরি করা হবে নাকি পুরোনো পিচে খেলতে বাধ্য করা হবে ভারতকে এডভান্টেজ দিয়ে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে তাঁর।
আইসিসির তরফে এরপরেই সরকারি বিবৃতি জারি করে কোনওরকমে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বিষয়টি। ভারতের নির্দেশ মত স্লো পিচ বানিয়ে নিয়মভঙ্গ হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে আইসিসির তরফে। সেই বিতর্কই নতুন করে উস্কে দিলেন মিচেল স্টার্ক। ফাইনাল-মহারণের আগে।