ভারত: ২০৮/৬
অস্ট্রেলিয়া: ২১১/৬
সেই বোলিং। এবং আরও স্পষ্ট করে বললে ডেথ ওভারের বোলিং। এশিয়া কাপের পর ফের একবার যা ভারতকে ডুবিয়ে দিল। স্কোরবোর্ডে ২০৮ তুললেও যে কারণে ভারতকে নিজেদের ঘরের মাঠে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হার হজম করতে হল। বিশাল রান চেজ করে অবিশ্বাস্যভাবে গত টি২০ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নরা সেই রান তুলল হাতে চার উইকেট, চার বল বাকি থাকতে।
হার্দিক, কেএল রাহুলদের দুর্ধর্ষ হাফসেঞ্চুরিতে ভর করে ভারত স্কোরবোর্ডে ২০৮ তুলেছিল। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এটাই টি২০-তে ভারতের সর্বোচ্চ স্কোর। তবে সেই রান চেজ করার সময় দুর্বল বোলিংয়ের সঙ্গে ভারতকে ডোবাল ফিল্ডিংও। ক্যামেরন গ্রিন, ম্যাথু ওয়েড, স্টিভ স্মিথ সকলেই একবার করে জীবন পেলেন ভারতীয় ফিল্ডারদের বদান্যতায়। সেই সঙ্গে যোগ হল ভুবনেশ্বর কুমারদের কুখ্যাত ডেথ ওভারের বোলিং।
আরও পড়ুন: জুয়ায় মদত দিচ্ছেন সৌরভ! বোর্ড সভাপতিকে নিয়ে মুখ খুললেন এবার গম্ভীর
বিশাল রান তাড়া করতে নেমে ক্যাপ্টেন ফিঞ্চ শুরুতেই দলের রিংটোন সেট করে দিয়েছিলেন। মাত্র ১৩ বলে ২২ রানের ইনিংসের স্ফুলিঙ্গই পরবর্তীতে দাবানল হয়ে জ্বলে উঠল। অক্ষর পাওয়ার প্লে-র মধ্যেই ফিরিয়ে দিয়েছিলেন অজি তারকাকে। তবে দ্বিতীয় উইকেটে স্টিভ স্মিথ এবং গ্রিন মিলে ৭০ রানের পার্টনারশিপে শেষের দিকে সাইক্লোনের মঞ্চ প্রস্তুত করে যান। দুজনেই একবার করে জীবন পেয়েছেন। স্টিভ স্মিথ অজি ইনিংসের হাল ধরার কাজ করে ২৪ বলে ৩৫ করলেও অন্যপ্রান্তে গ্রিন ঝড় তুলে দেন ৩০ বলে ৬১ করে। মাঝে পরপর দু-ওভারে স্মিথ, গ্রিন এবং ম্যাক্সওয়েলকে ফিরিয়ে ভারতকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন উমেশ, অক্ষররা।
সেই সময় ভাবা হয়েছিল বিশাল রান তাড়া করে মাঝপথেই মুখ থুবড়ে পড়বে অস্ট্রেলিয়ান ইনিংস। অজিরা একসময় ১৪৫/৫ হয়ে যাওয়ায় ম্যাচে ভারতের জয় ছিল স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। তবে এমন সময়েই ফের প্রকট হয়ে যায় ভারতের দুর্বল ডেথ বোলিং। জস ইংলিশ, টিম ডেভিডদের সঙ্গে শেষদিকে ম্যাচ ফিনিশ করে আসেন ম্যাথু ওয়েড।
শেষ তিন ওভারে জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল ৪০ রান। এমন অবস্থায় এই রান ডিফেন্ড করতে পারল না ভারতের বোলাররা। ১৮তম ওভারে হর্শল প্যাটেল ২২ রান এবং ১৯তম ওভারে ভুবনেশ্বর ১৬ রান খরচ করার পরেই ম্যাচে অজিদের জয়ের সমীকরণ জলবৎ তলরং হয়ে যায়। শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল মাত্র ২ রান। প্ৰথম বলে জুজবেন্দ্র চাহাল টিম ডেভিডকে ফিরিয়ে দিলেও দ্বিতীয় বলে প্যাট কামিন্স বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ফিনিশিং টাচ দেন।
আরও পড়ুন: কোচ বদলাল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, টেস্টের সেরা রেকর্ডের মালিক এবার বুমরাদের হেড স্যার
অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে মোহালিতে মঙ্গলবার অভিষেক ঘটল এতদিন সিঙ্গাপুরের হয়ে খেলা টিম ডেভিড। এশিয়া কাপের সুপার সিক্সের শেষ ম্যাচে রোহিত শর্মা খেলেননি। তিনি ফিরতেই বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল ঋষভ পন্থকে। ব্যাক ইনজুরি থেকে ফেরার পরে জসপ্রীত বুমরাকে বিশ্বকাপের আগে তাড়াহুড়ো করে নামানোর ঝুঁকি নেয়নি টিম ম্যানেজমেন্ট। এশিয়া কাপে চোটের কারণে বাইরে থাকা হর্শল প্যাটেলের কামব্যাক ঘটেছিল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্ৰথম টি২০-তে।
প্ৰথমে ব্যাট করতে নেমে কেএল রাহুল বিশ্বকাপের আগে টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থা জুগিয়ে ৩৫ বলে ৫৫ করে গিয়েছিলেন। কোহলি, রোহিত রান না পেলেও সূর্যকুমার যাদব (২৫ বলে ৩৬) রানের দেখা পেয়েছিলেন। শেষদিকে হার্দিক পান্ডিয়ার ঝড়ে ভারত অজিদের বিপক্ষে টি২০-র সর্বোচ্চ স্কোর খাড়া করে। তবে দিনের শেষে বোলারদের ব্যর্থতায় যা মান্যতা পেল না পুরোপুরি।
ভারত: রোহিত শর্মা, কেএল রাহুল, বিরাট কোহলি, সূর্যকুমার যাদব, হার্দিক পান্ডিয়া, দীনেশ কার্তিক, অক্ষর প্যাটেল, ভুবনেশ্বর কুমার, হর্শল প্যাটেল, উমেশ যাদব, জুজবেন্দ্র চাহাল