ভারত: ২৩৪/৪
নিউজিল্যান্ড: ৬৪/১০
এভাবে যে ভারতের মাটিতে লাঞ্ছিত হতে হবে, ভাবতেই পারেনি নিউজিল্যান্ড। ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে কিউইরা। টি২০-র প্ৰথম ম্যাচ জিতে প্রত্যাঘাতের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ব্ল্যাক ক্যাপসরা। তবে লখনৌ এবং আহমেদাবাদে পরপর জোড়া ম্যাচ জিতে ভারতই টি২০ সিরিজের দখল নিল। ভারতের আগুনে পারফরম্যান্সে দাঁড়াতেই পারল না নিউজিল্যান্ড। পাহাড়প্রমাণ ২৩৫ রান তাড়া করতে নেমে পুরো ২০ ওভারও ব্যাটিং করতে পারল না কিউইরা। ১২.১ ওভারে মাত্র ৬৬ রানে গুটিয়ে গেল সফরকারী দল। ভারতের জয় এল ১৬৮ রানের বিশাল ব্যবধানে। যা টি২০-তে রানের বিচারে বৃহত্তম জয়। এর আগে ভারত আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৪৩ রানে জয় পেয়েছিল। এতদিন সেটাই ছিল বৃহত্তম জয়। বুধবার সেই কীর্তিকেও পেরিয়ে গেল ভারত।
ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল প্ৰথম অর্ধেই। শুভমান গিলের অতিমানবিক পারফরম্যান্স রিংয়ের বাইরে ছিটকে দেয় নিউজিল্যান্ডকে। অবিশ্বাস্য ছন্দে রয়েছেন শুভমান গিল। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে কিছুদিন আগেই ওয়ানডেতে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন। এবার টি২০-তে গিলের ব্যাট ঝলসে উঠল। ৬৩ বলে ১২৬ করে গিল টি২০-তে ভারতীয়দের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের মালিক হয়ে গেলেন বুধবার। পেরিয়ে গেলেন বিরাট কোহলির ১২২, রোহিত শর্মার ১১৭ রানের কীর্তি।
প্রথমেই ঈশান কিষানকে হারিয়েছিল ভারত। সেই ক্ষত ঢেকে দিয়ে অনবদ্য শুভমান গিল। নিজের ইনিংসে হাঁকালেন একডজন বাউন্ডারি, সাতটা বিশাল ওভার বাউন্ডারি।
ঈশান কিষান আউট হয়ে যাওয়ার পরে ওভারেই নিজের আইপিএল সতীর্থ লকি ফার্গুসনের ওপর চড়াও হয়েছিলেন তিনি। জোড়া বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ঝড় উঠতে চলেছে তাঁর ব্যাটে। নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে কিউই বোলারদের নিয়ে ছেলেখেলা করলেন গিল। ইচ্ছামত পুল, ড্রাইভ হাঁকাচ্ছিলেন। পঞ্চম ওভারে ব্লেয়ার টিকনারকে তিনটে বাউন্ডারি হাঁকান।
শুভমান গিলের ব্যাটিংয়ের ছন্দ অন্যপ্রান্ত থেকে ধরে রাখছিলেন রাহুল ত্রিপাঠিও। যিনি ২২ বলে ৪৪ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলে গেলেন বুধবার। স্যান্টনারের বলে সিঙ্গল নিয়ে ৩৫ বলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করে যান গিল।
রাহুল ত্রিপাঠি আউট হয়ে যাওয়ার পর নিজের ছন্দ দেখিয়ে শুরুও করেন সূর্যকুমার যাদব। তবে ১৩ বলে ২৪ করে টাইমিংয়ের হেরফেরে মিড উইকেটে লকি ফার্গুসনের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন তিনি।
১৮ তম ওভারের প্ৰথম বলেই ফার্গুসনকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে নিজের সেঞ্চুরি পূর্ণ করে যান গিল। শেষদিকে ক্যাপ্টেন হার্দিক ১৭ বলে ৩০ রানের ছোটখাটো ঝড়ে ভারতকে ২৩৪ রানের পাহাড়ে পৌঁছে দেন।
ভারতের পাহাড়প্রমাণ রানের সামনে কিউইরা কতক্ষণ লড়াই চালাতে পারে, সেটাই ছিল দেখার। তবে কিউইদের প্রতিরোধ মাত্র ১২ ওভারেই খতম। ড্যারেল মিচেল (২৫ বলে ৩৫) এবং ক্যাপ্টেন স্যান্টনার (১৩ বলে ১৩) বাদ দিয়ে কেউই দুই অঙ্কের রান পায়নি।
ব্যাট হাতে যদি ঝড় তুলে যান শুভমান গিল। বল হাতে আগুন ঝরিয়ে গেলেন ক্যাপ্টেন হার্দিক পান্ডিয়া। ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রানের বিনিময়ে হার্দিক নিলেন ৪ উইকেট। অর্শদীপ সিং, উমরান মালিক, শিবম মাভি সকলেই নিলেন দুটো করে উইকেট। প্ৰথম ওভারে হার্দিক পান্ডিয়া কিউই ওপেনার ফ্যাবিয়েন এলেনকে ফেরানোর পরের ওভারের আর্শদীপ সিং একই ওভারে ফিরিয়ে দেন মার্ক চ্যাপম্যান এবং অন্য ওপেনার ডেভন কনওয়েকে। তারপরে ধসে পড়ে ব্ল্যাক ক্যাপসদের ইনিংস। তৃতীয় ওভারে হার্দিক পান্ডিয়া ফেরান গ্লেন ফিলিপসকে। তারপর কিউই ইনিংসে স্রেফ আয়ারাম-গয়ারামের গল্প!