টি২০ সিরিজে সমতা ফিরিয়েছে ভারত। দখল করেছে ওয়ানডে সিরিজ। এবার ইতিহাস গড়ে টেস্ট সিরিজ জেতার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামছে রোহিত শর্মার টিম ইন্ডিয়া। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় আটবার টেস্ট সিরিজে ভারত ৭বার-ই হার হজম করেছে। ২০১০-এ ভারত কোনওরকমে ১-১ ড্র করেছিল। সেটাই এখনও পর্যন্ত ভারতের প্রোটিয়াজ মুলুকে সেরা পারফরম্যান্স।
বিরাট কোহলির নেতৃত্বে শেষবার ভারত যেবার দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে এসেছিল, সেই সময় সেঞ্চুরিয়নে প্ৰথম টেস্টে জিতে সিরিজে লিড নেয় ভারত। তবে নিউল্যান্ডস এবং জোহানেসবার্গে পরপর দু টেস্টে হেরে সিরিজ খোঁয়াতে হয়েছিল। সেটাই ছিল কোহলির অধিনায়কত্বে ভারতের শেষ টেস্ট সিরিজ। রোহিত শর্মার অধিনায়কত্বে ভারত এই প্ৰথম কোনও সেনা দেশে পূর্ণ টেস্ট সিরিজে খেলতে নামছে।
সেঞ্চুরিয়নে বক্সিং ডে টেস্টে ভারত কেমন সাজাতে পারে প্ৰথম একাদশ, দেখে নেওয়া যাক একনজরে-
রোহিত-কোহলির প্রত্যাবর্তন, তিনে নামবেন গিল:
আহমেদাবাদে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ভারত অস্ট্রেলিয়ার কাছে ফাইনালে হারের ঠিক এক মাস ছয় দিন পর টেস্ট সিরিজে নামছে। সেই ফাইনালেই শেষবার রোহিত-কোহলি একসঙ্গে টিম ইন্ডিয়ার জার্সিতে খেলেছিলেন। তারপর দুজনের সীমিত ওভারের ক্রিকেট ভবিষ্যৎ নিয়ে নিরন্তর চর্চা হয়েছে।
তবে দুই ব্যাটিং মহীরুহ ভারতের টেস্ট একাদশে অটোমেটিক চয়েস। রোহিত স্বয়ং অধিনায়কের আর্মব্যান্ড নিয়ে মাঠে নামছেন ওপেনার হয়ে। কোহলির চার নম্বর ব্যাটিং পজিশন-ও অটুট থাকছে। তবে ভারত শেষ যে টেস্ট সিরিজ খেলেছিল (ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে), সেখানে চেতেশ্বর পূজারার অনুপস্থিতিতে শুভমান গিলকে দেখা গিয়েছিল। বিধ্বংসী ওপেনার হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন যশস্বী জয়সোয়াল।
অভিষেকের পর তিনটে টেস্টে ২৬৬ করেছেন। সেই সঙ্গে টিম ইন্ডিয়ার ব্যাটিং অর্ডারে এক বাঁহাতি ব্যাটারের অপশন এনে দিয়েছেন তিনি। পূজারাকে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে না নিয়ে আসায় আপাতত সেই ব্যাটিং কম্বিনেশনই ধরে রাখতে পারে টিম ইন্ডিয়া।
উইকেটকিপার কেএল রাহুল:
প্ৰথম টেস্টে নামার ঠিক একদিন আগে ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মা প্রশংসায় ভাসিয়েছিলেন কেএল রাহুলকে। গোটা বিশ্বকাপে উইকেটকিপার হিসাবে নির্ভরতা দিয়েছেন রাহুল। তারপর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, টেস্টেও উইকেটকিপিং করতে চান।
রোহিত সোমবার সেটা আরও স্পষ্ট করে বলে দেন, "ওয়ার্ল্ডকাপে যেভাবে ও উইকেটকিপিং করেছে, সেটা অনবদ্য ছিল। টেস্টেও ও কিপিং করতে চায়। এতে মিডল অর্ডারে আরও একটা সলিড ব্যাটারের অপশন থাকছে আমাদের কাছে। ও ব্যাটিং দারুণ করে। ম্যাচের বিভিন্ন পর্যায়ে গেম এওয়ারনেস বেশ ভালো।
ঈশান কিষান মানসিক অবসাদে জাতীয় দল ছেড়ে যাওয়ায় এবং ব্যাট হাতে কেএস ভরত সেভাবে ভরসা না জোগাতে পারায় কেএল রাহুল-ই রোহিতদের কাছে সেরা অপশন।
পেস আক্রমণের নেতৃত্বে জসপ্রীত বুমরা:
২০২২ জুলাইয়ে এজবাস্টন টেস্টের পর সেঞ্চুরিয়নেই জসপ্রীত বুমরাকে পুনরায় দেখা যেতে চলেছে টেস্টের সাদা জার্সিতে। চলতি বছরের অগাস্টে ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনের আগে বুমরা এক বছর জাতীয় দলের বাইরে ছিলেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার পর বুমরা স্রেফ সীমিত ওভারের ক্রিকেটেই অংশ নিয়েছেন।
বুমরার সঙ্গে প্ৰথম একাদশে অটোমেটিক বাছাই মহম্মদ সিরাজ। তবে মহম্মদ শামির অনুপস্থিতি ভরাট করে মুশকিল। শামির জায়গায় ভারতের হাতে রয়েছে জোড়া অপশন মুকেশ কুমার, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। সাদা বলের ক্রিকেটে ইতিমধ্যেই জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক ঘটিয়ে ফেলেছেন মুকেশ কুমার। তবে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ সম্ভবত প্ৰথম একাদশে থাকছেন তাঁর উচ্চতা এবং বাউন্স কাজে লাগাতে পারার দক্ষতার জন্য।
ভারতের সম্ভাব্য প্ৰথম একাদশ:
রোহিত শর্মা, যশস্বী জয়সোয়াল, শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়স আইয়ার, কেএল রাহুল, রবীন্দ্র জাদেজা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ, জসপ্রীত বুমরা, মহম্মদ সিরাজ
দক্ষিণ আফ্রিকা প্ৰথম একাদশ:
ডিন এলগার, তেম্বা বাভুমা, আইডেন মারক্রাম, কিগান পিটারসেন, টনি দে জর্জি, কাইল ভারান, কেশব মহারাজ, লুঙ্গি এনগিদি, কাগিসো রাবাদা, জেরাল্ড কোয়েটজে, নান্দ্রে বার্জার