আফগানিস্তান: ১৭২/৯
ভারত: ১৭৩/৪
IND vs AFG, 2nd T20I Match Report: ন্দোরের হোলকার স্টেডিয়াম ঐতিহাসিক অনেক ম্যাচ দেখেছে। অনেক ব্যাটিং শৈলি প্রত্যক্ষ করেছে বছরের পর বছর ধরে। তবে এমন পাশবিক ব্যাটিং বোধহয় চাক্ষুস দেখেনি ইন্দোর। সেই ঘটনা ঘটে গেল রবিবার। আফগানিস্তানের বোলিংকে একাই কার্যত 'খেয়ে নিলেন' শিভম দুবে (Shivam Dube)।
প্ৰথম ম্যাচেও হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন। বল হাতে উইকেটও ছিল। তবে মোহালিত সেই দাপট যেন কয়েক ডেসিবেল জোরে আছড়ে পড়ল হোলকার স্টেডিয়ামে। আর ভারতের যুবদের তান্ডবের সাম্রাজ্যে আফগানিস্তানের ১৭২ রানের প্রতিরোধ চূর্ণ হয়ে গেল মাত্র ১৫.৪ ওভারে। হাতে ২৬ বল এবং ছয় উইকেট নিয়ে জিতে সিরিজের দখল নিল টিম ইন্ডিয়া।
রোহিত-বিরাট একসঙ্গে সেই টি২০ ওয়ার্ল্ড কাপের ফাইনালের পর খেললেন। রোহিত টানা দুটো ম্যাচে শূন্য করলেন। ফজলহক ফারুখিকে স্টেপ আউট করে মিড অনের ওপর দিয়ে হাঁকাতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে বোল্ড। কোহলি রান চেজ করতে নেমে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে ১৬ বলে ২৯ করলেন। পাঁচটা বাউন্ডারিও হাঁকালেন।
তবে বিরাট-রোহিতকে পিছনের সারিতে ফেলে দিলেন দুই তরুণ তারকা- যশস্বী (Yashasvi Jaiswal) এবং শিভম দুবে। প্ৰথম ম্যাচে নামতে পারেননি হালকা পিঠে সমস্যার কারণে। যশস্বী ফিরলেন ইন্দোরে, নজর কাড়ার মত। নূর আহমেদ থেকে মহম্মদ নবি- আফগান স্পিনারদের গ্যালারিতে পাঠানোর প্রদর্শনী চালু হয়েছিল তাঁর ব্যাটেই। নূর আহমেদকে একই ওভারে টানা তিনটে বাউন্ডারি হাঁকালেন।
আরও পড়ুন: IPL-এর জন্যই কি জাতীয় দলে ছুটি চেয়েছেন ঈশান! বিস্ফোরক এবার পাকিস্তানি তারকা
তখনও বোঝা যায়নি আফগান বোলারদের দুর্দশা আরও বাকি রয়েছে। বিরাট কোহলির স্ফুলিঙ্গ নিভে যাওয়ার পরেই ক্রিজে নামলেন শিভম দুবে। তারপর পুরোটাই শিভম-শো, মোহালির মত।
দশম ওভারে নবিকে একই ওভারে ছক্কার হ্যাটট্রিক। তারপর যত জন্য গড়িয়েছে, ততই ব্যাটের তেজ বেড়েছে শিভমের। যশস্বী জয়সোয়াল অন্যপ্রান্তে তাণ্ডব অব্যাহত রাখলেও দুবের ব্যাটের রিখটার স্কেল বিপজ্জনক মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। শেষে মাত্র ২২ বলে ফিফটি পূরণ করে যান দুবে। যশস্বীর হাফসেঞ্চুরি এল ২৭ বলে। দুজনে ৯২ রান যোগ করে যান মাত্র ৪২ বলে। শেষে ম্যাচ জয়ের মুখে করিম জানাতের বলে যশস্বী (৩৪ বলে ৬৮) আউট করে আউট হয়ে গেলেও ৩২ বলে ৬৩ করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন শিভম।
তার আগে জোড়া বদল নিয়ে খেলতে নেমেছিল ভারত। যশস্বী এবং কোহলি ফিরতেই বাদ পড়তে হয় গিল এবং তিলক ভার্মাকে। প্ৰথমে ব্যাট করা আফগানিস্তানকে বড়সড় স্কোরে পৌঁছে দিয়েছিলেন গুলাবদিন নাইব। ব্যাটিং অর্ডারে তিন নম্বরে প্রমোট করা হয়েছিল তারকাকে। টিম ম্যানেজমেন্টের সেই আস্থার মর্যাদা দিলেন তিনি।
টসে জিতে ভারত আফগানদের ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল। তৃতীয় ওভারেই আফগানরা প্ৰথম উইকেট হারায়। রহমনউল্লাহ গুরবাজকে ফিরিয়ে দেন রবি বিশ্নোই। এরপরে নিয়মিত আফগানিস্তান উইকেট হারালেও রানের গতিতে ভাঁটা পড়তে দেননি গুলাবদিন।
৩২ বছরের তারকা ৩৫ বলে ৫৭ রানে শেষমেশ থামলেন। পাঁচটি বাউন্ডারির পাশাপাশি তাঁর ব্যাট থেকে বেরোল চারটে বিশাল ছক্কাও। এই নিয়ে কেরিয়ারের দ্বিতীয় টি২০ হাফসেঞ্চুরি হাঁকিয়ে গেলেন তারকা। প্ৰথম হাফসেঞ্চুরি এসেছিল ২০১৫-য় জিম্বাবোয়ের বিপক্ষে। তার নয় বছর পর এল দ্বিতীয় ফিফটি।
গুরবাজ আউট হওয়ার পর ক্রিজে এসেছিলেন। প্ৰথমে তাঁর ব্যাটের প্রহারের সামনে পড়ে যান মুকেশ কুমার। চতুর্থ ওভারেই মুকেশকে টানা দুটো বাউন্ডারি হাঁকিয়ে নিজের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট করে যান তিনি। পঞ্চম ওভারে টার্গেট করেন রবি বিশ্নোইকে। সেই ওভারে জোড়া বাউন্ডারির পাশাপাশি একটা ছক্কা হাঁকিয়ে যান। এরপরে আর থামানো যায়নি গুলাবদিনকে। মাত্র ২৮ বলেই হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করে যান তারকা। তার আগে অবশ্য কোহলি গুলাবদিনের ক্যাচ মিস করায় জীবন পান তিনি।
ভারতীয় প্রথম একাদশ: যশস্বী জয়সোয়াল, রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, শিভম দুবে, জিতেশ শর্মা, রিঙ্কু সিং, অক্ষর প্যাটেল, রবি বিশ্নোই, ওয়াশিংটন সুন্দর, অর্শদীপ সিং, মুকেশ কুমার