দক্ষিণ আফ্রিকা: ৩১১/৭
অস্ট্রেলিয়া: ১৭৭/১০
লজ্জার হার হজম করল অস্ট্রেলিয়া। ভারতকে প্ৰথম ম্যাচে বাগে পেয়েও হারাতে পারেনি। তবে এবার আরও বড় লজ্জা। সেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে ধ্বংস হয়ে গেল পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। দক্ষিণ আফ্রিকার ৩১২ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৪০.৫ ওভারে মাত্র ১৭৭ রানে বান্ডিল হয়ে গেল। অজিরা হার হজম করল ১৩৪ রানের ব্যবধানে। শোচনীয় লজ্জা নিয়ে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে হারের পর প্রশ্ন উঠে গেল, এটাই বিশ্বকাপের ইতিহাসে দুর্বলতম অজি দল কিনা!
প্রথমে টসে জিতে লখনৌয়ের অটল বিহারি বাজপেয়ী স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার টপ অর্ডারকে একাই টেনে নিয়ে যান কুইন্টন ডিকক। বিশ্বকাপের পরেই একদিনের ক্রিকেট থেকে অবসর নেবেন তিরিশ বছরের প্রোটিয়াজ তারকা। তাই শেষ বিশ্বকাপ রাঙিয়ে দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ক্যাপ্টেন তেম্বা বাভুমার সঙ্গে ওপেনিং পার্টনারশিপেই দলকে একশোর গোড়াপত্তন এনে দেন ডিকক। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকাকে।
ডিকক ছাড়া হাফসেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন শ্রীলঙ্কা ম্যাচে মাত্র ৫০ বলে সেঞ্চুরি করা তারকা আইডেন মারক্রাম। এদিনও ৪৪ বলে ৫৫ রানের কার্যকরী ইনিংস উপহার দিয়ে যান তারকা। বাকিরা কেউই হাফসেঞ্চুরির গন্ডি পেরোতে না পারলেও দলের ইনিংস গড়ার কাজে অবদান রেখেছেন। ক্যাপ্টেন বাভুমা মন্থর ইনিংসে ৫৫ বলে ৩৫ করেন। ডুসেন (২৬), ক্লাসেন (২৯), জ্যানসেন (২৬) করেন।
প্রোটিয়াজ ব্যাটারদের দাপটে একসময় মনে হচ্ছিল সাড়ে তিনশোর বেশি স্কোরবোর্ডে জমা করবে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে শেষ দশ ওভারে ৭৯ রানের বেশি তুলতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। অজি বোলাররা ডেথ ওভারে আঁটোসাঁটো বোলিং করে যান।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার সূচনা একদম ভয়াবহ হয়েছিল। ৭.৩ ওভারে স্কোরবোর্ডে ২৭ তোলার ফাঁকেই আউট হয়ে যান দুই অস্ট্রেলীয় ওপেনার- ডেভিড ওয়ার্নার এবং মিচেল মার্শ। প্ৰথমে জ্যানসেনের লেন্থ বলের শিকার হয়ে ফেরেন মিচ মার্শ। ব্যাটের কানায় লেগে মিড অফে ক্যাচ উঠে যায়। পরের ওভারেই লুঙ্গি এনজিদিকে ড্রাইভ করতে গিয়ে পয়েন্ট-এ ক্যাচ তুলে বসেন।
স্মিথ-লাবুশানে জুটির ওপরেই যাবতীয় দায়িত্ব এরপরে টিকে ছিল। তবে কাগিসো রাবাদার বলে লেগ বিফোর হয়ে ফিরতে হয় স্মিথকে। প্ৰথমে আম্পায়ার নটআউট দিলেও রিভিউ নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। হক আই-তে ধরা পড়ে বল লেগ স্ট্যাম্পের ওপর স্পর্শ করছে। এই আউট ঘিরে অজি শিবিরে অসন্তোষ থাকলেও স্মিথকে হারাতে হয় অস্ট্রেলিয়ার।
এরপরে রাবাদার একটা স্পেলে জাস্ট মুছে যায় অস্ট্রেলিয়া। প্ৰথমে উইকেটকিপার জস ইংলিশ কে স্বপ্নের ডেলিভারিতে বোল্ড করেন। রাবাদার পরের শিকার মার্কাস স্টোইনিস। রাবাদার শরীর লক্ষ্য করে লেন্থ বল লেগ স্ট্যাম্পে ঠেলতে চেয়েছিলেন অজি অলরাউন্ডার। তবে ব্যাটের কানা স্পর্শ করে উইকেটের পিছনে যেতেই ঝাঁপিয়ে পড়ে ক্যাচ তালুবন্দি করেন ডিকক। প্ৰথমে আম্পায়ার রাবাদার আবেদনে সাড়া না দিলেও রিপ্লাইয়ে আঙুল তুলতে বাধ্য হন তিনি।
৭০/৬ হয়ে যাওয়ার পরও অস্ট্রেলিয়া যে ১৭৭ পর্যন্ত টেনে নিয়ে গেল, তার নেপথ্যে লাবুশানে-স্টার্কের ৬৯ রানের পার্টনারশিপ। স্টার্ক আউট হয়ে যাওয়ার পর লাবুশানেও (৪৬) পরের ওভারে আউট হয়ে যান। বাকি ল্যাজ ছেঁটে ফেলতে প্রোটিয়াজ বোলারদের বেশি সময় লাগেনি। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৩ উইকেট নেন রাবাদা। দুটো করে উইকেট পান তাব্রিজ সামসি, কেশব মহারাজ এবং মার্কো জ্যানসেন।