India vs England 4th test at Ranchi: রাজকোট টেস্টেই স্মরণীয় আবেগি অভিষেকের সাক্ষী থেকেছিল গোটা দুনিয়া। সরফরাজ খান ডেবিউ ক্যাপ পেয়ে বাবার হাতে তুলে দিয়েছিলেন। অশ্রুসিক্ত সরফরাজের বাবা নওশাদ চরম আবেগের জন্ম দিয়েছি নিরঞ্জন শাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।
সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখা গেল এবার ঝাড়খন্ড ক্রিকেট সংস্থার মাঠে। বাংলার তারকা পেসারের অভিষেক ঘটল ধোনির পাড়ায়। কোচ রাহুল দ্রাবিড় আকাশ দীপের হাতে ডেবিউ ক্যাপ তুলে দেন। তারপরেই তারকা পেসারকে আলিঙ্গন করেন টিম ইন্ডিয়ার বাকি সদস্যরা।
টিম ইন্ডিয়া পর্ব মেটানোর পর আকাশ দীপ সোজা পাড়ি দেন পরিবারের কাছে। মা উপস্থিত ছিলেন। মাকে ঝুঁকে প্রমাণ করেন আকাশ দীপ। পরিবারের বাকি সদস্যরাও ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেনজ আশীর্বাদে ভরিয়ে দেন। এরপরে পরিবারের সকলের সঙ্গে ফটো সেশন করেন তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলার পেসারের স্বপ্নের অভিষেকে ছিন্নভিন্ন ইংল্যান্ড, ধোনির পাড়ার মাঠে বাঙালির জয়জয়কার
চলতি টেস্টে এই নিয়ে চতুর্থ তারকা হিসাবে টিম ইন্ডিয়ার হয়ে অভিষেক ঘটল আকাশ দীপের। প্রথমে রজত পাতিদার, তারপর সরফরাজ খান এবং ধ্রুব জুরেল অভিষেক ঘটান এই সিরিজেই। এবার পালা আকাশ দীপের। জসপ্রীত বুমরা টানা তিনটে টেস্ট খেলেছেন। চতুর্থ টেস্টে ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের কারণে খেলছেন না বুমরা। তাঁর বদলেই খেলছেন আকাশ দীপ।
বাংলার হয়ে খেলে টিম ইন্ডিয়ায় অভিষেকের সুযোগ পেলেও তিনি অবশ্য বাংলার ভূমিপুত্র নন। সাসারামের দেহরি গ্রামের বাসিন্দা আকাশ দীপ। ২০১৫-য় পারিবারিক দুর্যোগের মুখে পড়েছিলেন তারকা। প্রথমে বাবাকে হারান। তার ঠিক ছয় মাস পরে আকাশ দীপেয়ে দাদা প্রয়াত হন। দুজনেই আপদকালীন মুহূর্তে চিকিৎসার সুযোগ পাননি। করোনার সময় আকাশ দীপ আরসিবির জার্সিতে আইপিএলে খেলতে ব্যস্ত ছিলেন। সেই সময় নিজের পিসি এবং শ্যালিকাকে হারান তিনি। মা-ও প্রায় মৃত্যু মুখে চলে গিয়েছিলেন।
শেষ সাত বছরে আকাশ দীপ অনেক ভাঙা গড়ার সাক্ষী থেকেছেন। ২০১২-য় আকাশ দীপের সঙ্গে কলকাতা ময়দানের সংস্রব। বাবাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য শহরে এসেছিলেন। সেই সময় বেশ কয়েকটি স্থানীয় ক্রিকেট ম্যাচ খেলেছিলেন। শুরুর সময়ে অবশ্য আকাশ দীপ বল নয় ব্যাট হাতে মাতাতেন।
২০১৬-য় আকাশ দীপ দিল্লিতে চলে যান দিদির কাছে থাকার জন্য। সেই সময় কয়েক মাস দিল্লিতে থাকার সময় আকাশ দীপ বন্ধুর পরামর্শে কলকাতায় ফিরে আসেন ক্রিকেট খেলার জন্য।
আকাশ দীপ এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, "বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের আর্থিক অবস্থা একদম খারাপ হয়ে যায়। কলকাতায় পাড়ি দেওয়ার পর স্থানীয় ক্রিকেট খেলতে শুরু করি। সেই ক্রিকেট খেলেই অর্থ সংস্থান হত আমার। যে টাকা উপার্জন করতাম, তা বেশিরভাগই মায়ের জন্য সঞ্চয় করতাম। তবে আমার উপার্জিত অর্থ একদম সামান্য ছিল।"
কলকাতায় ১২×১২ রুমে বন্ধুদের সঙ্গে থাকা থেকে টিম ইন্ডিয়ার জার্সিতে অভিষেক-আকাশ দীপের গল্প আসলে প্রবল ইচ্ছাশক্তির কাছে যাবতীয় প্রতিকূলতা জয়ের আখ্যান।