দক্ষিণ আফ্রিকা: ৫৫/১০
বছরের শেষটা হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ইনিংস হারের দুঃসহ যন্ত্রণা নিয়ে। বিশ্বকাপ ফাইনালের হারের পরেও যে ভারতকে এতটা সমালোচনা হজম করতে হয়নি সেঞ্চুরিয়নের হারের মত। তবে পাঁচদিন পরেই নতুন টেস্টে খেলতে নেমেই ভারত স্বমহিমায়। দুঃস্বপ্নের হারের স্মৃতি সরিয়ে ভারত দক্ষিণ আফ্রিকাকে অলআউট করল মাত্র ৫৫ রানে। মহম্মদ সিরাজ বিশ্বকাপ এবং এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কাকে মুছে দেওয়ার স্মৃতি নিয়ে হাজির হলেন নিউল্যান্ডসে। একাই তিনি হাফডজন উইকেট নিয়ে দুমড়ে মুচড়ে দিলেন প্রোটিয়াজ ব্যাটিং লাইন আপকে। জসপ্রীত বুমরা এবং মুকেশ কুমার ও দুটো করে উইকেট নিয়ে যোগ্য সঙ্গত করলেন সিরাজকে।
টসে জিতে প্ৰথমে ব্যাটিং সহায়ক কেপটাউনে ভারতকে বল করতে পাঠিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ডিন এলগার। তবে তিনি কি জানতেন সিরাজ মারণ-মূর্তিতে হাজির হবেন অপমানের বদলা নেওয়ার জন্য। এলগারের সঙ্গে ওপেন করতে নেমেছিলেন আইডেন মারক্রাম। মারক্রাম চতুর্থ ওভারেই ফিরে যান সিরাজের বলে। স্লিপে জয়সোয়ালের হাতে ক্যাচ দিয়ে। সেই শুরু। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি ভারতকে। এরপরে সিরাজ শিকার করেন ফেয়ারওয়েল টেস্টে অধিনায়কত্ব করা ডিন এলগারকে। অফসাইডে বল পাঞ্চ করতে গিয়ে উইকেটে বল টেনে আনেন তিনি।
টনি দি জর্জি সিরাজের তৃতীয় শিকার। লেগ সাইডে বল ফ্লিক করতে গিয়ে উইকেটকিপার কেএল রাহুলের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। মাত্র ১৫ রানেই দক্ষিণ আফ্রিকা ৪ উইকেট খুইয়ে ফেলেছিল। তার পরেও যে হাফসেঞ্চুরির কিছু বেশি রানে অলআউট হয়ে যাবে প্রোটিয়াজ বাহিনী, ভাবা যায়নি।
সেই সময় ইতিমধ্যেই প্ৰথম স্পেলে টানা সাত ওভার হয়ে গিয়েছিল সিরাজের। তবে অষ্টম ওভারেও আক্রমণ থেকে রোহিত সরাননি সিরাজকে। সেই বিশ্বাসের পুরো সদ্ব্যবহার করে সিরাজ আরও দুই উইকেট তোলেন। সিরাজের বল গ্লাভসে ঠেকিয়ে স্লিপে জয়সোয়ালের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন বেডিংহ্যাম। ১৬তম ওভারের শেষ বলে সিরাজের লেগ কাটার বোকা বানিয়ে দেয় মার্কো জ্যানসেনকে। ব্যাটের কানায় লাগিয়ে যিনি কেএল রাহুলের হাতে ক্যাচ তুলে দেন।
সেই সময় ক্রিজে কিছুটা সময় কাটিয়ে ফেলেছিলেন প্রোটিয়াজ উইকেটকিপার কাইল ভারান। সিরাজ টানা নবম ওভার বোলিং করতে এসে ফেরান তাঁকেও। ৩০ বলে ১৫ করে ফিরতে হয় তাঁকে।
সবমিলিয়ে সিরাজ ইতিহাসে উঠে গেলেন বিধ্বংসী এই স্পেলে। দশম ভারতীয় বোলার হিসাবে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ইনিংসে পাঁচ উইকেট শিকার করলেন তিনি। এর আগে এই তালিকায় রয়েছেন জাভাগাল শ্রীনাথ, অনিল কুম্বলে, মহম্মদ শামি, ভেঙ্কটেশ প্রসাদ, এস শ্রীসন্থ, হরভজন সিং, শার্দূল ঠাকুর, রবীন্দ্র জাদেজা এবং জসপ্রীত বুমরা।