এশিয়া কাপে ভারতের কাছে বেদম প্রহার সহ্য করেছিলেন। কোহলিদের কাছে বিশাল ব্যবধানে হেরে বসেছিল পাকিস্তান দল। তবে শাহিন শাহ আফ্রিদি যে বিশ্বকাপে এসেও ফর্ম খুঁজে পেয়েছেন, এমনটা নয়। দুই ম্যাচেই সেভাবে নজরকাড়া পারফরম্যান্স করতে পারেননি শাহিন আফ্রিদি। নেদারল্যান্ডস ম্যাচে নিষ্প্রভ ছিলেন। শ্রীলঙ্কা ম্যাচেও তুমুল মার হজম করেছেন।
এবার ভারতের বিপক্ষে শনিবার খেলতে নামবেন তিনি। মহা-ম্যাচে খেলতে নামার আগে অবশ্য শাহিন আফ্রিদির চোট নিয়ে রীতিমত সংশয় রয়েছে। বল হাতে একদম ছন্দে ছিলেন না তিনি। পাকিস্তানের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে হালকা চোট-ও পেয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের পেস বোলিং আক্রমণের সেরা অস্ত্র ধরা হয় যাঁকে, সেই শাহিন আফ্রিদির এহেন শোচনীয় কন্ডিশন দেখে বিস্মিত ওয়াকার ইউনিস।
ঘটনাচক্রে, শাহিনের ফিটনেস ইস্যু প্রকাশ্যে চলে এসেছে শ্রীলঙ্কা ম্যাচের সময়েই। কুশল মেন্ডিস ব্যাটিং করার সময়ে সজোরে শট হাঁকিয়েছিলেন। যা শাহিনের হাঁটুতে আছড়ে পড়ে। লঙ্কান ইনিংসের পঞ্চম ওভার চলাকালীন শাহিন বল করছিলেন। সেই ওভারেই সজোরে স্ট্রেট ড্রাইভ হাঁকান কুশল মেন্ডিস। বল হাতে দিয়ে ধরার চেষ্টা করলেও শাহিন পারেননি। আঙুলের ফাঁক দিয়ে গলে বল আঘাত হানে হাঁটুতে। এরপরেই যন্ত্রণায় কাতরাতে দেখা যায় পাক তারকাকে। খোঁড়াতে খোঁড়াতে বোলিং লাইন আপের দিকে যান। পাক সূত্রের খবর, আঙুলে চোট নিয়েও বিশ্বকাপে খেলছেন স্পিডস্টার। যদিও সরকারিভাবে কোনওকিছু স্বীকার করে নেওয়া হয়নি।
ভারতের বিপক্ষে প্ৰথমবার খেলতে নেমে ছাপ ফেলতে পারেননি শাহিন আফ্রিদি। তবে ২০২১-এ শাহিন ভারতের ব্যাটিংয়ে ধস নামিয়ে যান। আমিরশাহিতে সেবার টি২০ ওয়ার্ল্ড কাপ আয়োজিত হয়েছিল। ভারতের বিপক্ষে আফ্রিদি কার্যত অপ্রতিরোধ্য পারফরম্যান্স হাজির করেন। ৪ ওভারে মাত্র ২১ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট শিকার করে যান তিনি। ভারতের টপ অর্ডারকে একাই ধ্বংস করে যান তিনি। শাহিনের অতিমানবিক পারফরম্যান্সের সৌজন্যেই পাকিস্তান সেই প্রথমবার কোনও বিশ্বকাপে ভারতকে হারাতে পেরেছিল।
যাইহোক, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মঙ্গলবার ৯ ওভার বল করেছিলেন আফ্রিদি। ৬৬ রান খরচ করে বসেন তিনি। নেন মাত্র ১ উইকেট। যা দেখে ওয়াকার ইউনিস বলে দিয়েছেন, শাহিনকে মোটেই ছন্দে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। যা পাকিস্তানের কাছে রীতিমত উদ্বেগের বিষয়।
পাক কিংবদন্তি জানাচ্ছেন, "পাকিস্তানের সাফল্যে শাহিনের বড়সড় ভূমিকা রয়েছে। শুরুর স্পেলেই উইকেট নিতে পারে ও। বহুবার ও এই ভূমিকায় সফল হয়েছে। ওঁর প্রতিভা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। এই পর্যায়ে ও বেশ কঠোর পরিশ্রম করে চলেছে। তবে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কোনও কিছুই যেন কাজ করছে না। মর্নি মর্কেলের সঙ্গে বসে গোটা বিষয়টার ওঁকে সমাধান করতে হবে।"
ওয়াকার আরও বলছেন, "পাকিস্তানকে খুঁজে বের করতে হবে, সমস্যা কোথায় হচ্ছে। ওঁর একশন নিয়ে মনে হয় সমস্যা হচ্ছে। যদি শাহিনের কিছু হয়ে থাকে, সেটার সমাধান ওঁকেই করতে হবে। ভারতের বিরুদ্ধে আমাদের সেরা ফর্মের শাহিনকে প্রয়োজন। ভারতের বিপক্ষে অতীতেও ও নিজেকে প্রমাণ করেছে। দলের জন্য ও বরাবর গুরুত্বপূর্ণ। একই কথা শাদাবের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।"
চোট-আঘাত, ছন্দ হারানো শাহিনকে ভারতের বিপক্ষে আহমেদাবাদে দেখা যায় কিনা, সেটাই দেখার।