বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে টিম ইন্ডিয়ার অগ্রাধিকারের তালিকায় আপাতত নেই একদিনের ক্রিকেট। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা একাদশ থেকে মাত্র তিনজন তারকাকে রাখা হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতের ওয়ানডে স্কোয়াডে। এমনকি বিশ্বকাপের দ্রাবিড়ের সেই কোচিং স্টাফ-ও দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকছে না।
ছয় মাসের মধ্যেই টি২০ ওয়ার্ল্ড কাপে নামতে হবে ভারতকে। একদিনের ক্রিকেটে ভারতের পরবর্তী আসাইনমেন্ট সেই ২০২৫-এ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এবং ২০২৭-এ ওয়ানডে ওয়ার্ল্ড কাপ। তাই ভারতের পাখির চোখ আপাতত টি২০ এবং টেস্ট ফরম্যাট। টেস্ট চ্যাম্পিয়ন্সশিপে নিজেদের জায়গা পাকা করার জন্য ভারত ওয়ানডে সিরিজের পরেই নামবে টেস্ট সিরিজে।
ভারতের টি২০ স্কোয়াডে বেশ কয়েক মাস ধরেই টানা খেলছেন রিঙ্কু সিং, অর্শদীপ সিং, আবেশ খান, মুকেশ কুমাররা। আপাতত তাঁদের ধরে রাখা হয়েছে ওয়ানডেতেও। ঘরোয়া ক্রিকেটে দুরন্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে জাতীয় দলে জায়গা পেয়েছেন সাই সুদর্শন এবং রজত পতিদার। সঞ্জু স্যামসনকেও সুযোগ দেওয়ার পথে হেঁটেছেন নির্বাচকরা। টেস্ট সিরিজের প্রস্তুতির জন্য শ্রেয়স আইয়ার প্ৰথম ওয়ানডের পরেই দল ছাড়বেন। ভারতের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সুযোগ আরও বাড়বে তারপর।
কেএল রাহুল-ও স্বীকার করে নিয়েছেন এই মুহূর্তে ভারতের অগ্রাধিকার ওয়ানডে নয়, টি২০। "ওয়ানডে ক্রিকেট নিয়ে বৃহত্তর চিত্র দেখার সুযোগ এখনও আসেনি। আপাতত ফোকাস সমনের টি২০ ওয়ার্ল্ড কাপে। সেই ইভেন্টের আগে ভারত খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ-ও পাবে না।" ম্যাচের আগে সাংবাদিক সম্মেলনে বলে যান অধিনায়ক কেএল রাহুল। ইঙ্গিত দেন টি২০ স্পেশ্যালিস্ট রিঙ্কু সিংয়ের একদিনের ক্রিকেটে অভিষেকের।
রিঙ্কুর অভিষেকের খবর কনফার্ম করে রাহুল বলে দিয়েছেন, "টি-টোয়েন্টি সিরিজে রিঙ্কুর মানসিকতা এবং ম্যাচ টেম্পারমেন্টের দক্ষতা ওকে অন্যদের থেকে আলাদা করে দিয়েছে। রিঙ্কু দেখিয়ে দিয়েছে ও কতটা দারুণ ক্রিকেটার হতে পারে। ওর শান্ত, ধীরস্থির মনোভাব আমরা দেখেছি। টিভিতে দেখতে দেখতে নিজেরাও শান্তি পেয়েছি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সব ফরম্যাটেই ও ভাল খেলেছে। তাই এই সিরিজে ও ঠিক সুযোগ পাবে।"
হার্দিক পান্ডিয়া চোটের কবলে পড়ার পর থেকে ভারত একজন প্রকৃত অলরাউন্ডার খুঁজছে। যিনি বোলার অথচ প্রয়োজনের সময় ব্যাট করে দেবেন। অথবা এমন কোনও বোলার যিনি দলের হয়ে মূল্যবান রান যোগ করে দিতে পারবেন। একদিনের সিরিজে ভারত আপাতত সেরকম তারকার সন্ধান চালিয়ে যাবে।
আইপিএলে অধিনায়ক হিসেবে গড়পড়তা কেএল রাহুল। জাতীয় দলেও অধিনায়কত্বের রেকর্ড খুব একটা ভালো নয় তাঁর। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ তাঁর কাছেও প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবে।
টি২০ ওয়ার্ল্ড কাপের জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতির বন্দোবস্ত করছে এই ওয়ানডে সিরিজ। ধরা হয়, ওয়ানডে ফরম্যাট হল টি২০-র বর্ধিত সংস্করণ। রোহিত, কোহলি, কেএল রাহুলের টি২০ ওয়ার্ল্ড কাপের ভাগ্য এখনও চূড়ান্ত নয়। একমাত্র আসন্ন মেগা ইভেন্টের জন্য নিশ্চিত ধরা হতে পারে সূর্যকুমার যাদব এবং রিঙ্কু সিংকে।
জুজবেন্দ্র চাহাল জাতীয় দলের বৃত্তের বাইরে চলে গিয়েছেন সম্প্রতি। বেশি সুযোগ দেওয়া হচ্ছে অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব, ওয়াশিংটন সুন্দর এমনকি নবাগত রবি বিশ্নোইকেও। এই সিরিজে তিনি নিজেকে প্রমাণ করতে মরিয়া থাকবেন।