জীবনে আর যাই ভুলুন, ২০২৩-কে ভুলবেন না ভারতীয় দলের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার কেএল রাহুল। কারণ, এই বছরটা তাঁর জীবনে চ্যালেঞ্জের এক সিরিজ উপহার দিয়েছে। ২০২২-এর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পারফরম্যান্সের ঘাটতির পর টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ পড়েন। তখনই শুরু হয় সমস্যা। ব্যাট, পিচে সেভাবে সংখ্যা বাড়াতে পারেনি। ফলে, জাতীয় দলেও জায়গা হারান।
বর্ডার-গাভাসকার ট্রফির পর যখন এমনই দুরবস্থা, তখনই ঋষভ পন্থের দুর্ভাগ্যজনক গাড়ি দুর্ঘটনা। রাহুল ওয়ানডেতে উইকেটকিপিংয়ের দায়িত্ব পান। ফের, আইপিএল ২০২৩-এর সময় হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি। যা ২০২৩ বিশ্বকাপ নিয়ে রাহুলের প্রত্যাশাকে ধাক্কা দেয়। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতের প্রতিনিধিত্বের সুযোগ হারান। এ যেন একটার পর একটা দুর্বিপাক চলেই যাচ্ছে। ওই ম্যাচে অবশ্য, অস্ট্রেলিয়ার কাছে ২০৯ রানে হারে টিম ইন্ডিয়া।
এশিয়া কাপ ২০২৩-এর সময় রাহুল দলে ফিরে উপহার দিয়েছিলেন তাঁর চোখধাঁধানো উইকেটকিপিং। কিন্তু, সেসব ছেড়ে বিশ্বকাপ ফাইনালে তাঁর ব্যাটিং পারফরম্যান্স নিয়েই যেন আলোচনা বেশি। ম্যাচে ৬৬ করলেও, শুধুমাত্র একটি বাউন্ডারি কেন? কেন ওই রান করতে ১০৭ বল লাগল? এনিয়েই ভক্ত থেকে বিশেষজ্ঞদের তির্যক সমালোচনা। ভারত পরাজিত হওয়ায় সমালোচনা আরও তীব্র হয়েছে বলেই রাহুল নিজেও মনে করছেন।
তিনি ভোলেননি, এই সময় কিছু অসন্তুষ্ট ভক্ত অনলাইনে তাঁকে যা ইচ্ছে তাই গালাগাল দিয়েছে! তারপরও তিনি হাল ছাড়েননি। এমাসের শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভারতীয় একদিনের দলকে ২-১ ব্যবধানে জয়ী করেছেন। বুধবার, রাহুল সেঞ্চুরিয়নে তাঁর ব্যক্তিগত অষ্টম টেস্ট ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছেন। এনিয়ে যখন সবাই উচ্ছ্বসিত। সেই সময়ই গণমাধ্যমের সামনে খারাপ সময়ের যন্ত্রণা ফাঁস করেছেন টিম ইন্ডিয়ার এই অন্যতম স্তম্ভ।
আরও পড়ুন- মাঠে আম্পায়ার নেই অদ্ভুত কারণে, পাক-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ শুরু করা গেল না সময়ে! তাজ্জব বিশ্ব
খেদ প্রকাশ করে ভারতীয় দলের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার বলেছেন, 'এই খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাওয়া সত্যিই কঠিন। প্রত্যেকের ব্যক্তির নিজস্ব বৈশিষ্ট্য আছে। যাঁরাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেন, চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে বাধ্য। একজন ব্যক্তি হিসেবে, একজন ক্রিকেটার হিসেবে প্রতিটা মুহূর্তই চ্যালেঞ্জিং। আর, সোশ্যাল মিডিয়া তো একটা বিরাট চাপ। আজ আমি সেঞ্চুরি করেছি বলে পিঠ চাপড়াচ্ছে, গুণ গাইছে, প্রশংসা করছে। এই তিন-চার মাস আগেই আমাকে গালি দিত। এটাই খেলার অংশ। যত তাড়াতাড়ি আপনি এটা বুঝবেন, ততই মঙ্গল।'