অনেক আশা করে মহম্মদ শামির জায়গায় তাঁকে টিম ইন্ডিয়ার ডেবিউ ক্যাপ তুলে দেওয়া হয়েছিল। তবে সেঞ্চুরিয়নে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণের অভিষেক টেস্টই যে এভাবে হতাশা বয়ে আনবে, কে ভেবেছিল! দুই ইনিংস মিলিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বাউন্সি পিচে খেই খুঁজে পাননি কর্ণাটকি পেসার। ২০ ওভার বল করে ৯০ রান খরচ করে তাঁর দখলে মাত্র একটি উইকেট।
মুকেশ কুমার এবং তাঁর মধ্যে একজনকে বেছে নিতে হত নির্বাচকদের। তবে উচ্চতার কারণে প্ৰথম একাদশে সুযোগ পান তিনি। ভাবা হয়েছিল বাউন্সি পিচে বল সজোরে পিচ করে ব্যাটসম্যানদের মনে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারবেন। যে কাজটা দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে করে গেলেন মার্কো জ্যানসেন। দুই ইনিংসেই নিজের উচ্চতাকে কাজে লাগিয়ে রোহিত-গিলদের নাস্তানাবুদ করে গেলেন।
তবে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ নিজের অনভিজ্ঞতা প্রকট করে ফেললেন প্রোটিয়াজ ইনিংস জুড়েই। ভারতীয় এ দলের হয়ে কয়েকদিন আগেই দক্ষিণ আফ্রিকায় পাঁচ উইকেট শিকার করেছিলেন তারকা। তবে আসল ম্যাচেই তিনি বুঝে গেলেন, এ দল এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মধ্যে ফারাক কতটা!
রোহিত শর্মা অবশ্য কৃষ্ণকে পুরোপুরি সমর্থনই করেছেন। বলে গেলেন দলের সকলেই প্রসিদ্ধের পাশেই রয়েছে। "মানছি ও খুব একটা লাল বলের ক্রিকেট খেলেনি। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা দলেও এরকম অনভিজ্ঞ তিন ক্রিকেটার রয়েছে। ওঁরা কিন্তু দেখিয়ে দিয়েছে, এই পিচে কীভাবে খেলতে হয়। এটা মোটেই অভিজ্ঞতার প্রশ্ন নয়। পুরো বিষয়টিই মানসিকতার। যদি তুমি ভেবেই নাও তুমি বেশি ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট খেলনি, তাহলে সমস্যা হবে।"
"তোমাকে প্রাপ্ত সুযোগের জন্য কৃতজ্ঞ থাকতে হবে। প্রসিদ্ধ কিন্তু প্রমাণ করেছে, ওঁর মধ্যে যথেষ্ট সম্ভবনা রয়েছে। বেশ কিছুদিন ও দলের সঙ্গে রয়েছে। অবশ্যই ও চাপে ছিল। নার্ভাস হয়েছে। এই ফরম্যাটে ওঁর উন্নতির অবকাশ রয়েছে। আমরা সকলে ওঁকে ব্যাক করব। ক্রিকেটের প্রতি ওঁর চরিত্র বেশ সদর্থক যেটা আমাদের সাহায্য করবে ভবিষ্যতে।"
রোহিত অবশ্য বোলারদের ব্যর্থতা স্বীকার করে নিচ্ছেন। জসপ্রীত বুমরা সেভাবে বাকি তিন বোলারের থেকে সমর্থন পাননি। ক্যাপ্টেন জানিয়েছেন, "এটা মোটেই ৪৫০ রানের পিচ ছিল না। আমরা অনেক রান উপহার দিয়েছি। এটা অবশ্য হয়েই থাকে। একজন বোলারের ওপর নির্ভর করে টেস্ট খেলা যায় না। বাকিদেরও নিজস্ব ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রতিপক্ষ দলের থেকে এই বিষয়ে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।"
"বুমরা দারুণ বল করেছে। ওঁকে স্রেফ অন্য প্রান্ত থেকে সাহায্যের।প্রয়োজন ছিল। যেটা ও পায়নি। ওঁরা চেষ্টা করেছে। তবে সফল হয়নি। এই ধরণের ম্যাচ অনেক কিছু শিক্ষা দিয়ে যায়, কীভাবে বোলিং বিভাগ একটা দল হিসেবে পারফর্ম করতে পারে।
প্রসিদ্ধ কৃষ্ণের হতশ্রী অবস্থা প্রকট হয়ে গিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার নান্দ্রে বার্গারের পারফরম্যান্সের পর। সেঞ্চুরিয়নে অভিষেক ঘটিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান তারকা। আর অভিষেকেই হিট। প্ৰথম ইনিংসে ৩ উইকেটের পর দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁর শিকারের তালিকায় ভারতের ৪ জন। দুই ইনিংসে সাত উইকেট নিয়ে তিনি যেন কার্যত বিদ্রুপ-ই করে গেলেন প্রসিদ্ধকে। কেপ টাউনে প্রসিদ্ধকে দ্বিতীয় টেস্টে সুযোগ দেবে টিম ইন্ডিয়া, সেটাই এখন দেখার হয়ে রইল।