বাংলাদেশ: ২৪৫/৯
নিউজিল্যান্ড: ২৪৮/২
বাংলাদেশের স্বপ্ন এবং সামর্থ্যের মধ্যে কয়েক যোজন দূরত্ব। কয়েক দশক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা হয়ে গেলেও এখনও কৈশোর কাটেনি টাইগারদের। চেন্নাইয়ের শুক্রবার আরও একবার সেই কথা জানান দিল। চেন্নাইয়ের চিপকে ম্যাচ। বনবন ঘূর্ণি পিচ। বাংলাদেশ খুশিতে উদ্বেল হয়েছিল সাকিব-মিরাজের স্পিনে পেড়ে ফেলা যাবে কিউইদের। যেমনটা আগের ম্যাচেই চিপকে করে দেখিয়েছিল ভারত। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। তবে শুনতে তেতো লাগলেও সত্যি হল যে ভারত কিংবা অস্ট্রেলিয়ার পর্যায়ে যেতে হলে বাংলাদেশকে এখনও বহু আলোকবর্ষ পেরোতে হবে।
প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে স্পিনে হারানোর পর বড় স্বপ্ন দেখেছিল বাংলাদেশ। পদ্মাপাড়ের স্বঘোষিত টাইগাররা ভেবেছিল সেনা কান্ট্রির বিদেশি দলের বিরুদ্ধেও স্পিনের এমন অব্যর্থ মহৌষধ কাজে আসবে। তবে উড়ন্ত বাংলাদেশকে মাটিতে নামিয়ে এনেছিল ইংল্যান্ড। নাকানিচোবানি খাইয়ে ধর্মশালায় পর্যুদস্ত করেছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। এবার চিপকের স্লো পিচেই বাংলাদেশের স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করে দিল নিউজিল্যান্ড। স্পিন পিচেই ম্যাট হেনরি, লকি ফার্গুসনদের গতি সামলাতে হিমশিম খেলেন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা।
চিপকের পিচে যথেষ্ট বাউন্স রয়েছে। সেই বাউন্স ধরেই ফার্গুসন, ম্যাট হেনরিরা বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারে ভাঙন ধরিয়েছিলেন। তারপর পঞ্চম উইকেটে সাকিব (৪০)-মুশফিকুরের (৬৬) ৯৬ রানের পার্টনারশিপটাই যা বলার মত বিষয়। যে পিচে ভাবা হয়েছিল বাংলাদেশের স্পিনাররা নির্ণায়ক হয়ে দাঁড়াবেন, সেই পিচেই দুটো করে উইকেট দখল করলেন হেনরি, ট্রেন্ট বোল্ট। ফার্গুসন নিলেন তিন-তিনটে উইকেট। বাংলাদেশের ৯ উইকেটের মধ্যে ৭টিই কিউই সিমারদের পকেটে।
শেষদিকে তা-ও যে বাংলাদেশ আড়াইশোর কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারল, তাতে টাইগার সমর্থকরা ধন্যবাদ জানাতে পারেন মাহমুদউল্লাহকে। টেল এন্ডারদের সঙ্গে ব্যাট করতে বাধ্য হলেন আট নম্বরে নামা মাহমুদুল্লাহ। এবং করে গেলেন ৪১ রান।
ভাবা হয়েছিল এই পুঁজি নিয়ে বাংলাদেশ বিপদে ফেলতে পারে ব্ল্যাক ক্যাপসদের। তবে কোথায় কী! তৃতীয় ওভারেই মুস্তাফিজুর ফর্মে থাকা রচিন রবীন্দ্রকে ফিরিয়ে দিয়ে আশা জাগিয়েছিলেন। তবে সময় যত গড়াল, ততই হতাশা বাড়ল বাংলাদেশের। নুইয়ে গেল কাঁধ। ডেভন কনওয়ে, কেন উইলিয়ামসন দ্বিতীয় উইকেটে যোগ করলেন ৮০ রান। কনওয়ে (৪৫) ফেরার পর ম্যাচের দখল নিয়ে নিলেন কেন উইলিয়ামসন এবং ড্যারেল মিচেল।
বাংলাদেশি বোলারদের দেখে কখনই মনে হয়নি এই ম্যাচ তাঁরা বের করতে পারবেন। শেষদিকে, নিশ্চিত শতরানের মুখে দাঁড়িয়ে থাকা কেন ৭৮ করে রিটায়ার্ড হার্ট হন। রান নেওয়ার সময় বাংলাদেশি ফিল্ডারের ছোঁড়া বল আছড়ে পড়ে তাঁর হাতে। সঙ্গেসঙ্গেই মাঠ ছাড়েন তিনি। চোট সারিয়ে চলতি।বিশ্বকাপে এই প্ৰথমবার খেলতে নেমেছিলেন তিনি। তবে ফের একবার চোটের কবলে পড়তে হল তাঁকে।
উইলিয়ামসন উঠে যাওয়ার পর মিচেল (৮৯) ম্যাচ ফিনিশ করেন গ্লেন ফিলিপসকে সঙ্গে নিয়ে।