India vs England Test Series: ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আর কয়েক ঘন্টা পরেই হায়দরাবাদে নেমে পড়ছে ভারত। তবে প্ৰথম টেস্টে নামার আগেই ইংল্যান্ড মিডিয়ার 'খেল' শুরু হয়ে গেল। সরাসরি ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজ বয়কটের ডাক দিয়ে দেওয়া হল বিলেত মুলুকে।
যত কাণ্ড ইংল্যান্ডের স্পিনার শোয়েব বশিরকে (Shoaib Bashir) ঘিরে। ভারত ভিসা না দেওয়ায় পাক বংশোদ্ভূত ইংরেজ স্পিনারকে ইংল্যান্ডে ফিরে যেতে হয়েছে আবুধাবি থেকে। প্ৰথম টেস্টে খেলতে পারবেন না অনভিজ্ঞ এই স্পিনার।
এই ইস্যুতেই এবার সুর চড়াল ইংরেজ প্রচারমাধ্যম। দ্যা টেলিগ্রাফ-এর হেডলাইন করা হয়েছে, "ভারতের নির্লজ্জ শোয়েব বশির কাণ্ডের পর ইংল্যান্ডের উচিত প্ৰথম টেস্ট খেলতে অস্বীকার করা।" ডেইলি মেইল-এর ভারত-বিরোধী শিরোনাম হয়েছে, "টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে ভারতে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে ইংল্যান্ডের স্পিনারকে। ক্রিকেট সমর্থকদের হয়ে ডেইলি মেইল বলছে, তোমাদের সাহস তো কম নয়!"
আরও পড়ুন: কোহলি নেই, বিপদের মুখে বড় রদবদল টিম ইন্ডিয়ার ১১-এ! ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের একাদশ হয়ত এটাই
ক্রিকেটার-এ লেখা হয়েছে, "শোয়েব বশিরের ভিসা কাণ্ডে খেলার অবস্থার পূর্ণ প্রতিফলন পাওয়া গিয়েছে।" iNews-এর বক্তব্য, "শোয়েব বশির প্ৰথম টেস্টে মিস করায় এবং দেশে ফিরতে বাধ্য করায় ইংল্যান্ড ভয়ানকভাবে ক্ষুব্ধ।" দ্য গার্ডিয়ান-এর মত প্রচারমাধ্যমের বক্তব্য, "শোয়েব বশির ইংল্যান্ডে ফিরে এলেন। ভারতের ভিসা বিলম্ব প্ৰথম টেস্ট থেকে ছিটকে দিল ওঁকে।" স্কাই নিউজের মতামত, "শোয়েব বশির ইংল্যান্ডে ফিরে এলেন, এতে বেন স্টোকস ভয়ানকভাবে ক্ষুব্ধ।"
দ্য সান একধাপ এগিয়ে লিখেছে, "এটা ক্রিকেট নয়। প্ৰথম টেস্টের আগে ইংল্যান্ডের স্পিনারকে দেশে পাঠিয়ে ভারত লজ্জা হাজির করল।"
শোয়েব বশিরকে ভিসা না দেওয়ায় জটিলতা আপাতত কূটনৈতিক স্তর পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনকের মুখপাত্র স্বয়ং মুখ খুলেছেন বিবিসিতে। সেই মুখপাত্র বলেছেন, “এই বিষয়ের খুঁটিনাটি আমার বলা সম্ভব নয়। তবে এর আগেও আমরা একই ধরণের ইস্যু হাইকমিশনে তুলেছি। আমরা স্পষ্ট জানিয়েছি, সমস্ত ব্রিটিশ নাগরিকদের যেন ভারত সরকার একই দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে। এর আগেও পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিকরা এই ঘটনার মুখে পড়েছেন। তাঁদের অভিজ্ঞতা লন্ডনের ভারতীয় দূতাবাসকে জানানো হয়েছে।”
এমনকি ভারতে ইএসপিএন ক্রিকইনফো-র পুরো বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করে ঘটনা আরও উস্কে দিয়েছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস। তিনি বলেছেন, "অধিনায়ক হিসেবে চূড়ান্ত হতাশ আমি। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি আমরা স্কোয়াডের ঘোষণা করে ফেলেছিলাম। এখনও বশির এখানে আসার জন্য ভিসা পায়নি। ইংল্যান্ডের জার্সিতে ওঁর প্ৰথম টেস্টে এরকম অভিজ্ঞতা হোক, চাইনি। ওঁকে আমরা অনুভব করতে পারছি।”
আরও পড়ুন: মাঠেই ভারতীয়দের কুৎসিত অঙ্গভঙ্গি, গালির বন্যা! টাইগার তারকাকে ‘ছোবল’ দিয়ে সমঝে দিল ICC
“এরকম অবস্থায় ও-ই প্রথম নয়। অনেকের সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা হয়েছে, যাঁরা একই ঘটনার মধ্য দিয়ে গিয়েছে। এটা ভাবতেই খারাপ লাগছে যে আমরা একজনকে নির্বাচন করলাম যে কিনা ভিসা সমস্যার জন্য ভারতে আসতে পারল না। তরুণ তারকার জন্য আমি নিজেও বিধ্বস্ত। এমন ধরণের ঘটনা রীতিমত হতাশার। অনেকেই এই সমস্যা অতিক্রম করার চেষ্টা করছে। ওঁর জন্য সত্যি খারাপ লাগছে।”
পাক বংশোদ্ভূত অন্য দেশের নাগরিকদের প্রতি ভারত বরাবর সতর্ক। সাধারণ নথির বাইরেও বিশেষ কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়। যা লম্বা সময় লেগে যায়। অতীতে অস্ট্রেলিয়ার পাক বংশোদ্ভূত তারকা উসমান খোয়াজার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছিল। এবার শোয়েব বশির একই সমস্যায় পড়লেন। রাজনীতিতে এর জল কতদূর গড়ায় সেটাই আপাতত দেখার।