সমস্যায় জর্জরিত পাকিস্তান। বিশ্বকাপে খেলতে এসে সময়টা মোটেই সুখের যাচ্ছে না পাকিস্তানি দলের। একে তো ভারতের কাছে উপর্যুপরি বিশ্বকাপে টানা অষ্টম হারের পর ক্রিকেটাররা নিজেদের দেশের সমর্থকদের রোষানলে, তার ওপর এবার নতুন সমস্যা উপস্থিত পাক শিবিরে।
চলতি সপ্তাহে শুক্রবার বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পাকিস্তান নামছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। দুই দলের কাছেই মহা-গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচ। আর এই মহারণের আগেই বেঙ্গালুরুতে ভাইরাল ফিভারে আক্রান্ত পাক দলের একাধিক তারকা। শুক্রবার যাঁদের অজি ম্যাচে খেলা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। একাধিক প্রচারমাধ্যমে বলা হয়েছে, পাকিস্তানি ক্যাম্পের অন্তত পাঁচজন ভাইরাল জ্বরের কবলে পড়েছেন।
এমনিতেই দক্ষিণী রাজ্যগুলিতে মরশুম বদলের জ্বর তো বটেই থাবা বসিয়েছে ডেঙ্গি। তিরুবন্তপুরমে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে চেন্নাইয়ে পা রাখার পরেই টিম ইন্ডিয়ার সুপারস্টার শুভমান গিল ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তারপর প্ৰথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া তো বটেই দিল্লিতে আফগানিস্তান ম্যাচেও খেলতে পারেননি তিনি। আহমেদাবাদে সরাসরি টিম ইন্ডিয়া শিবিরে যোগ দেন সুস্থ হয়ে। পাকিস্তান ম্যাচেও খেলেন গিল। যদিও ১৬ রানের বেশি করতে পারেননি।
তবে গিলের ডেঙ্গি হলেও পাকিস্তানি তারকারা সম্ভবত ভাইরাল ফিভারের শিকার হয়েছেন। যা মরশুম বদলের সঙ্গে সম্পর্কিত। ভারতের কাছে ৭ উইকেটে হারের পর পাকিস্তান বেঙ্গালুরুতে এসেছে গত মঙ্গলবার। পাকিস্তানের মিডিয়া ম্যানেজার আহসান ইফতিকার নেগি সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, "অনেকেই গত কয়েকদিনে জ্বরের কবলে পড়েছেন। তবে অধিকাংশই সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। যাঁরা এখনও পুরোপুরি জ্বর কাটিয়ে উঠতে পারেনি তাঁরা মেডিক্যাল টিমের কড়া পর্যবেক্ষণে রয়েছে।" তিনি জানিয়েছেন, শাহিন শাহ আফ্রিদি এবং বাবর আজমের কোনও সমস্যা নেই।
বিশ্বকাপ অভিযানে এসে অস্ট্রেলিয়া টানা দুটো ম্যাচে হেরে গিয়েছিল ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ ম্যাচে জয়ের সরণিতে ফিরেছেন প্যাট কামিন্সরা। অন্যদিকে, পাকিস্তান নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে শুরুর ম্যাচে চাপে থাকলেও সহজ জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল। তারপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঐতিহাসিক রান তাড়া করে জিতে যায় পাক দল। জোড়া জয়ের পরেই ভারতের কাছে মুখ থুবড়ে পড়ে পাক দল।
পাকিস্তানের বড় সমস্যা দলগত পারফরম্যান্স মেলে ধরতে পারছেন না তারকারা। ব্যাট হাতে মহম্মদ রিজওয়ান বাদে কেউই ধারাবাহিক নন। বাবর আজম ভারত ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি করলেও আগের দুই ম্যাচে রান পাননি। ফখর জামানকে প্ৰথম ম্যাচের পরেই বাদ দেওয়া হয়েছিল। আব্দুল্লা শফিক নেমেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুরন্ত শতরান করেছিলেন। তবে ভারত ম্যাচে তিনি আবার খাপ খুলতে পারেননি। পেস বিভাগকেও ছন্নছাড়া দেখিয়েছে। নাসিম শাহের অনুপস্থিতিতে শাহিন আফ্রিদি তুখোড় অফফর্মে রয়েছেন। হ্যারিস রউফ প্রতি ম্যাচেই নিয়ম করে রান বিলানোর দায়িত্ব নিয়েছেন। হাসান আলিও ভরসা জোগাতে পারছেন না।
পাকিস্তানের সবথেকে বড় দুর্বল জায়গা স্পিন বোলিং। ভারতের পিচে সম্ভবত টুর্নামেন্টের অন্যতম দুর্বলতম স্পিন আক্রমণ নিয়ে খেলছে পাক দল। শাদাব খান, মহম্মদ নওয়াজ কোনও প্রভাবই ফেলতে পারছেন না। স্পিন-সহায়ক উইকেট পেয়েও। ইতিমধ্যেই শাদাব খানকে বাদ দেওয়ার দাবি জোরালো হয়েছে। বদলে যাঁকে অজিদের বিপক্ষে ভাবা হচ্ছিল সেই ওসামা মির আপাতত জ্বরের কবলে। এমন ছন্নছাড়া ভাবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় পাবে পাকিস্তান, সংশয় রয়েছে।