সুনীল গাভাসকারের বাছাই মুকেশ কুমার। কিন্তু, অনেক বিশেষজ্ঞই চাইছেন, ৬ ফুট ৫ ইঞ্চির প্রসিধ কৃষ্ণাই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে মাঠে নামুক। কারণ, পেস বোলিংয়ে উচ্চতাটা বড় সুবিধা দেয়। আর, দক্ষিণ আফ্রিকার সেঞ্চুরিয়নের পিচ পেসারদের স্বর্গরাজ্য। যেখানে অস্ট্রেলিয়ার মত বিদ্যুৎগতির বাউন্স আর দক্ষিণ আফ্রিকার কায়দায় পেস বোলিংয়ের সুইং চর্চা দুটোই কাজে লাগাতে পারে কোনও ভালোমানের পেসার। এই উচ্চতা বারবার বাইশ গজে ফারাক গড়ে দিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার আগের সফরই তার জলজ্যান্ত প্রমাণ। যেখানে ফারাক গড়ে দিয়েছেন দীর্ঘদেহি পেসাররা।
২০১৮-র সফরে সেঞ্চুরিয়নে ভারতের ১৩৫ রানে পরাজয়ের পর, ধারাভাষ্যকার মাইক হেইসম্যান উচ্চতার পার্থক্যকে পরাজয়ের কারণ বলে দাবি করেছিলেন। এভাবে দৈহিক উচ্চতা গতির পিচে বারবার পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। তবে, ভারতীয় খেলোয়াড়দের উচ্চতাও নেহাত ফেলনা নয়। ইশান্ত শর্মা ৬′ ৪'', হার্দিক পান্ডিয়া ৬′ ২'', জসপ্রিত বুমরাহ ৬ ফুটের সামান্য কম।
কিন্তু, সেটাও যেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার- মর্নি মর্কেল, লুঙ্গি এনগিডি, কাগিসো রাবাদা, ভার্নন ফিল্যান্ডারের কাছে কিছুই না। এমনকী ইশান্ত শর্মা আর মরকেলের মধ্যে বল রিলিজ পয়েন্টের উচ্চতার পার্থক্যও ছিল লক্ষণীয়। গড় পার্থক্য ছিল প্রায় ২০ সেন্টিমিটার। তাই, পিচেও বাউন্সের পার্থক্য ছিল প্রায় ১৫ সেমি। আর, বোলারদের ক্ষেত্রে এই পার্থক্য মানে, ওপ্রান্তের উইকেটে যিনি আছেন, সেই ব্যাটসম্যানের কাছেও তা সমান গুরুত্বপূর্ণ।
এব্যাপারে হেইসম্যানের পর্যবেক্ষণ, 'কোনও ব্যাটসম্যানের কাছে এই পার্থক্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, একজন ব্যাটসম্যান সব সময় দীর্ঘদেহি বোলারের বিরুদ্ধে এগিয়ে গিয়ে বল হাঁকাতে দ্বিধা করবে। পিছনের পায়ে সব খেলতে চেষ্টা চালাবে। কম উচ্চতার তো বটেই, দীর্ঘদেহি ব্যাটসম্যানরাও তা-ই করবে।'
গত সফরে ভারতীয় খেলোয়াড়দের গড় উচ্চতা ছিল তুলনায় কম। শামি, বুমরাহ, শার্দুল ঠাকুর ও মহম্মদ সিরাজ- চার জনই ছয়ের নীচে। আর দক্ষিণ আফ্রিকার খেলোয়াড়দের গড় উচ্চতা ছিল ৬′ ৮''। এটা মার্কো জ্যানসেনকে ধরে। দুই দলের ফারাকটা এতটাই ছিল যে, দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বনিম্ন রিলিজ উচ্চতা যাঁর, সেই উইয়ান মুলদারের রিলিজ পয়েন্ট ছিল ২.১ মিটার। যা, ভারতের যে বোলারের রিলিজ পয়েন্ট ছিল সবচেয়ে উঁচু, সেই জসপ্রিত বুমরাহর রিলিজ পয়েন্ট (১.৯ মিটার) থেকেও ছিল বেশি উচ্চতার। এসব কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের চোখ এড়ায়নি। গত সফরে জোহানেসবার্গে পরাজয়ের পর তিনি বলেন, 'মনে হচ্ছিল যে বল একটু বেশি খারাপ আচরণ করছে। এটা উচ্চতার জন্যও হতে পারে। কখনও সখনও অতিরিক্ত উচ্চতাও পার্থক্য তৈরি করে।'
আর, এই কারণেই দল প্রসিধকে এগিয়ে রাখছে। ইনজুরি প্রসিধের খেলায় প্রভাব ফেলেছে। মাত্র ১২টি প্রথম-শ্রেণির ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে প্রসিধের। গড় ১২.২৯। তার মধ্যেই গত সপ্তাহে পচেফস্ট্রুমে ভারত এ আর দক্ষিণ আফ্রিকা এ দলের মধ্যে ম্যাচে পাঁচটি উইকেট পেয়েছে। যা সেঞ্চুরিয়নে তাঁর টেস্ট অভিষেকের সুযোগ উজ্জ্বল করেছে। কারণ, এটা এমন পিচ, যেখানে খেলা এগোলেই বাউন্সও তার লাগাতার খেলা শুরু করে দেয়।