চোটমুক্ত হয়ে বিশ্বকাপে খেলতে নেমেছে ভারত। কোনও তারকারও চোটের সমস্যা নেই। যদিও শুভমান গিল অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে খেলতে পারেননি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মাঠে নেমেই চোটের আশঙ্কা ধাওয়া করল টিম ইন্ডিয়াকে। হার্দিক পান্ডিয়া বল করার সময়ে আঙুলে চোট পেলেন।
অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং করার সময় প্ৰথম স্পেলে বল করতে এসেই ক্যাপ্টেন রোহিতের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিলেন হার্দিক। ওয়ার্নারের জোরালো শট আছড়ে পড়েছিল হার্দিকের হাতে। দৃশ্যতই যন্ত্রণায় কাতরাতে দেখা যায় দলের তারকা অলরাউন্ডারকে। প্ৰথম স্পেলে হার্দিক বেশ খরুচে প্রমাণিত হন।।সিরাজ, বুমরাদের বিরুদ্ধে খাপ খুলতে না পারলেও অজি ব্যাটাররা হার্দিকের প্রথম দু-ওভারেই ২১ তুলে ফেলেছিলেন। তারপরেই চোটের ঘটনা। এবং আক্রমণ থেকে রোহিত সরিয়ে নেন হার্দিককে। মাঠের বাইরেও উঠে গিয়ে চোটের পরিচর্যা করতে দেখা যায় তারকাকে।
দ্বিতীয় স্পেলে পরের দিকে এসে হার্দিককে দেখা যায় আঙুলে কালো টেপ জড়িয়ে বোলিং করতে। ইনিংসের শেষের দিকে বল হাতে কামব্যাক করেন তিনি। আউটও করেন জাম্পাকে। এমনিতে জাতীয় দলে সকল তারকারই উপযুক্ত ব্যাক আপ রয়েছে। তবে হার্দিকের সরাসরি কোনও পরিবর্ত নেই। লোয়ার অর্ডারে ব্যাট হাতে তো বটেই বল হাতেও যে কোনও ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন হার্দিক। তাঁর চোটের অবস্থা কেমন আপাতত বোর্ডের তরফে সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি।
যাইহোক, ভারত বিশ্বকাপে স্বপ্নের সূচনা করল। অস্ট্রেলিয়া চিপকে খেলতে নেমে ভারতের পেস-স্পিনে নাস্তানাবুদ হল। বুমরার বলে মিচেল মার্শের ফিরে যাওয়া নিয়ে অজিদের দুর্ভোগ শুরু হয়েছিল। তারপর জাদেজা, কুলদীপের স্পিনে নাকানিচোবানি খেতে হয় অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের।
টসে জিতে প্ৰথমে ব্যাটিং নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে অজিরা সম্ভবত ভাবতেই পারেনি তাঁদের জন্য গোটা ইনিংস জুড়ে এমন দুর্ভোগ অপেক্ষা করে রয়েছে। চিপকের পিচে ভারত যে স্পিন ত্রয়ীকে লেলিয়ে দেবে, তা প্রত্যাশিতই ছিল। তবে অজি শিবিরের গোলা-বারুদ শুরুতেই খতম। গোটা ইনিংস জুড়েই অজিদের স্পিনের জালে জড়িয়ে রাখলেন অশ্বিন-জাদেজা-কুলদীপরা।
হাত খুলে খেলার সুযোগ পেলেনই না ক্যাঙারুরা। তৃতীয় ওভারেই বুমরার আচমকা বাউন্স থামিয়ে দিয়েছিল মিচ মার্শকে। বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে কোহলি যে ক্যাচ নিলেন, তা টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা। বুমরা-সিরাজের চমৎকার ওপেনিং স্পেলের পর অশ্বিন-কুলদীপের হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন রোহিত। আর এর পর পুরোটাই আত্মসমর্পণের গল্প।
মার্শ আউট হওয়ার পর অজি শিবিরের হয়ে ওয়ার্নার এবং স্মিথ ৬৯ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তুলেছিলেন। ক্রিজে থাকলেও দুজনের কেউই সাবলীল খেলা খেলতে পারছিলেন। অসহ্য স্পিনের নাগপাশ সহ্য না করতে পেরেই ওয়ার্নার কুলদীপের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন। এরপর সময় যত গড়িয়েছে অস্ট্রেলিয়ার রান তোলার গতি ততই থেমে থেমে থমকে গিয়েছে। স্মিথ এবং লাবুশানে দুজনেই চেষ্টা করছিলেন যথাসাধ্য। ৩৬ রানের পার্টনারশিপও গড়ে তুলেছিলেন দুজনে।
ম্যাচের সম্ভবত সেরা ডেলিভারিতে জাদেজা ফিরিয়ে দেন স্মিথকে। স্রেফ স্পিনে পরাস্ত করে স্মিথকে প্যাভিলিয়নে ফেরান জাদেজা। স্যার জাদেজা ৩০তম ওভারে লাবুশেন এবং আলেক্স ক্যারিকে ফিরিয়ে অজিদের সম্মানজনক স্কোর করার স্বপ্নেও জল ঢেলে দেন। ক্যামেরন গ্রিনকে আউট করে ম্যাচে নিজের প্ৰথম উইকেট তুলে নেন অশ্বিনও।