ভারত: ১৬০/৭
অস্ট্রেলিয়া: ১৫৪/৮
রান চেজ করতে নেমে আরও একবার ভারতের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ল অস্ট্রেলিয়ার। বেঙ্গালুরুতে সিরিজে ৪-১ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করল সূর্যকুমারের টিম ইন্ডিয়া। ভারতের ১৬০ রানের জবাবে অস্ট্রেলিয়া থেমে গেল মাত্র ১৫৪-এ।
ব্যাট হাতে শ্রেয়স আইয়ার এবং বল হাতে মুকেশ কুমার, রবি বিশ্নোই ভারতকে চিন্নাস্বামীতে স্মরণীয় জয় এনে দিলেন। তবে রুদ্ধশ্বাস থ্রিলারের শেষ ওভারে মাত্র ৩ রান খরচ করে নায়ক হয়ে গেলেন অর্শদীপ সিং-ও। শেষ দুই ওভারে অজিদের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৭ রান। ক্রিজে শেষ স্বীকৃত ব্যাটার হিসাবে হাজির ছিলেন ম্যাথু ওয়েড। সেই ওভারে মুকেশ কুমার ৭ রান খরচ করেন। শেষ ওভারে অর্শদীপ সিংয়ের ওপর দায়িত্ব ছিল ১০ রান ডিফেন্ড করার।
আর ডেথ ওভার স্পেশালিষ্ট অর্শদীপ দেখিয়ে দিলেন শেষের ওভারে কেন তিনি যে কোনও ক্যাপ্টেনের নির্ভরযোগ্য অস্ত্র। প্রথম বলেই বাউন্সার দিয়ে ওভার শুরু করেছিলেন। ম্যাথু ওয়েড ওয়াইডের আবেদন করলেও কর্ণপাত করেননি আম্পায়াররা। পরের বল পিন পয়েন্ট ইয়র্কারের কোনও জবাব-ই ছিল না অর্শদীপের কাছে। তৃতীয় বল-ও ছিল অফস্ট্যাম্পের বাইরে ইয়র্ক লেন্থের ডেলিভারি। সেই বলেই লং অন দিয়ে মরিয়া হয়ে হাঁকাতে গিয়ে শ্রেয়স আইয়ারের হাতে ক্যাচ তুলে অজি ক্যাপ্টেন বিদায় নেন ওয়েড। সেখানেই খেল খতম!
এরপরে জেসন বেহরনডর্ফ এবং নাথান এলিসের সাধ্য ছিল না ম্যাচ বের করার। তা হয়-ও নি।
ভারতের চ্যালেঞ্জিং রান চেজ করতে নেমে যথারীতি ট্র্যাভিস হেড যথারীতি অস্ট্রেলিয়াকে ভালো সূচনা এনে দেন। হেড এবং জস ফিলিপস পাওয়ার প্লে-র মধ্যেই দলকে হাফসেঞ্চুরি এনে দিয়েছিলেন। তবে বিশ্নোই হেডকে ফেরানোর পর ক্রমশ ম্যাচ থেকে হারিয়ে যায় অজিরা।
আরন হার্ডিও ব্যাট হাতে সেরকম কিছু করতে পারেননি। তবে বেন ম্যাকডারমট এবং টিম ডেভিড গুরুত্বপূর্ণ ৪৭ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন। মিডল ওভারে রবি বিশ্নোই এবং অক্ষর প্যাটেলের সামনে খাপ খুলতে পারেনি অজি ব্যাটাররা। দুই স্পিনার কোনও ব্যাটসম্যানকেই ক্রিজে থিতু হতে দেননি। ক্রমবর্ধমান আস্কিং রেটের সামনে বিগ হিট হাঁকাতে গিয়ে আউট হয়ে যান টিম ডেভিড। এরপরেই হঠাৎ করেই ছোটখাটো এক ব্যাটিং বিপর্যয়ে অজিরা ১০২/৪ থেকে ১২৯/৭ হয়ে যায়। ম্যাকডারমট হাফসেঞ্চুরি করলেও দলকে শেষ পর্যন্ত টানতে পারেননি।
একসময় অজিরা জয়ের জন্য যথেষ্ট ম্যাচে ছিল। তবে ১৭তম ওভারে মুকেশ কুমার পরপর দু-বলে ফিরিয়ে দেন শর্ট এবং দোয়ারসুইসকে। এরপরের ওভারে (১৮তম) ম্যাথু ওয়েড, নাথান এলিসের সামনে আবেশ খান ১৭ রান বিলিয়ে দিলেও অজিরা জয়ের পাসওয়ার্ড হারিয়ে ফেলে অর্শদীপের শেষ ওভারে।
তার আগে শ্রেয়স আইয়ারের লড়াকু হাফসেঞ্চুরিতে ভর করে ভারত স্কোরবোর্ডে কোনওরকমে ব্যাটিং বিপর্যয় কাটিয়ে ১৬০ খাড়া করেছিল। ৩৭ বলে ৫৩ করে যান তিনি। শ্রেয়সকে কিছুটা সাহায্য করেন জিতেশ শর্মা এবং অক্ষর প্যাটেল মাঝের ওভারে সাহায্য করেন শ্রেয়সকে। জিতেশ ১৬ বলে ২৪ করেন। অক্ষর প্যাটেল ২১ বলে ৩১ করেন।
শুরুটা ভারতের ঝড়ের গতিতে হয়েছিল। তবে পাওয়ার প্লে-র মধ্যেই দুই ওপেনার রুতুরাজ গায়কোয়াড, যশস্বী জয়সোয়াল আউট হয়ে যাওয়ায় বড়সড় ধাক্কা খায় ভারত। জেসন বেহরনডর্ফ ফেরান যশস্বীকে। বেন দোয়ারসুইসকে কভারের ওপর দিয়ে হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে আউট হয়ে যান রুতুরাজ গায়কোয়াড। পরের ওভারেই দোয়ারসুইস ফিরিয়ে দেন সূর্যকুমার যাদব। রিঙ্কু সিংকে তনভীর সাংঘা ফেরানোর পর ভারত একসময় ৫৪/৪ হয়ে গিয়ে বেনজির বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। এরপরে ভারতের লোয়ার মিডল অর্ডার দলের হাল ফিরিয়ে দেয়।