ত্রাতা হয়েছেন দলের। বিপদের মুখে তাঁর ব্যাট চওড়া হয়ে না দাঁড়ালে মোটেই ৮১ রানের জয় আসত না সহজে। বারবার পরিত্রাতা তিনি। বিশ্বকাপে প্ৰথম ম্যাচেই অঘটনের হাত থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন মহম্মদ রিজওয়ান। আর ঈশ্বর ভক্তিতেই যে তিনি বারবার অসাধ্য সাধন করছেন। তার জলজ্যান্ত প্রমাণ রাখলেন মাঠেই। হায়দরাবাদে নেদারল্যান্ডস ইনিংস চলাকালীনই ড্রিংকস ব্রেকের সময় রিজওয়ানকে দেখা গেল মাঠে হাঁটু গেড়ে বসে নমাজ পড়ছেন।
মুহূর্তেই সেই ঘটনা ভাইরাল হয়ে যায়। ঘটনাটি ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে। যে সময় রান চেজ করছিল নেদারল্যান্ডস। মাঠে ড্রিঙ্কসের জন্য যেখানে বাকি পাক তারকারা অপেক্ষা করছিলেন, সেই সময়েই হাঁটু গেড়ে বসে সর্বশক্তিমানের উদ্দেশ্যে প্রার্থনায় রত হতে দেখা গেল পাকিস্তানের তারকা উইকেটকিপার-ব্যাটারকে।
এর আগে এশিয়া কাপের সময়েও ভারতের বিপক্ষে মাঠে নেমে নমাজ পড়েছিলেন তিনি। অবশ্য ভারতের মাটিতে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের নমাজ পড়ার ঘটনা মনে করিয়ে দিয়েছে ২০১৬-র স্মৃতি। সেবার কলকাতায় খেলতে এসে পাকিস্তান দল মহামেডান ক্লাবে গিয়ে নমাজ পড়েছিল সমবেতভাবে।
যাইহোক, স্কোরবোর্ডে দেখে মনে হতে পারে, পাকিস্তান হয়ত একপেশেভাবে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়েছে। তবে পরিস্থিতি মোটেই সেরকম ছিল না। যথেষ্ট কাঠ খড় পুড়িয়েই এসেছে এই জয়। নেদারল্যান্ডস টসে জিতে পাকিস্তানকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল। শুরুতেই পাক ব্যাটিং জোরালো ধাক্কা খেয়েছিল ফখর জামান, ইমাম উল হক এবং বাবর আজম ৩৮ রানের মধ্যে ফিরে যাওয়ায়। এমন অবস্থা থেকে পাকিস্তানকে উদ্ধার করেন সাউদ শাকিল (৬৮) এবং মহম্মদ রিজওয়ান (৬৮)। দুজনেই হাফসেঞ্চুরি করে দলকে ভাল জায়গায় পৌঁছে দেন। ১২০ রানের পার্টনারশিপ গড়েন দুজনে। মাঝে ইফতিকার আহমেদ, রিজওয়ান, শাকিল ফিরে যাওয়ার পর পাকিস্তান একসময় ১৮৮/৬ হয়ে গিয়েছিল। শেষদিকে পাক দলের ত্রাতা হয়ে দাঁড়ান দুই স্পিনার শাদাব খান (৩২) এবং মহম্মদ নওয়াজ (৩৯)। দুজনে ৬৪ রানের পার্টনারশিপ গড়ে পাকিস্তানকে রক্ষা করে যান।
শুরুতে ম্যাক্স ও'ডডকে হারাতে হলেও নেদারল্যান্ডসের হয়ে জয়ের আশা বাঁচিয়ে রেখেছিল একারম্যান এবং বিক্রমজিৎ সিং। একারম্যান আউট হয়ে যাওয়ার পর বাস ডে'লিড ৭০ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। দুজনে হাফসেঞ্চুরিও করেন। ঠিক যখন মনে হচ্ছিল, নেদারল্যান্ডস হয়ত অঘটনের পথে হাঁটছে, সেই সময়েই পরপর উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য থেকে দূরে সরে যায় ডাচ বাহিনী।
ভারতের মাটিতে এই প্ৰথম একদিনের বিশ্বকাপে কোনও ম্যাচ জিতল পাকিস্তান। সেই জয়ই স্মরণীয় হয়ে থাকল রিজওয়ানের নমাজ পড়ার এই দৃশ্য।