ভারত: ১৮১/৯ এবং ইংল্যান্ড: ১৬৬/১০
IND vs ENG 4th t20I match Report: প্ৰথম দু-ওভারেই ১২/৩ ভারত। সেই ম্যাচেই শেষমেশ ভারত জিতল ১৫ রানের ব্যবধানে। বিপক্ষকে অলআউট করে ভারত পুনেতে সিরিজ জয় সম্পন্ন করল। প্ৰথমে হার্দিক-শিভমের ৮৫ রানের পার্টনারশিপ। তারপর কনকাশন সাব হিসাবে মাঠে শিভম দুবের বদলে হর্ষিত রানার অন্তর্ভুক্তি।
এই দুই ফ্যাক্টরের মুখেই সিরিজ হেরে বসল ইংল্যান্ড। শিভম দুবে ডেথ ওভারে ব্যাটিং করার সময় জেমি ওভারটনের শর্ট বলে মাথায় আঘাত পান। ইনিংসের বিরতিতে শিভম দুবের কনকাশন পরিবর্ত হিসাবে খেলিয়ে দেওয়া হয় হর্ষিত রানাকে। যা কিছুটা বিতর্কিত।
সেই হর্ষিতই ম্যাচে ৩ উইকেট নিয়ে ফ্যাক্টর হয়ে গেলেন। নিজের টি২০ অভিষেক ম্যাচেই হিরো হয়ে গেলেন রানা। তবে রয়ে গেল বিতর্কও। ইংল্যান্ড শিবির থেকে প্রশ্ন তোলা হল কীভাবে শিভম দুবের লাইক-আ-লাইক রিপ্লেসমেন্ট হন রানা!
রানা বল করতে আসার আগেই অবশ্য ইংল্যান্ড ভাল শুরু করে ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল। ফিল সল্ট এবং বেন ডাকেট যেভাবে ঝড়ের গতিতে পাওয়ার প্লের সূচনা করেছিলেন তাতে ভারতের ১৮১/৯ স্কোর রীতিমত লিলিপুট মনে হচ্ছিল। ৩ ওভারে খতম হতেই বরুণ-বিশ্নোইদের আক্রমণে নিয়ে আসতে বাধ্য হন ক্যাপ্টেন সূর্যকুমার।
পাওয়ার প্লের একদম শেষ বলে বিশ্নোইয়ের শিকার হয়ে ফেরেন আগুনে মেজাজে ব্যাট করতে থাকা ডাকেট (১৯ বলে ৩৯)। ঠিক পরের ওভারেই সল্টকে বোল্ড করেন অক্ষর প্যাটেল। রবি বিশ্নোইয়ের বলের বাউন্সে ঠকে গিয়ে যখন জস বাটলার উইকেট ছুড়ে দিয়ে এলেন সেই সময় ইংল্যান্ড ৫ রান তোলার ফাঁকে ৩ উইকেট খুঁইয়ে ৬৭/৩ হয়ে যায়।
ইংল্যান্ড ইনিংসের ১২তম ওভারে হর্ষিত রানাকে আক্রমণে আনেন সূর্যকুমার। প্ৰথম ওভারেই রানার শিকার লিভিংস্টোন। হ্যারি ব্রুক-জেকব বেথেল যখন ক্রিজে অনেকটাই টিকে গিয়েছিলেন। সেই সময়ে একই ওভারে ব্রুক-কার্সকে ফিরিয়ে ইংরেজদের লক্ষ্যচ্যুত করে দেন বরুণ।
তারপর সময় যত গড়িয়েছে ইংল্যান্ড লক্ষ্য থেকে দূরে সরে গিয়েছে। শেষদিকে জেমি ওভার্টন ভরসা জাগানোর মত ব্যাটিংয়ে ইংরেজদের প্রায় জিতিয়ে দিয়েছিলেন। তবে হর্ষিত রানা তাঁকে বোল্ড করে কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেন। রানা শেষমেশ ৪ ওভারে ৩৩ রানের বিনিময়ে নেন ৩ উইকেট।
তার আগে টসে জিতে প্রথমে বোলিং নেয় ইংল্যান্ড। ভারত প্ৰথম দু-ওভারেই ধসে গিয়েছিল ব্যাট করতে নেমে। চলতি সিরিজে প্রথমবার খেলতে নেমে সাকিব মাহমুদের বলে পরপর উইকেট দিয়ে যান সঞ্জু স্যামসন, তিলক ভার্মা, সূর্যকুমার যাদবরা। প্ৰথম ওভারের প্ৰথম দুই বলেই টানা দুই উইকেট তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভবনা জাগিয়ে তুলেছিলেন সাকিব মাহমুদ।
সূর্যকুমার হ্যাটট্রিক প্রতিহত করলেও ওভার-হ্যাটট্রিক আটকাতে পারেননি। ১২/৩ হয়ে যাওয়ার পর ভারতকে ম্যাচে ফেরায় রিঙ্কু সিং-অভিষেক শর্মার ৪৫ রানের পার্টনারশিপ। দুজনের সৌজন্যেই ভারত পাওয়ার প্লেতে আর উইকেট হারায়নি। তবে পাওয়ার প্লে শেষ হতেই আদিল রশিদকে আক্রমণে নিয়ে আসেন ক্যাপ্টেন বাটলার। নিজের প্ৰথম ওভারেই আদিল রশিদ তুলে নেন অভিষেক শর্মাকে।
ব্রাইডন কার্সের বলে রিঙ্কু সিং আউট হয়ে যাওয়ার পর ভারত ৭৯/৫ হয়ে গিয়ে বিপদে পড়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে ভারতকে উদ্ধার করেন হার্দিক পান্ডিয়া এবং শিভম দুবে। চলতি সিরিজে মিডল ওভারে ভারতের রান তোলার গতি কমিয়ে দিচ্ছেন আদিল রশিদ। তাঁর স্পিন-অস্ত্রকে ভোঁতা করার জন্যই ভারত শুক্রবার নামিয়ে দেয় শিভম দুবেকে।
সেই ট্যাকটিক্স পুরোটাই খেটে গেল পুনেতে। রশিদকে ভোঁতা করে শিভম দুবে ভারতকে মিডল ওভারে যেমন বিপদ থেকে উদ্ধার করলেন, তেমন হার্দিকের সঙ্গে ৮৭ রানের পার্টনারশিপ গড়ে গেলেন মাত্র ৪৪ বলে। হার্দিক ২৭ বলে, দুবে ৩১ বলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করে গেলেন। শেষদিকে বড় শট হাঁকাতে গিয়েই হার্দিক আউট হয়ে যান।
শেষ ওভারে জেমি ওভারটন মাত্র ২ রান খরচ করেন। নাহলে ব্যাটিং বিপর্যয় থেকে উদ্ধার পাওয়া ভারতীয় ব্যাটিংয়ের তান্ডবে ২০০ স্কোরও ছুঁয়ে ফেলার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।