ভারত: ১৮০/৭
দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৫৪/৫
টানটান ম্যাচ। বৃষ্টি বিঘ্নিত খেলা। সূর্যকুমার-রিঙ্কু সিংয়ের অনবদ্য অর্ধ শতরান। ভারতীয় বোলারদের হৃদয় হাতে করে বোলিং। তবুও দক্ষিণ আফ্রিকা সফর ভারত সূচনা করল হারের মাধ্যমে।
প্রথম টি২০'তে বৃষ্টি থাবা বসিয়েছিল। ভেস্তে গিয়েছিল। দ্বিতীয় টি২০'তেও বৃষ্টি হল। ওভার কমিয়ে আনতে হল। আর রুদ্ধশ্বাস সেই ম্যাচেই ভারতকে ৫ উইকেটে হারাল দক্ষিণ আফ্রিকা।
প্ৰথমে ব্যাট করে ভারত স্কোরবোর্ডে ১৮০ তুলেছিল। বৃষ্টির জন্য পুরো ২০ ওভার ব্যাট করতে পারেনি ইন্ডিয়া। শেষ তিন বল খেলা হল না ভারতীয় ইনিংসে। দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে ডার্ক-ওয়ার্থ লুইস নিয়মে ১৫ ওভারে টার্গেট নেমে আসে ১৫২-এ। সেই টার্গেট প্রোটিয়াজরা তুলল সাত বল বাকি থাকতে।
দেড়শ-র কিছু রান তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা টর্নেডোর গতিতে করেছিল। ওভার পিছু ১৪ রানের বেশি তুলছিলেন দুই ওপেনার রেজা হেন্ড্রিক্স এবং ব্রিজকে। অর্শদীপ সিং এবং মহম্মদ সিরাজ ব্যাপক রান খরচ করে ফেলেছিলেন শুরুর দিকে। মুকেশ কুমার-ও সুবিধা করতে পারছিলেন না প্রোটিয়াজ ব্যাটারদের সামনে। বাধ্য হয়েই রবীন্দ্র জাদেজার হাতে বল তুলে দেন সূর্যকুমার।
ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে যান ব্রিজকে। তবে রান তোলার গতিতে ভাঁটা পড়তে দেননি আইডেন মারক্রাম এবং হেন্ড্রিক্স। ঝড়ের গতিতে দুজনে ৫৬ রান যোগ করে ম্যাচের কার্যত ফয়সালা করে দেন। তবে পাওয়ার প্লে-র পর বোলাররাই ভারতকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনে। পরপর তিন ওভারে মুকেশ কুমার, কুলদীপ যাদব এবং সিরাজ আউট করে দেন মারক্রাম, হেন্ড্রিক্স এবং ক্ল্যাসেনকে। হঠাৎ করেই ম্যাচের মোমেন্টাম ভারতের দিকে ঢলে পড়েছিল।
তবে মিলার তখনও ক্রিজে ছিলেন। মিলারকে ১৩ তম ওভারে ফিরিয়ে দিয়ে ম্যাচে আরও উত্তেজনার সঞ্চার করেন মুকেশ কুমার। তবে তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। ট্রিস্টান স্টাবস এবং ফেলুকাওয়ে দুজনে ম্যাচ বের করে দেন সাত বল বাকি থাকতে।
টসে জিতে ভারতকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান নেতা আইডেন মারক্রাম। মেঘলা ওয়েদারে ভারতের শুরুটা মোটেই ভাল হয়নি। শুরুতেই শুভমান গিল, যশস্বী জয়সোয়ালকে ফিরিয়ে দেন প্রোটিয়াজ পেসাররা। দুই ওপেনার-ই রানের খাতা খোলার আগে আউট হয়ে যান। প্ৰথম দুই ওভারে ৬ রানে জোড়া উইকেট হারিয়ে ফেলার পর ভারতের প্রত্যাবর্তন শুরু হয় তিলক ভার্মা-সূর্যকুমার যাদবের পার্টনারশিপের ওপর ভর করে।
তিলক ভার্মা ২০ বলে ২৯ করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। ৪৯ রানের পার্টনারশিপে ইতি টানেন জেরাল্ড কোয়েটজে। ৫৫/৩ হয়ে গিয়ে ভারত একসময় রীতিমত বিপদে পড়ে গিয়েছিল।
তবে ভারতীয় ইনিংসকে জ্বালানি দিয়ে যায় সূর্যকুমার যাদব-রিঙ্কু সিংয়ের দুর্ধর্ষ পার্টনারশিপ। কঠিন সময়ে দুজনে ৭০ রানের দুর্ধর্ষ জুটি গড়েন। দুজনেই হাফসেঞ্চুরি করেন। সূর্যকুমার মাত্র ৩৬ বলে ৫৬ করেন। তবে মোক্ষম সময়ে তাবরিজ শামসির রং ওয়ান পরতে না পেরে আউট হন বড় শট হাঁকাতে গিয়ে।
সূর্যকুমার আউট হয়ে গেলেও রিঙ্কু সিং ক্রিজে টিকে থেকে দলকে টানেন একপ্রান্ত থেকে। অন্য প্রান্তে উইকেট পতন অব্যাহত থাকলেও রিঙ্কু ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে দলকে টেনে নিয়ে যান। ৩৯ বলে ৬৮ করে যান রিঙ্কু নয়টা বাউন্ডারি, দুটো ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে। রবীন্দ্র জাদেজাও ১৪ বলে ১৯ করে দলের স্কোর গড়ার কাজে সহায়তা করেন।
১৯ তম ওভারে জেরাল্ড কোয়েটজের ওভারে পরপর দু-বলে রবীন্দ্র জাদেজা এবং অর্শদীপ সিং আউট হয়ে যান। ইনিংসের শেষ তিন বল বাকি থাকা অবস্থাতেই বৃষ্টি নামে। এরপরে ভারতের ইনিংসের খেলা আর চালু করা যায়নি।
প্রায় একঘন্টা খেলা বন্ধ থাকার পর প্রোটিয়াজ ইনিংসের ওভার কমিয়ে ম্যাচ চালু করা হয়।